পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बिबिध अबक-८झर्रोआर्नो সেই তত্ত্ব অন্যাসন্ধান করিবার আগে কোন বিজ্ঞ ও শ্রদ্ধাস্পদ লোকের একটি উক্তি আমি উদ্ধত করিব। কথাটা প্রচারে প্রকাশিত “কৃষ্ণচরিত্রকে” লক্ষ্য করিয়া উক্ত হইয়াছে “শ্ৰীকৃষ্ণ মত্ত্য শরীর ধারণ পাকবািক ইহলোকে বিচরণ করিয়াছিলেন, একথা আমরাও স্বীকার করি। কিন্তু মহাভারতপ্রণয়নের পর্বকাল হইতেও যে, শ্ৰীকৃষ্ণে একটি অতিমানষ ঐশী শক্তির আবিভােব লোকের বিশ্বাসিত হইয়াছিল, তাহাও প্রামাণিক বলিয়া বোধ হয়। সতরাং প্রথম হইতেই মহাভারতগ্রন্থেও যে সেই বোধের একটি অপব্ব প্রতিবিম্ব পড়িবে, তাহা আশচয্যের বিষয় নহে; বস্তুতঃ তাহাই সম্ভবপর। তবে আমাদের বোধ হয়, মহাভারতরচয়িতা কম্পমকান্ড বেদব্যাখ্যা প্রভৃতি তাঁহার বহবিধ উদ্দেশ্যের মধ্যে অর্জন এবং ভদ্রাকে আদশ নর-নারী করিয়া বৰ্ণনা করিয়াছেন, এবং ঈশ্বরে অচল ভক্তি এবং তজজাত ঈশ্বরের নেতৃত্বে প্রতীতিই যে আদর্শ পরিষের প্রকৃত বল, তাহাও প্রদর্শনাথ নরোত্তম শ্ৰীকৃষ্ণে একটি বিশেষ ঐশী শক্তিকে মাত্তিমতী করিয়া দেখাইবার প্রয়াস পাইয়াছেন। সে ঐশী শক্তিটি কোন পার্থিব পাত্রে কোন দেশের কোন কবি কর্তৃকই কখন ধত হয় নাই। আদি কবি বালিমীকিও তাহা ধরিবার চেন্টা করেন নাইমহাভারতকার সেই কাজে অধ্যবসায় করিয়াছিলেন, এবং তাহা যতদর সম্পন্ন হইতে পারে, ততদর সম্পন্ন করিয়াছিলেন বলিয়াই, মহাভারত গ্ৰন্থখানি পঞ্চম বেদ বলিয়া গণ্য হইয়াছে। ঐ ঐশী শক্তির নাম ‘নিলিপ্তিতা'। শ্ৰীকৃষ্ণ মনষ্যের পী ‘নিলোপ”।"+ এই “নিলেপ” বৈরাগ্য নহে, অথবা সাধারণে যাহাকে “বৈরাগ্য” বলে, তাহা নহে। আমি ইহার মৰ্ম্ম যতদর বঝি, গীতা হইতে একটি শ্লোক উদ্ধত করিয়া তাহা বঝাইতেছি। রাগদ্বেষবিমক্তৈস্তু বিষয়ানিন্দ্ৰিয়ৈশ্চরন। আত্মবশ্যৈবিধেয়াত্মা প্ৰসাদমধিগচ্ছতি ৷ আসক্তি বিদ্বেষ রহিত এবং আত্মার বশীভুত ইন্দ্ৰিয় সকলের দ্বারা (ইন্দ্ৰিয়ের) বিষয় সকল উপভোগ করিয়া সংযতাত্মা পরষ শান্তি প্রাপ্ত হয়েন। অতএব নিলিপ্তের পক্ষে ইন্দ্ৰিয় বিষয়ের উপভোগ বক্তজন নিম্প্রয়োজন। এবং বক্তজনে সংলেপই বকায়। বজ্ঞজনের প্রয়োজন আছে, ইহাতেই