পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-বাজালোর কলঙ্ক কীৰ্ত্তির চিহ্ন আছে, পাঠানের অনেক কীৰ্ত্তির চিহ্ন পাওয়া যায়, শত বৎসর মাত্রে ইংরেজ অনেক কীৰ্ত্তি সংস্থাপন করিয়াছে, কিন্তু বাঙ্গালায় মোগলের কোন কীৰ্ত্তি কেহ দেখিয়াছে? কীত্তির মধ্যে “আসল তুমার জমা”। কীৰ্ত্তি কি অকীৰ্ত্তি বলিতে পারি না, কিন্তু তাহাও একজন হিন্দকৃত। बछवादृ कaeद * যখন বঙ্গদর্শন প্রথম বাহির হয়, তখন প্রথম সংখ্যার প্রথম প্রবন্ধে মঙ্গলাচরণস্বরপ ভারতের চিরকলণ্ডক অপনোদিত হইয়াছিল। আজ প্রচার সেই দলস্টান্তানসারে প্রথম সংখ্যার প্রথম প্রবন্ধে किच्চিরকালঙ্ক অপনোদনে উদ্যত। জগদীশ্বর ও বাঙ্গালার স-সন্তানমাত্রেই আমাদের সহায় যাহা ভারতের কলঙ্ক, বাঙ্গালারও সেই কলঙ্ক । এ কলঙ্ক আরও গাঢ়। এখানে আরও দাভেদ্য অন্ধকার। কদাচিৎ অন্যান্য ভারতবাসীর বাহবিলের প্রশংসা শানা যায়, কিন্তু বাঙ্গালীর বাহবিলের প্রশংসা কেহ কখন শানে নাই। সকলেরই বিশ্বাস, বাঙ্গালী চিরকাল দািব্বল, চিরকাল ভীর, চিরকাল সত্ৰীস্বভাব, চিরকাল ঘসি দেখিলেই পলাইয়া যায়। মেকলে বাঙ্গালীর চরিত্র সম্পবন্ধে যাহা লিখিয়াছেন, এরপ জাতীয় নিন্দা কখনও কোন লেখক কোন জাতি সম্পবন্ধে কলমবিন্দ করে নাই। ভিন্নদেশীয় মাত্রেরই বিশ্বাস যে, সে সকল কথা অক্ষরে অক্ষরে সত্য। ভিন্নজাতীয়ের কথা দরে থাকুক, অধিকাংশ বাঙ্গালীরও এইরপ বিশ্বাস। উনবিংশ শতাব্দীর বাঙ্গালীর চরিত্র সমালোচনা করলে, কথাটা কতকটা যদি সত্য বোধ হয়, তবে বলা যাইতে পারে, বাঙ্গালীর এখন এ দন্দশা হইবার অনেক কারণ আছে। মানষকে মারিয়া ফেলিয়া তাহাকে মরা বলিলে মিথ্যা কথা বলা হয় না। কিন্তু যে বলে যে, বাঙ্গালীর চিরকাল এই চরিত্র, বাঙ্গালী চিরকাল দািবল, চিরকাল ভীর, সত্ৰীস্বভাব, তাহার মাথায় বজাঘাত হউক, তাহার কথা মিথ্যা। এ নিন্দার কোন মল ইতিহাসে কোথাও পাই না। সত্য বটে, বাঙ্গালী মসলমান কত্ত্বক পরাজিত হইয়াছিল, কিন্তু পথিবীতে কোন জাতি পরজাতি কৰ্ত্তক পরাজিত হয় নাই ? ইংরেজ নম্পমানের অধীন হইয়াছিল, জন্মানি প্রথম নেপোলিয়নের অধীন হইয়াছিল। ইতিহাসে দেখি, ষোড়শ শতাব্দীর স্পেনীয়দিগের মত তেজস্বী জাতি, রোমকদিগের পর আর কেহ জন্মগ্রহণ করে নাই। যখন সেই স্পেনীয়েরা আট শত বৎসর মসলমানের অধীন ছিল, তখন বাঙ্গালী পাঁচ শত বৎসর মসলমানের অধীন ছিল বলিয়া, সে জাতিকে চিরকাল অসার বলা যাইতে পারে না। ইংরেজ ইতিহাস-লেখক উপহাস করিয়া বলেন, সপ্তদশ মাসলমান অশ্বারোহী আসিয়া বাঙ্গালা জয় করিয়াছিল। বঙ্গদর্শনে পন্ধেব দেখান হইয়াছে যে, সে কথার কোন মািল নাই; বালক-মনোরঞ্জনের যোগ্য উপন্যাস মাত্র। সতরাং আমরা আর সে কথার কিছ প্রতিবাদ করিলাম না। বাঙ্গালীর চিরদব্বলতা এবং চিরভীরতার আমরা কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ পাই নাই। কিন্তু বাঙ্গালী যে পািব্বকালে বাহাবলশালী, তেজস্বী, বিজয়ী ছিল, তাহার অনেক প্রমাণ পাই। অধিক নয়, আমরা এক শত বৎসর পকেবর বাঙ্গালী পাহলয়নের, বাঙ্গালী লাঠি শড়কিওয়ালার যে সকল বলবীয্যের কথা বিশ্বস্তসত্রে শনিয়াছি, তাহা শনিয়া মনে সন্দেহ হয় যে, সে কি এই বাঙ্গালী জাতি ? কিন্তু সে সকল অনৈতিহাসিক কথা, তাহা আমরা ছাড়িয়া দিই। আমরা দাই একটা ঐতিহাসিক প্রমাণ দিতেছি। পন্ডিত্যুবর ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল মিত্র পালবংশীয় এবং সেনবংশীয় রাজাদিগের সম্পবন্ধে যে সকল ঐতিহাসিক তত্ত্ব আবিস্কৃত করিয়াছেন, আমাদের মতে তাহা অখন্ডনীয়। কোন ইউরোপীয় বা এতদ্দেশীয় পন্ডিত এ বিষয়ে এতটা মনোযোগী হন নাই। কেহই তাঁহার মতের সংপ্ৰতিবাদ করিতে পারেন নাই। আমরা জানি যে, তাঁহার মত সকলের গ্রাহ্য হয় নাই; কিন্তু যাঁহারা তাঁহার প্রতিবাদী, তাঁহারা এমন কোন কারণ নিদিষ্ট করিতে পারেন নাই যাহাতে সত্যানসন্ধিৎস ব্যক্তি ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মত অগ্রাহ্য করিতে সক্ষমত হইতে পারেন। 263, SRSS, erker 999