পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰঙ্কিম রচনাবলী LLLLLL LLLLLLL LL LLLLL LSLLLLLLLLSLLSLLSLLLLLSLLLLS গথ কত্ত্বক রোম ধবংস হইয়াছিল, বজাজেৎ ও দ্বিতীয় মহম্মদ গ্ৰীক সাম্রাজ্য বিজিত করিয়াছিল, এ সকল কথা যেমন নিশ্চিত ঐতিহাসিক, বাব রাজেন্দ্রলাল মিত্রকর্তৃক আবিস্কৃত সেন-পাল-সম্পবাদ আমরা তেমনি নিশ্চিত ঐতিহাসিক মনে করি। সে কথাগালি এইঃ ঐতিহাসিকদিগের বিশ্বাস যে, আগে পালবংশীয়েরা বাঙ্গালার রাজা ছিলেন। তার পর সেনবংশীয়েরা বাঙ্গালার রাজা হন। ঠিক তাহা নহে। এককালে এক সময়েই পাল এবং সেনবংশীয়েরা রাজত্ব করিতেন, কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে। তার পর সেনবংশীয়েরা পালবংশীয়দিগের রাজ্যে আসিয়া তাঁহাদিগকে রাজ্যচু্যত করিলেন, উভয় রাজ্যের একেশ্বর হইলেন। সেনবংশীয়েরা পৰব বাঙ্গালায় সবণ গ্রামে রাজা ছিলেন। আর পালবংশীয়েরা মদ্গগিরিতে অর্থাৎ আধানিক মঙ্গেরে রাজা ছিলেন। এখনকার বাঙ্গালীরা গবৰ্ণমেণ্টের সিপাহি পলটনে প্রবেশ করিতে পায় না, কিন্তু বেহারীদিগের পক্ষে অবারিত দ্বার, এবং বেহারীরা এখনকার উৎকৃষ্ট সিপাহি মধ্যে গণ্য। অথচ আমরা রাজেন্দ্রবাবর আবিস্কৃত ঐতিহাসিক তত্ত্বে দেখিতে পাইতেছি, পািব্বাঞ্চলবাসী বাঙ্গালীরা বেহাের জয় করিয়াছিল। সেনবংশীয়েরা বাঙ্গালী রাজা হইয়াও বেহারের অধিকাংশের রাজা ছিলেন, ইহা ঐতিহাসিক কথা। সেনগণের অধিকার যে বারাণসী পৰ্য্যন্ত বিস্তােত হইয়াছিল, ইহারও ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। যে গগুবংশীয়দিগের মগধরাজ্য ভারতীয় সকল সাম্রাজ্য অপেক্ষা প্রত্যুপান্বিত ছিল, সেই মগধরােজ্য বাঙ্গালী কর্তৃকই বিজিত এবং অধিকৃত হইয়াছিল, বোধ হয়। কিন্তু সে আন্দাজি কথা না হয়। ছাড়িয়া দিই। মগধের অধীশ্বর চন্দ্রগপ্তের রাজসভায় বিখ্যাত গ্রীক ইতিহাসবেত্তা মেগাস্থিনিস, গাঙ্গারিডি Gangaridae নামে এক জনপদ বণনা করিয়া গিয়াছেন। ঐ জনপদের স্থাননিণয়ে তিনি এইরুপ লিখিয়াছেন যে, যেখানে গঙ্গা উত্তর হইতে দক্ষিণবাহিনী, সেইখানে গঙ্গা ঐ জনপদের পািব্ব সীমা। তাহা হইলেই এক্ষণে যে প্রদেশকে রাঢ়দেশ বলা যায়, বাঙ্গালার সেই দেশ ইহা দ্বারা বঝাইতেছে। বাস্তবিক অন্যধাবন করিয়া দেখিলে বঝা যাইবে যে, মেগাস্থিনিসের ঐ Grangaridae শব্দ গঙ্গারাঢ়ী শব্দের অপভ্রংশ মাত্র। গঙ্গার উপকলবত্তী রাষ্ট্ৰকে