ব্যবস্থায় যে, ইন্দ্রিয়ে এখন আত্মা লিপ্ত আছে—বজ্ঞজন ভিন্ন বিচ্ছেদ এখনও অসাধ্য। কিন্তু যিনি ইন্দ্রিয় বিষয়ের উপভোগী থাকিয়াও তাহাতে অন্যরাগশন্য, যিনি সেই সকল ইন্দ্রিয়কে বিজিত করিয়া অনন্ঠেয় কৰ্ম্মম সম্পাদনাথ বিষয়ের উপভোগ করেন, তিনিই নিলিপ্তি। তাঁহার আত্মার সঙ্গে ভোগ্য বিষয় আর সংশ্লিস্ট নহে। তিনি পাপ ও দঃখের অতীত। এইরােপ “নিলোপ” বা “অন্যাসঙ্গ” পরিস্ফাট করিবার জন্য হিন্দীশাস্ত্রকারেরা একটা কৌশল অবলম্বন করিয়া থাকেন-নিলিপ্তি বা অনাসক্তকে অধিকমাত্রায় ইন্দ্ৰিয়াভোগ্য বিষয়ের দ্বারা পরিবেষ্টিত করেন। এই জন্য মহাভারতের পরবত্তীর্ণ পরাণকারেরা শ্ৰীকৃষ্ণকে অসংখ্য বরাঙ্গনামধ্যবত্তীর্ণ করিয়াছেন। এই জন্য তান্ত্রিকদিগের সাধন প্ৰণালীতে এত বেশী ইন্দ্ৰিয়াভোগ্য বুস্তুর আবির্ভাব। যে এই সকলু, মধ্যে যথেচ্ছ বিচূরণ করুিয়া তাহাতে অনাসক্ত রহিল, সেই নিলিপ্তি। দ্ৰৌপদীর বহ স্বামীও এই জন্য। দ্ৰৌপদী সত্ৰীজাতির অন্যাসঙ্গ ধর্মের মাত্তিসাবর-পিণী। তৎস্বরপে তাঁহাকে স্থাপন করাই কবির উদ্দেশ্য। তাই গণিকার ন্যায় পঞ্চ পরিষের সংসগযক্ত হইয়াও দ্ৰৌপদী সাধবী, পাতিব্ৰত্যের পরাকাঠা। পঞ্চ পতি দ্ৰৌপদীর নিকট এক পতি মাত্র, উপাসনার এক বস্তু, এবং ধৰ্ম্মমাচরণের একমাত্র অভিন্ন উপলক্ষ্য। যেমন প্রকৃত ধৰ্ম্মমাত্মার নিকট বহ, দেবতাও এক ঈশ্বর মাত্ৰ-ঈশ্বরই জ্ঞানীর নিকট এক মাত্র অভিন্ন উপাস্য, তেমনি পণ্ড সবামী অনাসঙ্গযক্তা দ্ৰৌপদীর নিকট এক মাত্র ধৰ্ম্মমাচরণের স্থল। তাঁহার পক্ষাপক্ষ, ভেদাভেদ, ইতারবিশেষ নাই; তিনি গহধৰ্ম্মেম নিষ্পাকাম, নিশ্চল, নিলিপ্ত হইয়া অনদ্ঠেয় কম্মেম প্রবত্ত। ইহাই দ্ৰৌপদী-চরিত্রে অসামঞ্জস্যের সামঞ্জস্য। তবে ঈদশ ধৰ্ম্ম অতিদঃসাধনীয়। মহাভারতকার মহাপ্রস্থানিক পন্বে সেটকুও বঝাইয়াছেন। তথায় কথিত হইয়াছে যে, দ্ৰৌপদীর অজ্ঞজনের দিকে কিঞ্চিৎ পক্ষপাত ছিল বলিয়া তিনি সেই পাপফলে সশরীরে সবগারোহণ করিতে পারিলেন না-সব্বাগ্রেই পথিমধ্যে পতিতা হইলেন। বোধ হয়, এখন বঝিতে পারা যায় যে, দ্রৌপদীর পাঁচ স্বামীর ঔরসে কেবল এক একটি

  • এডুকেশন গেজেট, ১৮ বৈশাখ ১২৯৩৷৷

蝠 ܬܬܬ