পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बeका ब्रा5नाबवा আমাদিগের দ্বিতীয় বক্তব্য এই যে, এই ত্রিদেবোপাসনার নৈসগিক ভিত্তি আছে বটে, কিন্তু আমরা এমত কিছ লিখি নাই এবং বিচারেও এমত কোন কথাই পাওয়া যায় না যে তদ্দ্বারা এই ত্রিদেবের অস্তিত্ব বিজ্ঞানের দ্বারা প্ৰমাণীকৃত বলিয়া স্বীকার করা যায়। প্রমাণে দাইটি গারতের ছিদ্র লক্ষিত হয়। প্রথম এই যে জগতের নিম্পমাণকৌশলে চৈতন্যযক্ত নিমাতার অস্তিত্ব প্রমাণ হইতেছে, এই কথা স্বীকার করাতেই ত্রিদেবের অস্তিত্ব সঙ্গত বলিয়া সংস্থাপিত হইয়াছে। কিন্তু প্রথম সত্রটি ভ্ৰান্তিজনিত; প্রাকৃতিক নিবদ্বাচনের ফলকেই নিম্নমাণকৌশল বলিয়া আমাদিগের ভ্রম হয়; সেই নাই। নিৰ্ম্মাতার অস্তিত্ব স্বীকার করিয়াই আমরা সংহারকত্তা, এবং পথক পথক স্রস্টা পাতা পাইয়াছি। যদি নিমাতার অস্তিত্বের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নাই, তবে ত্রিদেবের মধ্যে কাহারও অস্তিত্বের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নাই। দ্বিতীয় দোষ, সজন পালন সংহার, একই নিয়মাবলীর ফল। বিজ্ঞান ইহাই শিখাইতেছে যে, যে যে নিয়মের ফলে সজেন, সেই সেই নিয়মের ফলে পালন, সেই সেই নিয়মের ফলে ধবংস । নিয়ম যেখানে এক, নিয়ন্তা সেখানে পথিক সঙ্কলাপ করা প্রামাণ্য নহে। আমরা কোথাও বলি নাই যে, তাহা প্রামাণ্য। আমরা কেবল বলিয়াছি যে, তাহা অপ্রামাণ্য বা অসঙ্গত, নহে, সঙ্গত। যাহা প্রমাণবিরদ্ধে নহে বা যাহা কেবল সঙ্গত, তাহা সতরাং প্রামাণিক, ইহা বলা যাইতে পারে না । আমাদিগের তৃতীয় বক্তব্য এই যে, ত্রিদেবের অস্তিত্বের যৌক্তিকতা স্বীকার করিলেও, তাঁহাদিগকে সাকার বলিয়া স্বীকার করা যায় না। পরাণেতিহাসে যে সকল আনষঙ্গিক কথা আছে, তৎপোষকে কিছমাত্র বৈজ্ঞানিক ব্যক্তি পাওয়া যায় না। ব্ৰহ্মা, বিষ্ণ, মহেশ্বর প্রত্যেকেই কতকগলি অদ্ভুত উপন্যাসের নায়ক। সেই সকল উপন্যাসের তিলমাত্ৰ নৈসগিক ভিত্তি নাই। যিনি ব্ৰহ্মা বিষ্ণৱ মহেশ্বরকে বিশ্বাস করেন, তাঁহাকে নিবোধ বলিতে পারি না; কিন্তু তাই বলিয়া পরাণেতিহাসে বিশ্বাসের কোন কারণ আমরা নিন্দেশ করি নাই। চতুৰ্থ, ত্রিদেবের অস্তিত্বের কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নাই, ইহা যথার্থ, কিন্তু ইহা স্বীকার করিতে হইবে যে, মহাবিজ্ঞানকুশলী ইউরোপীয় জাতির অবলম্বিত শ্ৰীস্টধৰ্ম্মমর্বাপেক্ষা, হিন্দদিগের এই ত্রিদেবোপাসনা বিজ্ঞানসম্মত এবং নৈসগিক। ত্রিদেবোপাসনা বিজ্ঞানমােলক না হউক, বিজ্ঞানবিরদ্ধে নহে। কিন্তু শ্ৰীআটীয় সব্বশক্তিমান, সব্বজ্ঞ, এবং দয়াময় ঈশ্বরে বিশ্বাস যে বিজ্ঞানবিরদ্ধে, তাহা উপরিকথিত মিল-কৃত বিচারে সপ্রমাণ হইয়াছে। হিন্দীদিগের মত কৰ্ম্মফল মানিলে বা হিন্দীদিগের মায়াবাদে তাহা বিজ্ঞানসম্মত হয়। বিজ্ঞানে ইহা পদে পদে প্রমাণীকৃত হইতেছে যে, এই জগৎ ব্যাপিয়া সব্বত্র, সব্বকায্যে এক অনন্ত, অচিন্তনীয়, অজ্ঞেয় শক্তি আছে- ইহা সকলের কারণ, বহিজগতের অন্তরাত্মাসম্বরপ । সেই মহাবলের অস্তিত্ব অস্বীকার করা দরে থাকুক, আমরা তদন্দেশে ভক্তিভাবে কোটি কোটি কোটি প্ৰণাম করি। বঙ্গদর্শনের পত্র-সচেনা।” যাঁহারা বাঙ্গালা ভাষার গ্রন্থ বা সাময়িক পত্র প্রচারে প্রবত্ত হয়েন, তাঁহাদিগের বিশেষ দািরদষ্ট। তাঁহারা যত যত্ন করন না কেন, দেশীয় কৃতবিদ্য সম্প্রদায় প্রায়ই তাঁহাদিগের রচনা পাঠে বিমখ। ইংরাজিপ্রিয় কৃতবিদ্যগণের প্রায় স্থিরজ্ঞান আছে যে, তাঁহাদের পাঠের যোগ্য কিছই বাঙ্গালা ভাষায় লিখিত হইতে পারে না। তাঁহাদের বিবেচনায় বাঙ্গালা ভাষার লেখকমাত্রেই হয়ত বিদ্যাবদ্ধিহীন, লিপিকৌশলশন্যা; নয়ত ইংরাজি গ্রন্থের অনাবাদক। তাঁহাদের বিশ্বাস যে, যাহা কিছর বাঙ্গালা ভাষায় লিপিবদ্ধ হয়, তাহা হয়ত অপাঠ্য, নয়ত কোন ইংরাজি গ্রন্থের ছায়ামাত্র; ইংরাজিতে যাহা আছে, তাহা আর বাঙ্গালায় পড়িয়া আত্মাবমাননার প্রয়োজন

  • এই প্ৰবন্ধ পানমন্দ্ৰিত করিবার কারণ এই, ইহার মধ্যে যে সকল কথা আছে, তাহার পনরাক্তি ar প্রয়োজনীয়। ১২৭৯ বৈশাখে বঙ্গদর্শন প্রথম প্রকাশিত হয়।

濑 h

  • 'ሷኔፕገናኝፖ¥ "