পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७का ब्रा5नाबव्नी নাম শনে নাই, সতরাং খ্রীস্টধৰ্ম্মম গ্রহণ করা যাহার সাধ্য নহে, তাহারও সেই অপরাধে অনন্ত নরক। যে হিন্দরে ঘরে জন্মিয়াছে, তার সেই হিন্দজন্ম তাহার দোষ নহে, পরমেশ্বর স্বয়ং তাহাকে যেখানে প্রেরণা করিয়াছেন, সেইখানেই সে আসিয়াছে, যদি দোষ থাকে, তবে সে পরমেশ্বরের দোষ, তথাপি সে দোষে সে গরিবের অনন্ত নরক। যে শ্ৰীলেেটর পকেবা জন্মিয়াছে বলিয়াই খ্রীস্টধৰ্ম্ম গ্রহণ করে নাই, তাহার সে ঈশ্বরকৃত জন্মদোষে তাহারও অনন্ত নরক। এই অত্যাচারকারী বিশ্বেশ্বরের একটি কাজ এই যে, ইনি রাত্রিদিন প্রজাবগের মনের ভিতর উকি মারিয়া দেখিতেছেন, কে কি পাপসঙকলপ করিল। যাহার এতটকু ব্যতিক্রম দেখিলেন, তাহার অদন্টে তখনই অনন্ত নরক বিধান করিলেন। যাহারা এই ধম্পেমার আবৰ্ত্তমধ্যে পড়িয়াছে, কোন সখই তাহদের কাছে আর সখ্য নহে। যাঁহারা এই পৈশাচিক ধৰ্ম্মমকে ধৰ্ম্মম বলিতে শিখিয়াছেন, ধৰ্ম্মেমরি নামে যে তাঁহাদের গায়ে জবর আসিবে, ইহা সঙ্গত। সাধারণ ধৰ্ম্মম প্রচারকদিগের এই সকল দোষেই ধৰ্ম্মমালোচনার প্রতি সাধারণ লোকের এত অনন্যরাগ জন্মিয়াছে। নহিলে ধৰ্ম্মের সহজ মাত্তি যেরােপ মনোহারিণী, সকল ত্যাগ করিয়া সাধারণ লোকের ধৰ্ম্মমালোচনাতেই অধিক অন্যরাগ সম্ভব। আমারও বিশ্বাস যে, জগতে তাহাঁই হইয়া থাকে; কেবল এখনকার বিকৃতরাচি পাঠকদিগের সম্পবন্ধে এ কথা খাটে না। তাঁহারা বিবেচনা করিয়া দেখিবেন যে, যেগলি ধৰ্ম্মম বলিয়া হিন্দ খিন্টিয়ানের দোষে তাঁহাদিগের নিকট পরিচিত হইয়াছে, সেগলি ধৰ্ম্মম নহে-অধৰ্ম্মম। ধৰ্ম্মেমরি মাত্তি বড় মনোহর। ঈশ্বর প্রজাপীড়ক নহেন-প্ৰজাপালক। ধৰ্ম্মম আত্মপীড়ন নহে,--আপনার ऐडिनाथन, আপনার আনন্দবদ্ধানই ধৰ্ম্ম। ঈশ্বরে ভক্তি, মনষ্যে প্রীতি, এবং হৃদয়ে শান্তি, ইহাই ধৰ্ম্মম। ভক্তি, প্রীতি, শান্তি, এই তিনটি শব্দে যে বস্তু চিত্রিত হইল, তাহার মোহিনী মাত্তির অপেক্ষা মনোহর জগতে আর কি আছে ? তাহা ত্যাগ করিয়া আর কোন বিষয়ের আলোচনা করিতে ইচ্ছা করে ? যিনি নাটক নবেল পড়িতে বড় ভালবাসেন, তিনি একবার মনে বিচার করিয়া দেখিবেন, কিসের আকাঙক্ষায় তিনি নাটক নবেল পড়েন ? যদি সেই সকলে যে বিস্ময়কর ঘটনা আছে, তাহাতেই তাঁহার চিত্তবিনোদন হয়, তবে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করি, বিশ্বেশ্বরের এই বিশ্বসান্টির অপেক্ষা বিস্ময়কর ব্যাপার কোন সাহিত্যে কথিত হইয়াছে ? একটি তুণে বা একটি মাছির পাখায় যত আশ্চৰ্য্য কৌশল আছে, কোন উপন্যাস-লেখকের লেখায় তত কৌশল আছে? আর তাঁহাদিগকে জিজ্ঞাসা করি, ঈশ্বরের সন্টির অপেক্ষা কোন কবির সন্টি সন্দর ? বস্তুতঃ কবির সন্টি, সেই ঈশ্বরের সন্টির অনকারী বলিয়াই সন্দর। নকল কখন আসলের সমান হইতে পারে না। ধৰ্ম্মেমরি মোহিনী মাত্তির কাছে সাহিত্যের প্রভাব বড় খাটো হইয়া যায়। পাঠক বলিবেন, “এ কথা সত্য হইতে পারে না; কেন না, আমার নাটক নবেল পড়িতে ইচ্ছা! হয়, পড়িয়াও আনন্দ নাই। কই, ধৰ্ম্মম প্ৰবন্ধ পড়িতে ত ইচ্ছা হয় না, পড়িয়াও কোন আনন্দ পাই না।” ইহার উত্তর বড় সহজ। তুমি সাহিত্য পাঠে অনার্যক্ত এবং তাহাতে আনন্দ লাভ কর, তাহার কারণ এই যে, যে সকল বত্তির অনশীলন করিলে সাহিত্যের মৰ্ম্ম গ্রহণ করা যায়, তুমি চিরকাল সেই সকল ব্যক্তিগলির অনশীলন করিয়াছ, কাজেই তাহাতে আনন্দ লাভ কর। যে এজন্য তাহার আলোচনায় তুমি আনন্দ লাভ কর না। কিন্তু এখন সেগলির আলোচনা নিতান্ত প্রয়োজনীয় হইয়াছে। কেন না, তাহাতেই সখি। সাহিত্যের আলোচনায় সখি আছে বটে, কিন্তু যে সখি তোমার উদ্দেশ্য এবং প্রাপ্য হওয়া উচিত, সাহিত্যের সখি তাহার ক্ষদ্রাংশ মাত্র। সাহিত্যও ধৰ্ম্ম ছাড়া নহে। কেন না, সাহিত্য সত্যমলোক। যাহা সত্য, তাহা ধৰ্ম্মম। যদি এমন থাকে যে, তাহা অসত্যমলেক ও অধৰ্ম্মময়, তবে তাহার পাঠে দারাত্মা বা বিকৃতরাচি পাঠক ভিন্ন কেহ সখী হয় না। কিন্তু সাহিত্যে যে সত্য ও যে ধৰ্ম্ম, সমস্ত ধন্মের তাহা এক অংশ মাত্র। অতএব কেবল সাহিত্য নহে, যে মহত্তত্ত্বের অংশ এই সাহিত্য, সেই ধৰ্ম্মই এইরূপ আলোচনীয় হওয়া উচিত। সাহিত্য ত্যাগ করিও না, কিন্তু সাহিত্যকে নিম্পন সোপান করিয়া ধৰ্ম্মেমর মণেও আরোহণ করা। কিন্তু ইহাও যেন স্মরণ থাকে যে, গোড়ায় কিছ দঃখ কষ্ট না করিয়া কোন সখই লাভ করা RG y