পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विविध अवक-छानऊ-कशष्क তুল্য সমাদর করিয়াছে, রােজ্যাপহরণে কোন আপত্তি করে নাই। তিনি সহস্ৰ বৎসরের অধিক কাল ভিন্নজাতীয়;—মগধের সঙ্গে কান্যকুব্জ, কান্যকুৰেজর সঙ্গে দিল্লী, দিল্লীর সঙ্গে লাহোর, হিন্দর সঙ্গে পাঠান, পাঠানের সঙ্গে মোগল, মোগলের সঙ্গে ইংরেজ;-সকলের সঙ্গে সকলে বিবাদ কারিয়া, চিরপ্রজবলিত সমরানলে দেশ দন্ধ করিয়াছে। কিন্তু সে সকল কেবল রাজায় রাজায় যাদ্ধ; সাধারণ হিন্দসমাজ কখন কাহারও হইয়া কাহারও সহিত যাদ্ধ করে নাই। হিন্দ,রাজগণ অথবা হিন্দীগ্রন্থানের রাজগণ, ভুয়োভূয়োঃ ভিন্ন জাতি কত্ত্বক জিত হইয়াছে, কিন্তু সাধারণ হিন্দসমাজ যে কখন কোন পরজাতি কত্ত্বক পরাজিত হইয়াছে, এমত বলা যাইতে পারে না; কেন না সাধারণ হিন্দসমাজ কখন কোন পরজাতির সঙ্গে যাদ্ধ করে নাই। এই বিচারে হিন্দজাতির দীর্ঘকালগত পরাধীনতার দ্বিতীয় কারণ আসিয়া পড়িল। সে কারণ,-হিন্দসমাজের অনৈক্য, সমাজমধ্যে জাতি-প্রতিস্ঠার অভাব, জাতি-হিতৈষণার অভাব, অথবা অন্য যাহাঁই বলন। আমরা সবিস্তারে তাহা বঝাইতেছি। আমি হিন্দ, তুমি হিন্দ, রাম হিন্দ, যব্দ হিন্দ, আরও লক্ষ লক্ষ হিন্দ আছে। এই লক্ষ লক্ষ হিন্দমাত্রেরই যাহাতে মঙ্গল, তাহাতেই আমার মঙ্গল। যাহাতে তাহদের মঙ্গল নাই, আমারও তাহাতে মঙ্গল নাই। অতএব সকল হিন্দরে যাহাতে মঙ্গল হয়, তাহাই আমার কত্তব্য। যাহাতে কোন হিন্দর অমঙ্গল হয়, তাহা আমার অকৰ্ত্তব্য। যেমন আমার এইরাপ কৰ্ত্তব্য আর এইরূপ অকৰ্ত্তব্য, তোমারও তদুপ, রামের তদুপ, যদরও তদুপ, সকল হিন্দরেই তদুপ। সকল হিন্দরেই যদি একরপ কাৰ্য্য হইল, তবে সকল হিন্দরে কত্তব্য যে একপরামশী, একমতাবলম্ববী, একত্র মিলিত হইয়া কায্য করে, এই জ্ঞান জাতিপ্ৰতিস্ঠার প্রথম ভাগ; অদ্ধাংশ মাত্র। হিন্দজাতি ভিন্ন পথিবীতে অন্য অনেক জাতি আছে। তাহদের মঙ্গলমাত্রেই আমাদের মঙ্গল হওয়া সম্ভব নহে। অনেক স্থানে তাহদের মঙ্গলে আমাদের অমঙ্গল । যেখানে তাহদের মঙ্গলে আমাদের অমঙ্গল, সেখানে তাহদের মঙ্গল যাহাতে না হয়, আমরা তাহাই করিব। ইহাতে পরজাতিপীড়ন করিতে হয়, করিব। অপিচ, যেমন তাহদের মঙ্গলে