পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রঞ্জ, নৰলাi পত্র কেন ? হিন্দ শাস্ত্রানসারে পত্রোৎপাদন ধৰ্ম্মম; গহীর তাহাতে বিরতি অধৰ্ম্ম।। পত্ৰ উৎপন্ন হইলে বিবাহ সফল হইল; না হইলে, ধৰ্ম্ম অসম্পণে রহিল। কিন্তু ধৰ্ম্মেমরি যে প্রয়োজন, এক পত্রেই তাহা সিদ্ধ হয়। একাধিক পত্রের উৎপাদন ধৰ্ম্মমাথে নিম্প্রয়োজনীয়--কেবল ইন্দ্ৰিয়তৃপ্তির ফল মাত্র। কিন্তু দ্ৰৌপদী ইন্দ্ৰিয়সখে নিলিপ্তি; ধৰ্ম্মের প্রয়োজন সিদ্ধ হইলে, সর্বামিগণের সঙ্গে তাঁহার ঐন্দ্রিয়িক সম্পবিন্ধ বিচ্ছিন্ন হইল। স্বামীর ধৰ্ম্মমাথা দ্ৰৌপদী সকল স্বামীর ঔরসে এক এক পত্র গভে ধারণা করিলেন; তৎপরে নিলে পাবশতঃ আর সন্তান গভেদ ধারণা করিলেন না। কবির কলপনার এই তাৎপৰ্য্য। এই সকল কথার তাৎপৰ্য্য বোধ করি, কেহই এমন বঝিবেন না যে, যে সস্ত্রীলোক অনাসঙ্গ ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিবে, সেই পাঁচ ছয়টি মনীষাকে সর্বামিত্বে বরণ করিবে-তােহা নাহিলে ধৰ্ম্মেমরি সাধন হইবে না। তাৎপৰ্য্য এই মাত্র যে, যাহার চিত্তশদ্ধি হইয়াছে, মহাপাতকে পড়িলেও পাপ। তাহাকে সম্পর্শ করিতে পারে না। দ্ৰৌপদীর আদলেট যাহা ঘটিয়াছিল, সত্ৰীলোকের পক্ষে তেমন মহাপাপ আর কিছই নাই। কিন্তু দ্ৰৌপদীর চিত্তশদ্ধি জন্মিয়াছিল বলিয়া, তিনি সেই মহাপাপকেও ধনেেম পরিণত করিয়াছিলেন। আমি প্রথম প্রবন্ধে দেখাইয়াছি যে, দ্ৰৌপদী ধৰ্ম্মম বলে অত্যন্ত দপ্তা; সে দপ কখন কখন ধৰ্ম্মমকেও অতিক্রম করে। সেই দপের সঙ্গে এই ইন্দ্রিয়জয়ের কোন অসামঞ্জস্য নাই। তবে তাঁহার নিস্কাম ধৰ্ম্মম সব্বাঙ্গীণ সম্পর্ণিতা প্রাপ্ত হইয়াছিল কি না, সে সর্বতন্ত্ৰ কথা। অন্যাকরণ* জগদীশ্বরকৃপায়, উনবিংশ শতাব্দীতে আধনিক বাঙ্গালি নামে এক অদ্ভুত জন্তু এই জগতে দেখা গিয়াছে। পশতত্ত্ববিৎ পন্ডিতেরা পরীক্ষা দ্বারা স্থির করিয়াছেন যে, এই জন্তু বাহ্যতঃ মনষ্যে-লক্ষণাক্রোন্ত; হন্তে পদে পাঁচ পাঁচ আঙ্গলি, লাঙ্গল নাই; এবং অস্থি ও মস্তিক্ষক, “বাইমেনা।” জাতির সদশ বটে। তবে অন্তঃস্বভাব সম্পবন্ধে, সেরাপ নিশ্চয়তা এখনও হয় নাই। কেহ কেহ। বলেন, ইহারা অন্তঃসম্পবন্ধেও মনষ্যে বটে, কেহ কেহ বলেন, ইহারা বাহিরে মনষ্যি, এবং অন্তরে পশ। এই তত্ত্বের মীমাংসা জন্য, শ্ৰীযক্ত বাব, রাজনারায়ণ বস। ১৭৯৪ শকের চৈত্র মাসে န္တိ၊ করেন। এক্ষণে তাহা মাদ্রিত করিয়াছেন। তিনি এ বক্তৃতায় পশপক্ষই সমর্থন ३शाCछeन्म । আমরা কোন মতাবলম্বী ? আমরাও বাঙ্গালির পশতুবাদী। আমরা ইংরেজী সম্পবাদপত্র হইতে এ পশতত্ত্ব অভ্যাস করিয়াছি। কোন কোন তামৰ্শীবাশ্র ঋষির মত এই যে, যেমন বিধাতা ত্ৰিলোকের সন্দরীগণের সৌন্দৰ্য্য তিল তিল সংগ্ৰহ করিয়া তিলোত্তমার সােজন করিয়াছিলেন; সেইরােপ পশবত্তির তিল তিল করিয়া সংগ্রহপ'ক্ৰবাক এই অপব্ব নব্য বাঙ্গালিচরিত্র সােজন করিয়াছেন। শােগাল হইতে শঠতা, কুক্কর হইতে তোষােমদ ও ভিক্ষানরাগ, মেষ হইতে ভীরতা, বানর হইতে অনাকরণপটতা, এবং গন্দভ হইতে গডজন—এই সকল একত্র করিয়া, দিভ্রমন্ডল উক্তজবলকারী, ভারতবর্ষের ভরসার বিষয়ীভূত, এবং ভট্ট মক্ষমলরের আদরের স্থল নব্য বাঙ্গালিকে সমাজাকাশে উদিত করিয়াছেন। যেমন সন্দেরীমন্ডলে তিলোত্তমা, গ্রন্থমধ্যে রিচার্ডসন্স সিলেকসন্স, যেমন পোষাকের মধ্যে ফকিরের জামা, মদ্যের মধ্যে পণ8, খাদ্যের মধ্যে খিচুড়ি, তেমনি এই মহাত্মাদিগের মতে মনষ্যের মধ্যে নব্য বাঙ্গালি। যেমন ক্ষীরোদ সমদ্র মন্থন করিলে চন্দ্ৰ উঠিয়া জগৎ আলো করিয়াছিল--তেমনি পশচরিত্রসাগর মন্থন করিয়া, এই অনিন্দনীয় বাব চাঁদ উঠিয়া ভারতবষী আলো করিতেছেন। রাজনারায়ণবাবর ন্যায়, যে সকল আমতলব্ধ লোক রাহ হইয়া এই কলঙ্কশন্য চাঁদকে গ্রাস করিতে যান, আমরা তাঁহাদের নিন্দা করি। বিশেষতঃ রাজনারায়ণবাবকে বলি যে, আপনিই এই গ্রন্থমধ্যে গোমাংসভোজন নিষেধ করিয়াছেন, তবে বাঙ্গালির মন্ড খাইতে বসিয়াছেন কেন ?--গোর হইতে বাঙ্গালি কিসে অপকৃষ্ট ? গোর ও যেমন উপকারী, নব্য বাঙ্গালিও সেইরাপ। ইহারা সম্পবাদপত্ররাপ, ভান্ড ভান্ড সম্ববাদ দগ্ধ দিতেছে; চাকরি-ল্যাঙ্গল কাঁধে লইয়া, জীবনক্ষেত্র কর্ষণ পাকবািক ইংরেজ

  • সেকাল আর একাল। শ্ৰী রাজনারায়ণ বসা প্রণীত।

ROO