পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बिबक्ष टिबश्का-गाऊकाब পথিক হওয়া আবশ্যক। যদি এমত কোন বন্ধু থাকে যে, তাহার জন্য গীতিকাব্য নামটি গ্রহণ করা আবশ্যক, তবে অবশ্য ইউরোপের নিকট আমাদিগকে ঋণী হইতে হইবে। গীত মনষ্যের এক প্রকার স্বভাবজাত। মনের ভাব কেবল কথায় ব্যক্ত হইতে পারে, কিন্তু কণী ত তাহা সম্পাদটীকৃত হয়। “আঃ” এই শব্দ কণ্ঠভঙ্গীর গণে দখবোধক হইতে পারে, বিরক্তিবাচক হইতে পারে, এবং ব্যঙ্গোক্তিও হইতে পারে। “তোমাকে না দেখিয়া আমি মরিলাম!” ইহা শািন্ধ বলিলে, দঃখ বাবাইতে পারে, কিন্তু উপযক্ত স্বরভঙ্গীর সহিত বলিলে দঃখ শতগণ অধিক বঝাইবে। এই সবরবৈচিত্র্যের পরিণামই সঙ্গীত। সতরাং মনের বেগ প্রকাশের জন্য আগ্রহাতিশয্যপ্রযক্ত, মনষ্যে সঙ্গীতপ্রিয়, এবং তৎসাধনে স্বভাবতঃ যত্নশীল। কিন্তু অর্থব্যক্ত বাক্য ভিন্ন চিত্তভােব ব্যক্ত হয় না, অতএব সঙ্গীতের সঙ্গে বাক্যের সংযোগ আবশ্যক। সেই সংযোগোৎপন্ন পদকে গীত বলা যায়। গীতের জন্য বাক্যবিন্যাস করিলে দেখা যায় যে, কোন নিয়মাধীন বাক্যবিন্যাস করিলেই গীতের পরিপাট্য হয়। সেই সকল নিয়মগলির পরিজ্ঞানেই ছন্দের সন্টি। গীতের পারিপাট্যজন্য আবশ্যক দাইটি-সম্বরচাতুৰ্য্য এবং শব্দচাতুৰ্য্য। এই দাইটি পথক। পাথকৰ দাইটি ক্ষমতার উপর নিভাির করে। দাইটি ক্ষমতাই একজনের সচরাচর ঘটে না। যিনি সকবি, তিনিই সাগায়ক, ইহা অতি বিরল। কাজে কাজেই, একজন গীত রচনা করেন, আর একজন গান করেন। এইরূপে গীত হইতে গীতিকাব্যের পার্থক্য জন্মে। গীত হওয়াই গীতিকাব্যের আদিম উদ্দেশ্য; কিন্তু যখন দেখা গেল যে, গীত না হইলেও কেবল ছন্দোবিশিষ্ট রচনাই আনন্দদায়ক, এবং সম্পণে চিত্তভাবব্যঞ্জক, তখন গীতোদ্দেশ্য দরে রহিল; আগেয় গীতিকাব্য রচিত হইতে লাগিল। অতএব গীতের যে উদ্দেশ্য, যে কাব্যের সেই উদ্দেশ্য, তাহাই গীতিকাব্য। বক্তার ভাবোচ্ছবাসের পরিসফটতামাত্র যাহার উদ্দেশ্য, সেই কাব্যই গীতিকাব্য। বিদ্যাপতি চন্ডীদাস প্রভৃতি বৈষ্ণব কবিদিগের রচনা, ভারতচন্দ্রের রাসমঞ্জরী, মাইকেল মধ্যসািদন দত্তের ব্ৰজাঙ্গনা কাব্য, হেমবােবর কবিতাবলী, ইহাই বাঙ্গালা ভাষায় উৎকৃষ্ট গীতিকাব্য*।। অবকাশরঞ্জিনী আর একখানি উৎকৃষ্ট গীতিকাব্য। যখন হৃদয়, কোন বিশেষ ভাবে আচ্ছন্ন হয়,-স্নেহ, কি শোক, কি ভয়, কি যাহাই হউক, তাহার সমদায়াংশ। কখন ব্যক্ত হয় না। কতকটা ব্যক্ত হয়, কতকটা ব্যক্ত হয় না। যাহা ব্যক্তি হয়, তাহা ক্রিয়ার দ্বারা বা কথা দ্বারা। সেই ক্রিয়া এবং কথা নাটককারের সামগ্রী । যেটকু অব্যক্ত থাকে, সেইটকু গীতিকাব্যপ্রণেতার সামগ্ৰী। যেটকু সচরাচর অদ্যান্ট, আদর্শনীয়, এবং অন্যের অনন মেয় অথচ ভাবাপন্ন ব্যক্তির রদ্ধ হৃদয়মধ্যে উচ্ছবাসিত, তাহা তাঁহাকে ব্যক্ত করিতে হইবে। মহাকাব্যের বিশেষ গণ এই যে, কবির উভয়বিধ অধিকার থাকে; ব্যক্তিব্য এবং অব্যক্তব্য, উভয়ই তাঁহার আয়ত্ত। মহাকাব্য, নাটক এবং গীতিকাব্যে এই একটি প্রধান প্ৰভেদ বলিয়া বোধ হয়। অনেক নাটককত্তা তাহা বাঝেন না, সতরাং তাঁহাদিগের নায়ক নায়িকার চরিত্র অপ্রাকৃত এবং বাগাড়শবরবিশিষ্ট হহয়া উঠে। সত্য বটে যে, গীতিকাব্যলেখককেও বাক্যের দ্বারাই রসোদ্ভাবন করিতে হইবে; নাটককারেরও সেই বাক্য সহায়। কিন্তু যে বাক্য ব্যক্তিব্য, ప్గా কেবল তাহাই বলাইতে পারেন। যাহা অব্যক্তব্য, তাহাতে গীতিকাব্যকারের ধকার । উদাহরণ ভিন্ন ইহা অনেকে বঝিতে পরিবেন না। কিন্তু এ বিষয়ের একটি উত্তম উদাহরণ উত্তরচরিত সমালোচনায় উদ্ধত হইয়াছে। সীতা বিসজ্জাজনকালে ও তৎপরে রামের ব্যবহারে যে তারতম্য ভবভূতির নাটকে এবং বাল্মীকির রামায়ণে দেখা যায়, তাহার আলোচনা করিলে এই কথা হৃদয়ঙ্গম হইবে। রামের চিত্তে যখন যে ভাব উদয় হইতেছে, ভবভূতি তৎক্ষণাৎ তাহা লেখনীমখে ধাত করিয়া লিপিবদ্ধ করিয়াছেন; ব্যক্তিব্য এবং অব্যক্তব্য উভয়ই তিনি সবকৃত নাটকমধ্যগত করিয়াছেন। ইহাতে নাটকোচিত কাৰ্য্য না করিয়া গীতিকাব্যকারের অধিকারে প্ৰবেশ করিয়াছেন। বাল্মীকি তাহা না করিয়া কেবল রামের কার্য্যগলিই বৰ্ণিত করিয়াছেন, এবং তত্তং কাৰ্য্য সম্পাদনাথ যতখানি ভাবব্যক্তি আবশ্যক, তাহাই ব্যক্ত করিয়াছেন। ভবভূতি

  • যখন এই প্ৰবন্ধ লিখিত হয়, তখন রবীন্দ্র বাবার কাব্য সকল প্রকাশিত হয় নাই।

Sya