পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विविथ अवक-अनकद्भव জাতি হউক না কেন, ঐ অবস্থাপন্ন হইলে ঐরাপ করিত। বাঙ্গালির সবভাবের দোষে এ অন্যাকরণ প্রবত্তি নহে। অন্ততঃ বাঙ্গালির তিনটি প্রধান জাতি-ব্রাহ্মণ, বৈদ্য, কায়স্থ, আৰ্য্যবংশসম্ভবত; আৰ্য্যশোণিত তাহদের শরীরে অদ্যাপি বাহিতেছে; বাঙ্গালি কখনই বানরের ন্যায়। কেবল অনাকরণের জন্যই অনাকরণপ্রিয় হইতে পারে না। এ অনাকরণ স্বাভাবিক, এবং পরিণামে মঙ্গলপ্রদ হইতে পারে। যাঁহারা আমাদিগের কৃত ইংরেজের আহার ও পরিচ্ছদের অন্যাকরণ দেখিয়া রাগ করেন, তাঁহারা ইংরেজিকৃত ফরাসিদিগের আহার পরিচ্ছদের অন্যাকরণ দেখিয়া কি বলিবেন ? এ বিষয়ে বাঙ্গালির অপেক্ষা ইংরেজরা অল্পাংশে অনকারী ? আমরা অনাকরণ করি, জাতীয় প্রভুর ; ইংরেজরা অন্যাকরণ করেন-কাহার ? ইহা আমরা অবশ্য স্বীকার করি যে, বাঙ্গালি যে পরিমাণে অনাকরণে প্রবত্ত, ততটা বাঞ্ছনীয় না হইতে পারে। বাঙ্গালির মধ্যে প্রতিভাশন্য অনকারীরই বাহাল্য; এবং তাঁহাদিগকে প্রায় গণভাগের অন্যাকরণে প্রবত্ত না হইয়া দোষভাগের অন্যাকরণেই প্রবত্ত দেখা যায়। এইটি মহা দঃখ। বাঙ্গালি গণের অন্যাকরণে তত পটী নহে; দোষের অন্যাকরণে ভূমন্ডলে অদ্বিতীয়। এই জন্যই আমরা বাঙ্গালির অন্যাকরণপ্রবত্তিকে গালি পাড়ি, এবং এই জন্যই রাজনারায়ণবাব, যাহা যাহা বলিয়াছেন, তাহার অনেকগলিকে যথাৰ্থ বলিয়া সম্ববীকার করিতেছি। যেখানে অনকারী প্রতিভাশালী, সেখানেও অন্যাকরণের দাইটি মহৎ দোষ আছে। একটি বৈচিত্র্যের বিঘা। এ সংসারে একটি প্রধান সখি, বৈচিত্র্য-ঘটিত। জগতীতলস্থ সব্ব পদার্থ যদি এক বর্ণের হইত, তবে জগৎ কি এত সখদশ্য হইত ? সকল শব্দ যদি এক প্রকার হইতমনে কর, কোকিলের সবরের ন্যায় রব ভিন্ন পথিবীতে অন্য কোন প্রকার শব্দ না থাকিত, তবে কি সে শব্দ সকলের কণজবালােকর হইত না ? আমরা সেরাপ সর্বভাব পাইলে, না হইতে পারিত। কিন্তু এক্ষণে আমরা যে প্রকৃতি লইয়া পথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়াছি, তাহাতে বৈচিত্রেই সখি। অন্যাকরণে এই সখের ধবংস হয়। ম্যাকবেথ উৎকৃষ্ট নাটক, কিন্তু পথিবীর সকল নাটক ম্যাকবেথের অন্যাকরণে লিখিত হইলে, নাটকে আর কি সখি থাকিত ? সকল মহাকাব্য রঘবংশের আদশে লিখিত হইলে, কে আর কাব্য পড়িত ? দ্বিতীয়, সকল বিষয়েই যত্নপৌনঃপন্যে উৎকষের সম্পভাবনা। কিন্তু পরবত্তী কাৰ্য্য পাকবািবত্তী কায্যের অন্যাকরণ মাত্র হইলে, চেন্টা কোন প্রকার নাতন পথে যায় না; সতরাং কায্যের উন্নতি ঘটে না। তখন ধারাবাহিকতা প্রাপ্ত হইতে হয়। ইহা কি শিলপ সাহিত্য বিজ্ঞান, কি সামাজিক কাৰ্য্য, কি মানসিক অভ্যাস, সকল সম্পবন্ধেই সত্য। মনষ্যের শারীরিক ও মানসিক বত্তি সকলেরই সমকালিক যথোচিত সাফাত্তি এবং উন্নতি মন:ষ্যদেহ ধারণের প্রধান উদ্দেশ্য। তবে যাহাতে কতকগলির অধিকতর পরিপন্স্টি, এবং কতকগলির প্রতি তাচ্ছিল্য জন্মে, তাহা মনষ্যের অনিষটকর। মনষ্যে অনেক, এবং একজন মনষ্যের সাখাও বহবিধ। তত্তাবৎ সাধনের জন্য বহবিধ ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের কায্যের আবশ্যকতা। ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের কায্য ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির লোকের দ্বারা ভিন্ন সম্পন্ন হইতে পারে না। এক শ্রেণীর চরিত্রের লোকের দ্বারা বহৎ প্রকারের কায্য সাধিত হইতে পারে না। অতএব সংসারে চরিত্রবৈচিত্র্য, কাৰ্যবৈচিত্ৰ্য, এবং প্রবত্তির বৈচিত্ৰ্য প্রয়োজন। তদ্ব্যতীত সমাজের সকল বিষয়ে মঙ্গল নাই। অন্যাকরণপ্রবত্তিতে ইহাই ঘটে যে, অনকারীর চরিত্র, তাহার প্রবত্তি, এবং তাহার কায্য, অন্যাকরণীয়ের ন্যায় হয়, পথান্তরে গমন করিতে পারে না। যখন সমাজস্থ সকলেই বা অধিকাংশ লোক বা কাৰ্যক্ষম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিগণ, একই আদশের অনকারী হয়েন, তখন এই বৈচিত্র্যহানি অতি গরতের হইয়া উঠে। মনষ্য-চরিত্রের সব্বাঙ্গীণ সাফত্তি ঘটে না; সৰব্যপ্রকারের মনোবাত্তি সকলের মধ্যে, যথোচিত সামঞ্জস্য থাকে না, সবাবপ্রকারের কায্য সম্পাদিত হয় না, মনষ্যের কপালে সকল সখি ঘটে না-মনষ্যত্ব অসম্পণে থাকে, সমাজ অসম্পণে থাকে, মনষ্যজীবন অসম্পণে থাকে। আমরা যে কয়টি কথা বলিয়াছি, তাহাতে নিম্নলিখিত তত্ত্বসকলের উপলব্ধি হইতে পারে১। সামাজিক সভ্যতার আদি দই প্রকার; কোন কোন সমাজ সম্ভবতঃ সভ্য হয়, কোন কোন সমাজ অন্যত্র হইতে শিক্ষা লাভ করে। প্রথমোক্ত সভ্যতা লাভ বাহকালসাপেক্ষ; দ্বিতীয়োক্ত আশা সম্পন্ন হয়। ২ । যখন কোন অপেক্ষাকৃত অসভ্য জাতি, সভ্যতার জাতির সংসপেশী লাভ করে, তখন SO O