পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী DDD DBBBD BB DBB LDDBDB DBBDD DDBB DB DD DDBD BDBBB LEEO লোক, বিশেষ ইতর লোক, অত্যন্ত আলস্যপরবশ। শীঘ্ন নড়ে না, সহজে উঠে না, কোন কাষেই তৎপুরতা নাই! দরে যাইতে চাহে না। কৃষক। বরং জমীদারের অত্যাচার নীরবে সহ্য করবে, তথাপি দরে গিয়া তাহার প্রতীকার করিতে চাহে না। যাঁহারা বিচারকার্ষ্যে নিযক্ত, তাঁহারা জানেন যে, তাঁহাদের বিচারালয়ের নিকটবত্তীর্ণ স্থানেরই মোকদ্দমা অনেক; দরের মোকদ্দমা প্রায় হয় না। অতএব বিচারক নিকটে থাকিলে যে অত্যাচারের শাসন হইত, দরে থাকায় সে অত্যাচারের শাসন হয় না। ইহার আর একটি ফল। এই হইয়া উঠিয়াছে যে, অত্যাচারী গোমস্তারাই বিচারকের স্থলাভিষিক্ত হইয়াছে। যখন একজন কৃষক অপরের উপর দৌরাত্ম্য করে, তখন তাহার নালিশ জমীদারের গোমস্তার কাছে হয়। যখন গোমস্তা নিজে অত্যাচার করে, তাহার নালিশ হয় না। যে ব্যক্তি স্বয়ং পরপীড়ক, এবং চারি পয়সার লোভে সকল প্রকার অত্যাচার করিতে প্ৰস্তৃত, তাহার হাতে বিচারকাৰ্য্য থাকায় দেশের কি আনিস্ট হইতেছে, তাহা বদ্ধিমানে বঝিবেন। তৃতীয়তঃ, বিলম্ব। সকল আদালতেই মোকদ্দমা নিম্পন্ন হইতে বিলম্বব হয়। বিলম্বেব যে প্রতীকার, সে প্রতীকারকে প্রতীকার বলিয়া বোধ হয় না। গোমস্তায় কৃষকের ধান উঠাইয়া লইয়া গিয়াছে, কৃষক আদালতে ক্ষতিপরণের জন্য নালিশ করিল। যদি বড় কপাল-জোরে সে ডিক্ৰী পাইল, তবে সে এক বৎসরে। আপীলে আর এক বৎসর। যদি আত্যন্তিক সৌভাগ্যগণে আপীলে ডিক্ৰী টিকিল, এবং ডিক্ৰীজারিতে টাকা আদায় হইল, তবে সে আর এক বৎসরে। বাদীর কুড়ি টাকার ধান ক্ষতি হইয়াছিল, ডিক্ৰীজারী করিয়া খরচ খরচা বাদে তিন বৎসর পরে পাঁচ টাকা আদায় হইল। এরপ প্রতীকারের আশায় কোন কৃষক জমীদারের নামে নালিশ করবে ? বিলম্পেব বিচারকের দোষ নাই। আদালতের সংখ্যা অলপ-যেখানে তিন জন বিচারক হইলে ভাল হয়, সেখানে একজন বৈ নাই। সতরাং মোকদ্দমা নিৎপন্ন করিতে বিলম্ব ঘটিয়া যায়। আর প্রচলিত আইন অত্যন্ত জটিল। বিচারপ্রণালীতে অত্যন্ত লিপিবাহিল্যের এবং অত্যন্ত কাৰ্য্যবাহিল্যের আবশ্যকতা। আজ এ মোকদ্দমার প্রতিপক্ষের উকীলের জেরার বাহিল্যে একটি মোকদ্দমার একটি সাক্ষী মাত্র বিদায় হইল; সতরাং আর পাঁচটি মোকদ্দমার কিছ হইল না, আর এক মাস বাদে তাহার দিন পড়িল। কাল নির্বাপন্নযোগ্য মোকদ্দমার একটি নিম্পপ্রয়োজনীয় সাক্ষী অন্যােপস্থিত, তাহার উপর দস্তক করিতে হইল। সতরাং মোকদ্দমা আর এক মাস পিছাইয়া গেল। এ সকল না করিলে বিচার আইনসঙ্গত হয় না। নিম্পত্তি আপীলে টিকে না। বিচারে বিলম্ব হয়, তাহাও স্বীকার,-অবিচার হয়, তাহাও স্বীকার, তথাপি কলিকাতার তৈয়ারী আইন ঘণাক্ষরে লঙ্ঘন করা যাইতে পারে না। ইংরাজি আইনের মন্ম এই। আমরা যে সভ্য হইতেছি, দিন দিন যে দেশের শ্ৰীবদ্ধি হইতেছে, ইহা তাহার একটি পরিচয়। আমাদিগের দেশে ভাল আইন ছিল না, বিলাত হইতে এখন ভাল আইন আসিয়াছে। জাহাজে আমদানি হইয়া, চাঁদপালের ঘাটে ঢোলাই হইয়া, কলিকাতার কলে গাঁটবন্দী হইয়া, দেশে দেশে কিছ চড়া দামে বিকাইতেছে। তাহাতে ওকালতি, হাকিমি, আমলাগিরি প্রভৃতি অনেকগলি আধনিক ব্যবসায়ের সন্টি হইয়াছে। ব্যাপারীরা আপন আপন পণ্যদ্রব্যের প্রশংসা করিতে করিতে অধীর হইতেছেন। গলাবাজির জোরে, আগে যাঁহাদের অন্ন হইত না, এখন তাঁহারা বড় লোক হইতেছেন। দেশের শ্ৰীবদ্ধির আর সীমা নাই, সব্বত্র আইনমত বিচার হইতেছে। আর কেহ বেআইনি করিয়া সবিচার করিতে পারে না। তাহাতে দীন দঃখী লোকের একটি কািন্ট, তাহারা আইনের গৌরব বঝে না, সবিচার চায়। সে কেবল তাহাদিগের মােখাঁতাজনিত a মনে কর, গোমস্তা, কি অপর কেহ কোন দঃখী প্রজার উপর কোন গারতের দৌরাত্ম্য করিল। গোমস্ত সেশনের বিচারে অপিত হইল। সেশনের বিচারে সাক্ষীদিগের সত্য কথায় প্রতিবাদীর অপরাধ প্রমাণ হইল। কিন্তু বিচার জরির হাতে। জািরর মহাশয়েরা এ কাজে নািতন ব্ৰতী; প্রমাণ অপ্রমাণ কিছর বাঝেন না। যখন সাক্ষীর জোবানবন্দী হইতেছিল, তখন তাঁহারা কেহ কড়ি গণিতেছিলেন, কেহ দোকানের দেনা পাওনা মনে মনে নিকাশ করিতেছিলেন, কেহ বা অলপ তন্দ্রাভিভুত। উকীল। যখন বক্তৃতা করিতেছিলেন, তখন তাঁহাৱা কিঞ্চিৎ ক্ষধাতুর, গহে। 907