পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী মিল যে ঈশ্বর স্বীকার করিয়াছেন, তিনি এরপ অজ্ঞেয় নহেন। মিল ইচ্ছাবিশিষ্ট, জগরিষম্পমাতা সম্বীকার করিয়াছেন। সত্বীকার করিয়া ঐশিক সর্বভাবের মীমাংসায় প্রবত্ত হইয়াছেন। ঈশ্বরবাদীরা সচরাচর ঈশ্বরের তিনটি গণ বিশেষরূপে নির্বাচন করিয়া থাকেনশক্তি, জ্ঞান এবং দয়া। তাঁহাদিগের মতে ঈশ্বরের গণ মাত্র সীমাশন্য-অনন্ত। অতএব ঈশ্বরের শক্তি, জ্ঞান এবং দয়াও অনন্ত। ঈশ্বর সব্বশক্তিমান, সব্বজ্ঞ, এবং দয়াময়। মিল এই মতের প্রতিবাদ করিয়াছেন। তিনি বলেন যে, যেখানে জগতের নিম্পমাণ-কৌশল প্রয়োজন হয়—যিনি সব্বশক্তিমান, ইচ্ছায় সকলই করিতে পারেন, তাঁহার কৌশলের প্রয়োজন হয় না। কেবল ইচ্ছা বা আজ্ঞামাত্রে কৌশলের উদ্দিষ্ট কৰ্ম্ম সিদ্ধ হইতে পারে। যদি, মনষ্যের এরপ শক্তি থাকিত যে, সে কেবল ঘড়ির ডায়ল প্লেটের উপর কাঁটা বসাইয়া দিলেই কাঁটা न्ञ३ চালত, তবে কখন মনষ্যে কৌশল্যাবলম্বন করিয়া ঘড়ির স্প্রিঙ্গের উপর স্প্ৰিঙ্গ এবং র উপর হইল গড়িত না। অতএব ঈশ্বর যে সব্বশক্তিমান নহেন, ইহা সিদ্ধ। কথার দই একটা উত্তর আছে, কিন্তু হিন্দধমের নৈসগিক ভিত্তির অন্যসন্ধান র মােখ্য উদ্দেশ্য, অতএব সে সকল কথা আমরা ছাড়িয়া যাইতে পারি। সে সকল আপত্তিও মিল সম্যক প্রকারে খন্ডন করিয়াছেন। সব্বজ্ঞতা সম্বন্ধে মিল বলেন যে, ঈশ্বর সব্বজ্ঞ কি না, তদ্বিষয়ে সন্দেহ। যে প্রণালী অবলম্বন করিয়া মনষ্যের কৃত কৌশলের বিচার করা যায়, সে প্রণালী অবলম্বন করিয়া ঈশ্বরকৃত কৌশল সকলের সমালোচনা করিলে অনেক দোষ বাহির হয়। এই মনীষীদেহের নিম্পমাণে কত কৌশল, কত শক্তি ব্যয়িত হইয়াছে, কত যত্নে তাহা রক্ষিত হইয়া থাকে। কিন্তু যাহাতে এত কৌশল, এত শক্তিব্যয়, এত যত্ন, তাহা ক্ষণভঙ্গরি-কখন অধিক কাল থাকে না। যিান এত কৌশল করিয়া ক্ষণভঙ্গীরতা বারণ করিতে পারেন নাই, তিনি সকল কৌশল জানেন না-সব্বজ্ঞ নহেন। দেখ, জীবশরীর কোন স্থানে ছিন্ন হইলে, তাহা পািনঃসংযক্ত হইবার কৌশল আছে; উহাতে বেদনা হয়, পয হয়, এবং সেই ব্যাধর ফলে পািনঃসংযোগ ঘটে। কিন্তু সেই ব্যাধি পীড়াদায়ক। যাঁহার প্রণীত কৌশল, উপকারার্থ প্রণীত হইয়াও পীড়াদায়ক, তাঁহার কৌশলে অসম্পণেতা আছে। যাঁহার কৌশলে অসম্পপণতা আছে, তাঁহাকে কখন সব্বজ্ঞ বলা যাইতে পারে না। ইহাও মিল সস্বীকার করেন যে, এমন্তও হইতে পারে যে, এই অসম্পপণতা শক্তির অভাবের ফল-অসৰবজ্ঞতার ফল নহে। অতএব ঈশ্বর সব্বজ্ঞা হইলেও হইতে পারেন। যদি ইহাই বিশ্বাস কর যে, ঈশ্বর সব্বজ্ঞ, কিন্তু সব্বশক্তিমান নহেন, তবে এই এক প্রশন উত্থাপিত হয় যে, কে ঈশ্বরের শক্তির প্রতিবন্ধকতা করে ? মনষ্যাদি যে সব্বশক্তিমান নহে তাহার কারণ, তাহাদিগের শক্তির প্রতিবন্ধক আছে। তুমি যে হিমালয় পব্বত উৎপাটন করিয়া সাগর-পারে নিক্ষেপ করতে পার না-তাহার কারণ, মাধ্যাকৰ্ষণ তোমার শক্তির প্রতিবন্ধকতা করতেছে। শক্তির প্রতিবন্ধক না থাকিলে, সকলেই সব্বশক্তিমান হইত। ঈশ্বর সব্বশক্তিমান N নহেন, এই কথায় প্রতিপন্ন হইতেছে যে, তাঁহার শক্তির প্রতিবন্ধক কেহ বা কিছদ আছে। সেই नाङ्केठे? এই সম্পবন্ধে দাইটি উত্তর হইতে পারে। কেহ বলিতে পারেন যে, দেখ, ঈশ্বর নিম্পমাতা মাত্র; তিনি যে প্রস্টা, এমত প্রমাণ তুমি কিছই পাও নাই। তুমি তাঁহার নিম্পমণিপ্রণালী দেখিয়াই তাহার অস্তিত্ব সিদ্ধ করিতেছ; কিন্তু নিম্পমাণপ্রণালী হইতে কেবল নিম্পমাতাই সিদ্ধ হইতে পারেন, স্ৰষ্টা সিদ্ধ হইতে পারেন না। ঘটের নিম্পমাণ দেখিয়া তুমি কুম্ভকারের অস্তিত্ব সিদ্ধ করিতে পাের; কিন্তু কুম্ভকারকে মাত্তিকার সস্টিকারক বলিয়া তুমি সিদ্ধ করিতে পার না। অতএব এমন হইতে পারে যে, ঈশ্বর স্রষ্টা নহেন, কেবল নিম্পমাতা। ইহার অর্থ এই যে সামগ্রীকে গঠন দিয়া তিনি বৰ্ত্তমােনাবস্থাপন্ন করিয়াছেন, সে সামগ্রী পািব্ব হইতে ছিল -ঈশ্বরের সন্ট নহে। ঘট দেখিয়া কেবল ইহাই সিদ্ধ হয় যে, কোন কুম্ভকর মাত্তিকা লইয়া S48 པའི་