পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-বাঙ্গালার ইতিহাসের ভগ্নাংশ মসলমানেরা কখনই একচ্ছত্রাধীন করিতে পারেন নাই। মোগলেরা অনেক দীর করিয়াছিলেন, কিন্তু তাঁহারাও আধনিক বাঙ্গালার অধীশ্বর হইতে পারেন নাই। অতএব যে অর্থে গ্রীসের ইতিহাস আছে, রোমের ইতিহাস আছে, সে অৰ্থে বাঙ্গালার ইতিহাস নাই। যেমন আধনিক ফ্লোরেন্সের ইতিহাস লিখিলে বা মিলানের ইতিহাস লিখিলে বা নেপলসের ইতিহাস লিখিলে আধনিক ইতালির ইতিহাস লেখা হয় না, বাঙ্গালারও কতক তেমনি। কিন্তু ইতালি বলিয়া দেশ ছিল; বাঙ্গালা বলিয়া দেশ ছিল না। বাঙ্গালার ইতিহাস আরম্ভ মোগলের সময় হইতে। আমরা বাঙ্গালার ঐতিহাসিক ধ্যান এখন আর পরিস্ফাট না করিয়া, যাহা বলিতেছি বা বলিব, আগে তাহার প্রমাণ সংগ্ৰহ করিতে প্রবত্ত হইব। প্রথমে উত্তর পক্ষোব বাঙ্গালার কথা বলিব। দেখা যাউক, কবে এ অংশ বাঙ্গালাভুক্ত হইয়াছে, কবেই বা বাঙ্গালার সংস্পশে আসিয়াছে। যেমন এখন যাহাকে বাঙ্গালা বলি, আগে তাহা বাঙ্গালা ছিল না, তেমনি এখন যাহাকে আসাম বলি, তাহা আসাম ছিল না। অতি অলপকাল হইল, আহম নামে অনায্য জাতি আসিয়া ঐ দেশ জয় করিয়া বাস করাতে উহার নাম আসাম হইয়াছিল। সেখানে, যথায় এখন কামরূপ, তথায় অতি প্রাচীন কালে এক আয্যরাজ্য ছিল। তাহাকে প্ৰাগজ্যোতিষ বলিত। বোধ হয়, এই রাজ্য পৰবাগগুলোর অনাৰ্যভূমিমধ্যে একা আৰ্য জাতির প্রভা বিস্তার কারিত বলিয়া ইহার এই নাম। মহাভারতের যন্ধে প্ৰাগজ্যোতিষেশ্বর ভগদত্ত, দায্যোধনের সাহায্যে গিয়াছিলেন। বাঙ্গালার অধিবাসী, তাম্রলিপ্ত, পৌ"ড্র, মৎস্য প্রভৃতি সে যাদ্ধে উপস্থিত ছিল। তাহারা অনাৰ্য্যমধ্যে গণ্য হইয়াছে। বাঙ্গালা যে সময়ে অনাৰ্য্যভূমি, সে সময়ে আসাম যে আৰ্যভূমি হইবে, ইহা এক বিষম সমস্যা। কিন্তু তাহা অঘটনীয় নহে। মসলমানদিগের সময়ে ইংরেজীদিগের এক আন্ডা মালদ্রাজে, আর আড্ডা পিম্পলী ও কলিকাতায়, মধ্যবিত্তীর্ণ প্রদেশ সকলের সঙ্গে তাহাদের কোন সম্পবিন্ধ নাই। ইহার ইতিহাস আছে বলিয়া বঝিতে পারি। তেমনি প্রাগজ্যোতিষের আযাদিগের ইতিহাস থাকিলে, তাহাদিগের দরে গমনের কথাও বঝিতে পারিতাম। বোধ হয়, তাহারা প্রথমে বাঙ্গালায় আসিয়া বাঙ্গালার পশ্চিম ভাগেই বাস করিয়াছিল। তার পর আয্যেরা দক্ষিণাত্যজয়ে প্রবত্ত হইলে, সেখানকার অনাৰ্য্য জাতি সকল দারীকৃত হইয়া, ঠেলিয়া উত্তরপািব্বািমখে আসিয়া বাঙ্গালা দখল করিয়াছিল। তাহদেরই ঠেলাঠেলিতে অলপসংখ্যক আৰ্য্য ঔপনিবেশিকেরা সরিয়া সরিয়া ক্ৰমে ব্ৰহ্মপত্র পার হইয়া যাইতে বাধ্য হইয়াছিল। এক সময়ে এই কামরপ রাজ্য অতি বিস্তৃত হইয়াছিল। পর্বে করতোয়া ইহার সীমা ছিল; আধনিক আসাম, মণিপাের, জয়ন্ত্যা, কাছাড়, ময়মনসিংহ, শ্ৰীহট্ট, রঙ্গপাির, জলপাইগাড়ি ইহার অন্তগত ছিল। আইন আকবরীতে লেখে যে, ভগদত্তের বংশের ২৩ জন রাজা এখানে রাজত্ব করেন। যাহাই হউক, পাথনামা রাজার পন্ধেব কোন রাজার নামের নিন্দেশ পাওয়া যায় না। পথে রাজার রাজধানী তল-মানামে নদীতীরে, চাকলা ও বোদা পরগণা বৈকুণ্ঠপরের BB DDS DDB BDBDD BBD BDBD DDDD DBDB BDD BDB BD DDDuu দ্বারা পথে রাজা আক্রান্ত হয়েন। ফেলচ্ছের সপশের ভয়ে তিনি এক সরোবরের জলে অবগাহন করেন। তথায় নিমন্তজনে তাঁহার প্রাণ বিনন্ট হয়। তারপর পালবংশীয়ের রঙ্গপারে রাজা হয়েন। ইতিপক্ষোিব রঙ্গপার কামরাপ হইতে কিয়ৎকালজন্য পথক, রাজ্য হইয়াছিল। বোধ হয়, রঙ্গপারে পালবংশের প্রথম রাজা ধৰ্ম্মপাল। এই পালেরা ইউরোপের বাবে বংশের আর আসিয়ার তৈমিরবংশের ন্যায় নানা দেশে রাজা ছিলেন। গৌড়ে পাল রাজা, মৎস্যে পাল রাজা, রঙ্গপারে পাল রাজা, কামরূপে পাল রাজা ছিল। বোধ হয়, এই রাজবংশ অতিশয় প্রতাপশালী ছিল। ধৰ্ম্মপালের রাজধানীর ভগ্নাবশেষ, ডিমলার দক্ষিণে আজিও আছে। তাহার ক্রোশেক দারে, রাণী মীনাবতীর গড় ছিল। রাণী মীনাবতী ধৰ্ম্মপালের ভ্ৰাতৃজায়া। মীনাবতী অতি তেজস্বিনী ছিলেন-বড় দন্দান্ত প্ৰতাপ। গোপীচন্দ্ৰ নামে তাঁহার পত্র ছিল। মীনাবতী ধৰ্ম্মপালকে বলিলেন, “আমার পত্র রাজা হইবে, তুমি কে ?” ধৰ্ম্মপাল রাজ্য না দেওয়াতে মীনাবতী সৈন্য লইয়া তাঁহাকে আক্রমণ করিলেন, এবং যন্ধে তাঁহাকে পরাভূত করিয়া গোপীচন্দ্রকে সিংহাসনে স্থাপিত করলেন। কিন্তু গোপীচন্দ্ৰ নামমাত্র রাজা হইলেন, রাজমাতা তাঁহাকে রাজ্য করিতে দিবেন না, স্বয়ং রাজ্য 08:S