পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बभ्कम ब्रष्नाबव्ी কাৰ্য্য সম্পন্ন করিয়াছিল। আরব্য, তুরকী, এবং পাঠান, এই তিন জাতির যত্ন-পারস্পয্যে সাদ্ধ পাঁচ শত বৎসরে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা লগুপ্ত হয়।* মসলমান সাক্ষীরা এইরহপ বলে। ইহাও সমরণ রাখা কৰ্ত্তব্য যে, ইহাদের নিকট হিন্দরা যখন পরিচিত হইয়াছিলেন, তখন হিন্দীদিগের সবসময় প্রায় অতীত হইয়াছিল,-রাজলক্ষী ক্রমে ক্রমে মলিনা হইয়া আসিয়াছিলেন। খীষ্টীয় অব্দের পবিগত হিন্দরা অধিকতর বলবান ছিলেন, তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই। সেই সময়ে গ্রীকদিগের সহিত পরিচয় । তাহারা নিজে অদ্বিতীয় বলবান। তাহারা ভূয়োভুয়ঃ ভারতবষীয়দিগের সাহস ও রণনৈপণ্যের প্রশংসা করিয়াছে। মাকিদনীয় বিপ্লব বর্ণনকালে তাহারা এইরপ পনিঃ পািনঃ নিৰ্দেশ করিয়াছে যে, আসিয়া প্রদেশে এইরপে রণপশিডত দ্বিতীয় জাতি তাহারা দেখে নাই। এবং হিন্দগণ কত্ত্বক যেরােপ গ্ৰীকসৈন্যহানি হইয়াছিল, এরপ অন্য কোন জাতি কৰ্ত্তক হয় নাই। প্রাচীন ভারতবষীয়দিগের রণদক্ষতা সম্পবন্ধে যদি কাহারও সংশয় থাকে, তবে তিনি ভারতবর্ষের বক্তান্তলেখক গ্রীকদিগের গ্রন্থ পাঠ করবেন। ভারতভুমি সব্বরত্নপ্ৰসবিনী, পররাজগণের নিতান্ত লোভের পাত্রী। এই জন্য সব্বকালে পাইয়াছে। পারসীক, যোন, বাহিক, শক, হন, আরব্য, তুরকী সকলেই আসিয়াছে, এবং সিন্ধ্যাপারে বা তদভয় তীরে সবলপ প্রদেশ কিছ দিনের জন্য অধিকৃত করিয়া, পরে বহিস্কৃত হইয়াছে। পঞ্চদশ শতাব্দী কাল পৰ্যন্ত আয্যেরা সকল জাতিকে শীঘ্র বা বিলম্বে দারীকৃত করিয়া আত্মদেশ রক্ষা করিয়াছিল। পঞ্চদশ শত বৎসর পয্যন্ত প্রবল জাতি মাত্রেরই আক্রমণস্থলীভুত হইয়া এতকাল যে সর্বতন্ত্ৰতা রক্ষা করিয়াছে, এরপ অন্য কোন জাতি পথিবীতে নাই, এবং কখন ছিল কি না সন্দেহ। অতি দীঘকাল পৰ্যন্ত যে হিন্দীদিগের সমদ্ধি অক্ষয় হইয়াছিল, তাহাদিগের বাহাবলই ইহার কারণ, সন্দেহ নাই। অন্য কারণ দেখা যায় না। এই সকল প্রমাণ সত্ত্বেও সৰ্ব্বদা শানা যায় যে, হিন্দরা চিরকাল রণে অপারগ। আদরিদশীদিগের নিকট ভারতবষের এই চিরকলঙ্কের তিনটি কারণ আছে। প্রথম-হিন্দ, ইতিবত্ত নাই;—আপনার গণগান আপনি না। গায়িলে কে গায় ? লোকের ধৰ্ম্মম এই যে, যে আপনাকে মহাপরিষ বলিয়া পরিচিত না করে, কেহ তাহাকে মানষের মধ্যে গণ্য করে না। কোন জাতির সংখ্যাতি কবে অপর জাতি কত্ত্বক প্রচারিত হইয়াছে ? রোমকদিগের রণ-পান্ডিত্যের প্রমাণ-রোমকলিখিত ইতিহাস। গ্রীকদিগের যোদ্ধাগণের পরিচয়, —গ্ৰীক লিখিত গ্রন্থ। মসলমানেরা যে মহারাণকুশল, ইহাও কেবল মাসলমানের কথাতেই বিশ্বাস করিয়া জানিতে পারিতেছি। কেবল সে গণে হিন্দীদিগের গৌরব নাই—কেন না, সে কথার হিন্দ সাক্ষী নাই। দ্বিতীয় কারণ-যে সকল জাতি পররাজ্যাপহারী, প্রায় তাহারাই রণপন্ডিত বলিয়া অপর জাতির নিকট পরিচিত হইয়াছে। যাহারা কেবল আত্মরক্ষা মাত্রে সন্তুষ্ট হইয়া, পররাজ্য লাভের কখন ইচ্ছা করে নাই, তাহারা কখনই বীরগৌরব লাভ করে নাই। ন্যায়নিম্ঠা এবং বীরগৌরব একাধারে সচরাচর ঘটে না। অদ্যাপি এ দেশীয় ভাষায় “ভাল মানষ” শব্দের অর্থ-ভীরসবভাবের লোক, অকস্মা। “হারি নিতান্ত ভাল মানষে।” অৰ্থ-হরি নিতান্ত অপদাৰ্থ! হিন্দ,রাজগণ যে একেবারে পররাজ্যে লোভশান্য ছিলেন, এমত আমরা বলি না। তাঁহার পরস্পরকে আক্রমণ করিতে কখন ত্রিটি করিতেন না। কিন্তু ভারতবৰ্ষ, হিন্দ,রাজ্যকালে ক্ষদ্র ক্ষদ্র মন্ডলে বিভক্ত ছিল। ভারতবষ এতাদশ বিস্তৃত প্রদেশ যে, ক্ষদ্র মন্ডলাধিকারী রাজগণ কখন কেহ তাহার বাহিরে দেশজয়ে যাইবার বাসনা করিতেন না; কোন হিন্দ রাজা কস্মিন কালে সমগ্ৰ ভারত সাম্রাজ্যভুক্ত করিতে পারেন নাই। দ্বিতীয়তঃ, হিন্দরা যবন শ্ৰেলচ্ছ প্রভৃতি অপর ধৰ্ম্মাবলম্বী জাতিগণকে বিশেষ ঘণা করিতেন; তাহাদিগের উপর প্রভুত্ব করিবার কোন প্ৰয়াস করিতেন, এমত সম্ভাবনা নহে; বরং তদেশ-জয়ে যাত্ৰা করিলে আপন জাতি-ধৰ্ম্মম বিনাশের শঙ্কা করিবারই সম্ভাবনা। অতএব সক্ষম হইলেও হিন্দর ভারতবর্ষের বাহিরে বিজয়াকাঙক্ষায়

  • পশ্চিমাংশে আরব্য ও তুরকীয়েরা কিছ ভূমি অধিকার করিয়াছিল মাত্র।

R O