পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बभ्का ब्रष्नाबढ्ी বিপ্লবের অন্যামোদক নাহি। বিশেষ যে বন্দোবস্ত ইংরাজেরা সত্য প্রতিজ্ঞা করিয়া চিরস্থায়ী করিয়াছেন, তাহার ধবংস করিয়া তাঁহারা এই ভারতমণডলে মিথ্যাবাদী বলিয়া পরিচিত হয়েন, প্রজাবগের চিরকালের অবিশ্বাসভাজন হয়েন, এমত কুপরামর্শ আমরা ইংরাজদিগকে দিই না। যে দিন ইংরাজের অমঙ্গলাকাঙক্ষী হইব, সমাজের অমঙ্গলাকাঙক্ষী হইব, সেই দিন সে পরামর্শ দিব। এবং ইংরাজেরাও এমন নিবোধ নহেন যে, এমত গহির্ভূত এবং অনিন্টজনক কায্যে প্রবত্ত হয়েন। আমরা কেবল ইহাই চাহি যে, সেই বন্দোবস্তের ফলে যে সকল অনিন্ট ঘাঁটিতেছে, এখন সনিয়ম করিলে তাহার যত দ্যর প্রতীকার হইতে পারে, তাহাই হউক। কথিত লেখক লিখিয়াছেন যে, “যাহাতে দশশালা বন্দোবস্তের কোনরাপ ব্যাঘাত না হইয়া জমীদার ও প্ৰজা, উভয়েরই অনাকলে এরাপ সাব্যবস্থা সকল স্থাপিত হয় যে, তন্দ্বারা উভয়েরই উন্নতি হইয়া দেশের শ্ৰীবদ্ধি হইতে পারে, তদ্বিষয়ে পরামর্শ দেওয়াই কৰ্ত্তব্য।” আমরা তাহাই চাই। ইহাও বক্তব্য যে, আমরা কণাওয়ালিসের বন্দোবস্তকে ভ্ৰমাত্মক, অন্যায়, এবং অনিন্টিকারক বলিয়াছি বটে, কিন্তু ইংরাজেরা যে, ভূমিতে সবত্ব ত্যাগ করিয়া এ দেশীয় লোকদিগকে তাহাতে সবত্ববান করিয়াছেন, এবং করবদ্ধির অধিকার ত্যাগ করিয়াছেন, ইহা দােষ্য বিবেচনা করি না। তাহা ভালই করিয়াছেন। এবং ইহা সবিবেচনার কাজ, ন্যায়সঙ্গত, এবং সমাজের মঙ্গলজনক। আমরা বলি যে, এই চিবস্থায়ী বন্দোবস্তু জমীদারের সহিত না হইয়া প্রজার সঙ্গে হওয়াই উচিত ছিল। তাহা হইলেই নিন্দোষ হইত। তাহা না হওয়াতেই ভ্ৰমাত্মক, অন্যায় এবং অনিন্টজনক হইয়াছে। লেখক আরও বলেন“আমরা দেখিতেছি, বাঙ্গালা দেশ নিতান্ত নিধন হইয়া পড়িয়াছে। * * সকলেই বলে, আমাদের দেশের টাকা আমাদের দেশে থাকিতেছে না, বিদেশীয় বণিক ও রাজপরিষেরা প্রায়ই লইয়া যাইতেছেন। যদি মহাত্মা কণাওয়ালিস জমীদারদিগের বিত্তমান শ্ৰীর উপায় না করিয়া যাইতেন, তবে দেশ এত দিন আরও দরিদ্র হইয়া পড়িত। দেশে যাহা কিছ অর্থ সম্পত্তি আছে, তাহা এই কয়েক জন জমীদারের ঘরেই দেখিতে পাওয়া যায়।” সাধারণতঃ অনেকেই এই কথা বলেন, সতরাং ইহার মধ্যে আমাদিগের বিবেচনায় যে কয়েকটি ভ্ৰম আছে, তাহা দেখাইতে বাধ্য হইলাম। ১। ইউরোপীয় কোন রাজ্যের সহিত তুলনা করিতে গেলে, বাঙ্গালা দেশ নিধন বটে, কিন্তু পািব্বাপেক্ষা বাঙ্গালা যে এক্ষণে নিধান, এরপ বিবেচনা করিবার কোন কারণ নাই। বৰ্ত্তমান কাল অপেক্ষা ইতিপািব্বকালে যে বাঙ্গালা দেশে অধিক ধন ছিল, তাহার কিছ মাত্র প্রমাণ নাই। বরং এক্ষণে যে পািব্বাপেক্ষা দেশের ধন বদ্ধি হইতেছে, তাহার অনেক প্রমাণ আছে। “বঙ্গদেশের কৃষকের” প্রথম পরিচ্ছেদে আমরা কোন কোন প্রমাণের উল্লেখ করিয়াছি। তদন্তিরিক্ত এক্ষণে दनिदान उठावभाक नाई। ২। বিদেশী বণিক ও রাজপরিষে দেশের টাকা লইয়া যাইতেছে বলিয়া যে, দেশে টাকা থািকছে না, এই প্রসঙ্গের মধ্যে প্রথমে বিদেশীয় বণিক দিগের বিষয় আলােচনা করা . যাঁহারা এ কথা বলেন, তাঁহাদের সচরাচর তাৎপৰ্য্য বোধ হয়, এই যে, বণিকেরা এই দেশে আসিয়া অৰ্থ উপাত্তজন করিতেছেন, সতরাং এই দেশের টাকা লইতেছেন বৈ কি ? যে টাকাটা তাঁহাদের লাভ, সে টাকা, এ দেশের টাকা। বোধ হয়, ইহাই তাঁহাদের বলিবার উদ্দেশ্য। বিদেশীয় বণিকেরা যে লাভ করেন, তাহা দই প্রকারে; এক আমদানিতে, আর এক রপ্তানিতে। এদেশের দ্রব্য লইয়া গিয়া দেশান্তরে বিক্রয় করেন, তাহাতে তাঁহাদের কিছ মনোফা থাকে। দেশান্তরের দ্রব্য আনিয়া এ দেশে বিক্রয় করেন, তাহাতেও তাঁহাদের কিছ মনোফা থাকে। তদ্ভিন্ন অন্য কোন প্রকার লাভ নাই। এ দেশের সামগ্ৰী লইয়া গিয়া বিদেশে বিক্রয় করিয়া যে মনোফা করেন, সহজেই দেখা যাইতেছে যে, সে মনোফা এ দেশের লোকের নিকট হইতে লয়েন না। যে দেশে তাহা বিক্রয় হয়। সেই দেশের টাকা হইতে তাহার মনোফা পান। এখানে তিন টাকা মণি চাউল কিনিয়া বিলাতে পাঁচ টাকা মণ বিক্রয় করিলেন; যে দই টাকা মনোফা করিলেন, তাহা এ দেশের লোককে দিতে হইল না; বিলাতের লোকে দিল, বরং এ দেশের লোকে আড়াই টাকা পড়তার চাউল তাঁহাদের SONO