আমাদের অমঙ্গল ঘটিতে পারে, তেমনি আমাদের মঙ্গলে তাহদের অমঙ্গল হইতে পারে। হয় হউক, আমরা সে জন্য আত্মজাতির মঙ্গলসাধনে বিরত হইব না; পরজাতির অমঙ্গল সাধন করিয়া আত্মমঙ্গল সাধিতে হয়, তাহাও করিব। জাতিপ্ৰতিস্ঠার এই দ্বিতীয় ভাগ। দেখা যাইতেছে যে, এইরাপ মনোবাত্তি নিম্পাপ পরিশদ্ধ ভাব বলিয়া স্বীকার করা যাইতে পারে না। ইহার গারতের দোষাবহ বিকার আছে। সেই বিকারে, জাতিসাধারণের। এরপ ভ্ৰান্তি জন্মে যে, পরজাতির মঙ্গলমাত্রেই সবজাতির অমঙ্গল, পরজাতির অমঙ্গলমাত্রেই সবজাতির মঙ্গল, বলিয়া বোধ হয়। এই কুসংস্কারের বশবত্তী হইয়া ইউরোপীয়েরা অনেক দঃখ ভোগ করিয়াছে। অনৰ্থক ইহার জন্যে অনেকবার সমরানলে ইউরোপ দন্ধ করিয়াছে। সািবজাতি-প্রতিষ্ঠা ভালই হউক বা মন্দই হউক, যে জাতিমধ্যে ইহা বলবতী হয়, সে জাতি অন্য জাতি অপেক্ষা প্রবলতা লাভ করে। আজি কালি এই জ্ঞান ইউরোপে বিশেষ প্রধান, এবং ইহার প্রভাবে তথায় অনেক বিষম রাজ্যবিপ্লব ঘটিতেছে। ইহার প্রভাবে ইটালি এক রাজ্যভুক্ত হইয়াছে। ইহাই প্রভাবে বিষম প্রতাপশালী নািতন জন্মান সাম্রাজ্য স্থাপিত হইয়াছে। আরও दिक श्झेंब बका वाक्ष ना । এমত বলি না যে, ভারতবর্ষে এই জাতিপ্রতিষ্ঠা কস্মিন কালে ছিল না। ইউরোপীয় পন্ডিতেরা সিদ্ধান্ত করিয়াছেন যে, আৰ্য্যজাতীয়েরা চিরকাল ভারতবর্ষবাসী নহে। অন্যত্র হইতে ভারতবর্ষে আসিয়া, তদেশ অধিকার করিয়াছিল। প্রথম আয্যজয়ের সময়ে বেদাদির সন্টি হয়, এবং সেই সময়কেই পন্ডিতেরা বৈদিক কাল কহেন। বৈদিক কালে এবং তাহার অব্যবহিত পরেই জাতিপ্রতিষ্ঠা যে আযাগণের মধ্যে বিশেষ বলবতী ছিল, তাহার অনেক প্রমাণ বৈদিক মন্ত্ৰাদিমধ্যে পাওয়া যায়। তৎকালিক সমাজনিয়ন্তা ব্ৰাহ্মণেরা যেরপে সমাজ বিধিবদ্ধ করিয়াছিল, তাহাও ঐ জ্ঞানের পরিচয়স্থল। আষ্য বণে এবং শদ্রে যে বিষম বৈলক্ষণ্য বিধিবদ্ধ হইয়াছে, তাহাও ইহার ফল। কিন্তু ক্ৰমে আৰ্য্যবংশ বিস্তত হইয়া পড়িলে আর সে জাতিপ্রতিষ্ঠা রহিল না। আয্যবংশীয়েরা বিস্তােত ভারতবষের নানা প্রদেশ অধিকৃত করিয়া স্থানে স্থানে এক এক খণ্ডড সমাজ স্থাপন করিল। ভারতবর্ষ। এরপ বিহসংখ্যক খন্ড সমাজে বিভক্ত হইল। ROS