লোকের গঙ্গারাস্ট্র বলাই সম্ভব-সরিাষ্ট্র (সরোট), মধ্যরাষ্ট্ৰ (মোবাড়), গাজরাষ্ট্ৰ (গজরাট) প্রভৃতি দেশের নাম যেরপে রাষ্ট্ৰ শব্দ সংযোগে নিম্পন্ন হইয়াছে, ইহাও সেইরূপ দেখা যাইতেছে। গঙ্গারাষ্ট্র শব্দের অপভ্রংশে ক্রমে গঙ্গারাট বা গঙ্গারাঢ় হইবে। ক্রমে সংক্ষেপার্থ গঙ্গা শব্দ পরিত্যক্ত হইয়া রাট শব্দ বা রাঢ় শব্দ প্রচলিত থাকিবে। সংক্ষেপার্থ গঙ্গা শব্দ এরপ পরিত্যক্ত হইয়া থাকে। উদাহরণ, “গঙ্গাতীরস্থ” শব্দের পরিবত্তে অনেকে “তীরস্থ” বলে। ত্ৰিহাতের প্রাচীন সংস্কৃত নাম “তীরভুক্তি”। এস্থলেও গঙ্গাশব্দ পরিত্যাগ হইয়া কেবল “তীর” শব্দ আছে। গঙ্গারাঢ়ও সেই জন্য এখন “রাঢ়” শব্দে দাঁড়াইয়াছে। মেগাস্থিনিসের কথায় আমরা ইহাই বঝিতে পারি ষে, তৎকালে এই রাঢ়দেশ একটি পথগ্রাজ্য ছিল। মেগাস্থিনিস বলেন যে, এই রাজ্য। এরপ প্রতাপান্বিত ছিল যে, ইহা কখন কোন শত্র কর্তৃক পরাজিত হয় নাই এবং অন্যান্য রাজগণ গঙ্গারাঢ়ীদিগের হস্তি-সৈন্যের ভয়ে তাহাদিগকে আক্রমণ করিতেন না। তিনি ইহাও লিখিয়াছেন যে, স্বয়ং সৰ্ব্ববজয়ী আলেকজান্ডার গঙ্গাতীরে উপনীত হইয়া গঙ্গারাঢ়ীদিগের প্ৰতাপ শনিয়া, সেইখান হইতে প্রস্থান করিলেন। বাঙ্গালীর বলবীয্যের ভয়ে আলেকজান্ডার যদুদ্ধে ক্ষান্ত হইয়াছিলেন, এ কথা কেহ বিশ্বাস করন বা না করবেন, ইহার সাক্ষী স্বয়ং মেগাস্থিনিস। আমরা নািতন সাক্ষী শিখাইয়া আনিতেছি না। অনেকে বলবেন যে, কৈ, প্রবলপ্রতাপান্বিত গঙ্গারাঢ়ীদিগের নাম তখন আমরা কেহ পৰেব শনি নাই। যখন মাসমান প্রভৃতি ইংরেজ ইতিহাসবেত্তাদিগের কাছে আমরা সবদেশের ইতিহাস শিখি, তখন গঙ্গারাঢ়ীর নাম আমাদের শনিবার সম্ভাবনা কি ? কিন্তু গঙ্গারাঢ়ী নাম আমরা নতুন গড়িলাম না, তাহার ঐতিহাসিক প্রমাণ দিতেছি। যেখানে দেখিতেছি যে, যে প্রদেশবাসী দিগকে মেগাস্থিনিস (Gangaridae বলেন, সেই প্রদেশবাসী দিগকেই লোকে এখন রাঢ়ী বলে, আমাদের বিবেচনায় গঙ্গারাঢ়ী নামের ঐতিহাসিকতা সম্পবন্ধে ইহাই যথেস্ট প্রমাণ। কিন্তু আমরা কেবল সে প্রমাণের উপর নিভাির করিয়া এ নাম ব্যবহার করিতেছি না। অনেকে অবগত আছেন, মাকেজির সংগ্রহ (Mackenzie's Collection) নামে কতকগালি দলভি ভারতবষীয় পাস্তকের সংগ্ৰহ আছে। সেগলি মাদ্রাঙ্কিত হইয়া প্রচার হইবার সম্ভাবনা নাই এবং সকলের প্রাপ্যও নহে। অথচ তাহাতে মধ্যে মধ্যে বিচিত্র নাতন ঐতিহাসিক তত্ত্ব প্রাপ্ত 998