পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—লতজার অন্যারোধে আপনার হৃদগত প্রণয় সখীদের সম্পমাখেও সহজে ব্যক্ত করিতে পারেন না। মিরান্দার সেরাপ নহে। মিরান্দা এত সরলা যে, তাহার লতাজাও নাই। কোথা হইতে লন্ডজ হইবে? তাহার জনক ভিন্ন অন্য পরিষকে কখন দেখেন নাই। প্রথম ফাঁদ নন্দকে দেখিয়া মিরান্দা বঝিতেই পারিল না যে, কি এ ? Lord, how it looks about Believe me, sir, It carries a brave form. But 'tis a spirit. সমাজপ্রদত্ত যে সকল সংস্কার, শকুন্তলার তাহা সকলই আছে, মিরান্দার তাহা কিছই নাই। পিতার সম্মখে ফাঁদ নন্দের রাপের প্রশংসায় কিছমাত্র সঙ্কোচ নাই--অন্যে যেমন কোন চিত্রাদির প্রশংসা করে, এ তেমনি প্রশংসা ; I might call him A thing divine, for nothing natural I ever saw so noble. অথচ সর্বভাব দত্ত সন্ত্রীচরিত্রের যে পবিত্রতা, যাহা লতাজার মধ্যে লড়াজা, তাহা মিরালদায় অভাব নাই, এজন্য শকুন্তলার সরলতা অপেক্ষা মিরান্দার সরলতায় নবীনত্ব এবং মাধ্যায্য অধিক। যখন পিতাকে ফাঁদ নন্দের পীড়নে প্রবত্ত দেখিয়া মিরান্দা বলিতেছে, O dear father, Make not too rash a trial of him, for He's gentle and not fearful. যখন পিতৃমখে ফাঁদ নন্দের রাপের নিন্দা শনিয়া মিরান্দা বলিল, My affections Are then most humble: I have no ambition To see a goodlier man. তখন আমরা বঝিতে পারি যে, মিরন্দা সংস্কারবিহীনা, কিন্তু মিরান্দা পারদঃখকাতরা, মিরান্দা স্নেহশালিনী; মিরান্দার লঙ্কজা নাই। কিন্তু লতাজার সারভাগ যে পবিত্রতা, তাহা আছে। যখন রাজপত্রের সঙ্গে মিরান্দার সাক্ষাৎ হইল, তখন তাঁহার হৃদয় প্রণয়সংস্পশশান্য ছিল; কেন না, শৈশবের পর পিতা ও কালিবন ভিন্ন আর কোন পরিষকে তিনি কখন দেখেন নাই। শকুন্তলাও যখন রাজাকে দেখেন, তখন তিনিও শান্যহাদয়, ঋষিগণ ভিন্ন পরিষ দেখেন নাই। উভয়েই তপোবনমধ্যে—এক স্থানে কবের তপোবন-অপর স্থানে প্রস্পেরের তপোবন—অনরিপ নায়ককে দেখিবামাত্র প্রণয়শালিনী হইলেন। কিন্তু কবিদিগের আশ্চৰ্য্য কৌশল দেখ; তাঁহারা পরামর্শ করিয়া শকুন্তলা ও মিরান্দা-চরিত্র প্রণয়নে প্রবত্ত হয়েন নাই, অথচ একজনে দাইটি চিত্র প্রণীত করিলে যেরপ হইত, ঠিক সেইরাপ হইয়াছে। যদি একজনে দাইটি চরিত্র প্রণয়ন করিতেন, তাহা হইলে কবি শকুন্তলার প্রণয়লক্ষণে ও মিরান্দার প্রণয়লক্ষণে কি প্রভেদ রাখিতেন ? তিনি বঝিতেন যে, শকুন্তলা, সমাজপ্রদত্ত, সংস্কারসম্পন্না, লতাজাশীলা, অতএব তাহার প্রণয় মখে অব্যক্ত থাকিবে, কেবল লক্ষণেই ব্যক্ত হইবে; কিন্তু মিরান্দা সংস্কারশন্যা, লৌকিক লঙ্কজ কি, তাহা জানে না, অতএব তাহার প্রণয়লক্ষণ বাক্যে অপেক্ষাকৃত পরিস্ফাট হইবে। পথিক পথিক কবিপ্রণীত চিত্রদ্বয়ে ঠিক তাহাই ঘটিয়াছে। দশমন্তকে দেখিয়া শকুন্তলা প্রণয়াসক্তা; কিন্তু দমন্তের কথা দরে থাক, সখীদ্বয় যত দিন তাঁহাকে ক্লিন্টা দেখিয়া, সকল কথা অন্যভাবে বঝিয়া পীড়াপীড়ি করিয়া কথা বাহির করিয়া না লইল, ততদিন তাহদের সম্মখেও শকুন্তলা এই নাতন বিকারের একটি কথাও বলেন নাই, কেবল লক্ষণেই সে ভােব ব্যক্তি স্নান্ধং বীক্ষিতমন্যতোহপি নয়নে যৎ প্রেরয়ন্ত্যা তয়া, যাতং যচ্চ নিতম্পবয়োগরিতয়া মন্দং বিলাসাদিব। মা গা ইত্যুপর্যন্ধয়া যদ্যপি তৎ সাসায়মজা সখী, সব্বং তৎ কিলে মৎপরায়ণমহো! কামঃ সর্বতাং পশ্যতি৷ ROGk