পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

°न्द् বিদেশী শাস্ত্র যথাসাধ্য অধ্যয়ন করিয়াছি। জীবনের সার্থকতা সম্পাদন জন্য প্রাণপাত করিয়া পরিশ্রম করিয়াছি। এই পরিশ্রম, এই কািন্টভোগের ফলে এইটকু শিখিয়াছি যে, সকল বত্তির ঈশবরানিবৰ্ত্তিতাই ভক্তি, এবং সেই ভক্তি ব্যতীত মনষ্যেত্ব নাই। ‘জীবন লইয়া কি করিব ?” এ প্রশেনর এই উত্তর পাইয়াছি। ইহাই যথাৰ্থ উত্তর, আর সকল উত্তর অযথার্থ। লোকের সমস্ত জীবনের পরিশ্রমের এই শেষ ফল; এই একমাত্র সফল। তুমি জিজ্ঞাসা করিতেছিলে আমি এ তত্ত্ব কোথায় পাইলাম। সমস্ত জীবন ধরিয়া, আমার প্রশেনর উত্তর খাজিয়া এত দিনে পাইয়াছি। তুমি এক দিনে ইহার কি বঝিবে ?” (ধৰ্মমতত্ত্ব : একাদশ অধ্যায়--ঈশ্বরে ভক্তি) বঙ্কিমচন্দ্রের এই জীবনব্যাপী জিজ্ঞাসার একটি প্রধান সত্ৰ পাই ১৮৮২ খ্রীস্টাব্দে শোভাবাজার রাজবাটীর শ্রাদ্ধ লইয়া অধ্যক্ষ পাদ্রী হেভিটর সহিত তাঁহার বাদানবাদ হইতে। ইহার পর হইতেই তিনি গভীরভাবে হিন্দীশাস্ত্র অধ্যয়নে অভিনিবিষ্ট হইলেন। দেবী চৌধরাণী, রাজসিংহ, সীতারাম-বঙ্কিমচন্দ্রের এই জিজ্ঞাসারই এক একটি পরিণতি। সব্বশেষে হিন্দশাস্ত্রগ্রন্থসার শ্ৰীমদভগবদগীতায় তিনি এই জিজ্ঞাসার পণ্য উত্তর লাভ করেন। ধৰ্ম্মমতত্ত্ব, কৃষ্ণচরিত্র, শ্ৰীমদভগবদগীতা ও অন্যান্য শাস্ত্ৰমািলক আলোচনার মধ্যে তাঁহার জীবনব্যাপী জিজ্ঞাসা ক্ৰমে সাফত্তি লাভ করে। বঙ্কিম-সাহিত্যের মািল ধরিতে হইলে বণ্ডিকম জীবন-দর্শনের ক্ৰমিক অভিব্যক্তির সঙ্গেও আমাদের সম্যক পরিচিত হওয়া আবশ্যক। বঙ্কিমচন্দ্ৰ হিন্দ ধৰ্ম্মমকেই জগতে “সম্পািণ’ ধৰ্ম্মম বলিয়া গণ্য করিতেন। তাঁহার এই সিদ্ধান্তের হেতুও তিনি এইরুপ দিয়া গিয়াছেন : “ধৰ্ম্ম যদি যথাৰ্থ সখের উপায় হয়, তবে মনীষাজীবনের সম্পূর্বাংশই ধৰ্ম্মম কর্তৃক শাসিত হওয়া উচিত। ইহাই হিন্দধমের প্রকৃত মক্ষম। অন্য ধক্ষেম তাহা হয় না, এজন্য অন্য ধৰ্ম্মম অসম্পপণ্য ; কেবল হিন্দধৰ্ম্ম সম্পণে ধৰ্ম্ম। অন্য জাতির বিশ্বাস যে কেবল ঈশ্বর ও পরকাল লইয়াই ধৰ্ম্মম। হিন্দর কাছে, ইহকাল, পরকাল, ঈশ্বর, মনষ্যি, সমস্ত জীব, সমস্ত জগৎ-সকল লইয়া ধৰ্ম্মম। এখন সব্বব্যাপী সব্বাসখময়, পবিত্ৰ ধৰ্ম্ম কি আর আছে?” (ধৰ্ম্মমতত্ত্ব : পঞ্চম অধ্যায়-অনশীলন) বঙ্কিমচন্দ্রের এতাদশ মনোবিবত্তান লইয়া এ পৰ্য্যন্ত বিশেষ আলোচনা হইয়াছে বলিয়া মনে হয় না। এ বিষয়ে মনীষী হীরেন্দ্রনাথ দত্ত মহাশয় খাব সম্ভব সৰ্ব্বপ্রথম ধারাবাহিকভাবে কতকটা আলোচনা করিয়াছেন। তাঁহার এই আলোচনা ‘দার্শনিক বঙ্কিমচন্দ্র” পাস্তকে সন্নিবেশিত হইয়াছে। বঙ্কিম-সাহিত্য-রাসিকের পক্ষে এ পস্তকখানি অপরিহায্য। বঙিকমের মনোবিবত্তান তথা তাঁহার জীবনের দার্শনিক দিক সম্পবন্ধে এখানে খাব অল্পই বলা সম্ভব হইল। এ বিষয়ে বিশদ আলোচনার অবকাশ এখনও রহিয়াছে। এখন, আমরা এখানে বিষয়বস্তুর বিভাগ সম্পবন্ধে কিছ বলিব। বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্যমলক রচনা, মায় তাঁহার অলপ বয়সের রচনা, এখানে পাঁচ ভাগে বিভক্ত করা হইয়াছে। সচী দস্টে ইহা বঝা যাইবে । এ প্রসঙ্গে একটি কথা আমাদের সমরণ রাখা দরকার। কি উপন্যাস, কি অন্য পাস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র প্রায় প্রতি সংস্করণেই উহাদের বিস্তর অদলবদল করিতেন। এজন্য তাঁহার জীবিতকালে প্রকাশিত প্রথম ও শেষ সংস্করণের মধ্যে বিভিন্ন পাস্তকের অনেক পাঠভেদ লক্ষিত হয়। এখানে জীবিতকালে প্রকাশিত পােস্তকগলির শেষ সংস্করণের পাঠই গহীত হইল। 3 ET하 বাংলা সাহিত্যের পরিপন্টি এবং সমাজ-সেবা মাখ্যতঃ এই দাইটি উদ্দেশ্য লইয়া বঙ্কিমচন্দ্র বঙ্গদর্শন সম্পাদনা ও পরিচালনা সারা করিলেন। বঙ্গদর্শনের সচেনায় তৎকালীন কয়েকজন উচ্চশিক্ষিত কৃতবিদ্য ব্যক্তিকেশী তিনি ইহার লেখকগোষ্ঠীভুক্ত করিয়া লইয়াছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্রের অন্য কয়েকজন বন্ধ, এবং ঐ সময়ে তরণ ও পরবতী কালে সপন্ডিত ও সসাহিত্যিক বলিয়া পরিচিত কয়েকজনও ক্ৰমে ইহার নিয়মিত লেখক হইয়াছিলেন। কিন্তু

  • দীনবন্ধ মিত্র, হেমচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায়, জগদীশনাথ রায়, তারাপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, কৃষ্ণকমল ভট্টাচাৰ্য, রামদাস সেন, অক্ষয়চন্দ্র সরকার প্রভৃতি।

রাজকৃষ্ণ মখোপাধ্যায়, চন্দ্রনাথ বস, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীনচন্দ্র সেন, যোগেন্দ্রচন্দ্র ঘোষ, সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, পৰ্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, (মহামহোপাধ্যায়) হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রভৃতি।