পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-বাঙ্গালীর উৎপত্তি বলিয়া একটি অনাৰ্য্যজাতি দেখিয়াছিলেন। কাঁধীদিগের মালিয়া বলিয়া একটি জাতি আছে * রাজমহলীর মাল পাহাড়িদিগের কথা পকেবই বলিয়াছি। পক্ষান্তরে আযাদিগের মধ্যে মল্ল শব্দ আছে-অনেকে বলেন, এই মালেরা আর্যািমল্ল। আষািমল্ল হইতে মালজাতির উৎপত্তি, না অনায্য মল্লগণ বাহন্যদ্ধে কুশলী বলিয়া আৰ্যভাষায় বাহযোদ্ধার নাম মল্প হইয়াছে ? মালেরা যে অনার্যজাতি হইতে উদ্ভূত হইয়াছে, তাহা এক প্রকার স্থির বলা যাইতে পারে। সাঁওতালদিগের পাহাড়মধ্যে ডিম নামে একটি অনাৰ্য্যজাতি আছে। তাহাদিগের হইতে বাঙ্গালার ডোমজাতির উৎপত্তি হইয়াছে, হন্টর সাহেব এমন অনামান করেন। ইহা সত্য বটে। যে, অন্যান্য নীচ হিন্দজাতির ন্যায় ডোমেরা ব্রাহ্মণদিগের পৌরোহিত্য গ্রহণ করে না। তাহাদিগের পথিক ধৰ্ম্মযাজক আছে। ঐ ধৰ্ম্মমযাজকদিগের নাম পন্ডিত। এই রােপ ডোমের পশিডত আমি স্বয়ং অনেক দেখিয়াছি। নেপালের নিকটে ডুমী নামে এক অনাৰ্য্যজাতি আজিও বাস করে $1 হণটির সাহেব দেখাইয়াছেন যে, অনেক অনাৰ্য্যজাতির নাম অনাৰ্য্যভাষায় মনষ্যবাচক শব্দবিশেষ হইতে হইয়াছে। হো শব্দ ইহার পকেব। উদাহরণ দেওয়া গিয়াছে। সাঁওতালী ভাষায় হাড় শব্দে মনষ্য। ইহা হইতে তিনি অনামান করেন যে, হাড়ি অনাৰ্য্যবংশ। পর্বে বলিয়াছি যে, ককেশীয় ও মোঙ্গলীয় ভিন্ন আরও অনেক মনষ্যজাতি আছে, তাহার মধ্যে কোন কোন জাতি সাবভাবতঃই অতিশয় কৃষ্ণবর্ণ। আফ্রিকার নিগ্লোরা ইহার উদাহরণ। কেবল রৌদ্রের উত্তাপে তাহারা এত কৃষ্ণবণ, এমত নহে; যেমন তপ্ত দেশে কাফ্রির বাস আছে, তেমনি তপ্ত দেশে গৌরবণ আয্য বা মোঙ্গলের বাস আছে। আমেরিকার যে প্রদেশে ইন্ডিয়ানদিগের বণ লোহিত, সেই প্রদেশেই সাক্সন বংশীয়দিগের বর্ণ গৌর; তিন শত বৎসরে কিছমাত্র কৃষ্ণতাপ্রাপ্ত হয় নাই। ভারতবর্ষে এক প্রদেশেই শ্যামবৰ্ণ আয্যেরা এবং মসীবণ অনায্যেরা একত্র বাস করিতেছে। রৌদ্রসন্তাপে কতক দরে কৃষ্ণতা জন্মিতে পারে বটে। ভারতীয় আৰ্যদের তাহা কিছ দীর জন্মিয়াছে সন্দেহ নাই। তাহদের মধ্যে কেহ গৌরী, কেহ শ্যামল, কিন্তু বিন্ধ্যপব্বতের নিকটবাসী কতকগলি অনাৰ্য্যজাতি একেবারে মসীকৃষ্ণ। বিষ্ণপেরাণে তােহাদিগের বণনা আছে। কথিত আছে যে, বেণ রাজার উরদেশ হইতে দগ্ধ কাঠের ন্যায় খব্বকায় আটাস্য এক পরষ জন্মে। এই বর্ণনায় মধ্যভারতের খব্বাকৃত আটাস্য কৃষ্ণকায় অনার্যাদিগকে পাওয়া যায়। ঐ পরিষ নিষাদ নামে সংজ্ঞাত হইয়াছে। ইহারই বংশে নিষাদাখ্য অনায্যজাতির উৎপত্তি।** হরিবংশে বেণের উপাখ্যানে ঐরােপ লিখিত হইয়া, ঐ পরিষকে নিষাদ ও ধীবর জাতির আদিপরষ বলিয়া বৰ্ণনা আছে। মন বলিয়াছেন যে, আয়োগবি অর্থাৎ শািন্দ্র হইতে বৈশ্যাতে উৎপাদিতা সত্রেীর গভে নিষাদের ঔরসে মাগব বা দাস জন্মে। আয্যাবত্তে তাহাদিগকে কৈবৰ্ত্ত বলে ॥$$ অমরকোষাভিধানে কৈবৰ্ত্তাদিগের নাম কৈবত্ত, দাস, ধীবর। পন্ধেবই দেখােন গিয়াছে যে, ঋগ্বেদ সমালোচনায় দাস নামে অনাৰ্য্যজাতি পাওয়া যায়। দাস, ধীবর, কৈবত্ত তিনই এক। যদি দাস ও ধীবর অনায্য হইল, তবে কৈবত্ত ও অনাৰ্য্যজাতি। এক্ষণে বাঙ্গালায় কৈবত্তের মধ্যে কতকগালি চাষা কৈবত্ত ; কতকগলি জেলে কৈবত্ত। পাবে সকলেই মৎস্যব্যবসায়ী ধীবর ছিল, সন্দেহ নাই। তাহাদিগের সংখ্যা বদ্ধি হইলে কতকগলি

  • Dalton, p. 293.

Non-Aryan Dictionary, p. 29. S Non-Aryan Dictionary, p. 29. | “কিং করোমীতি তান সৰ্ব্ববান বিপ্ৰান আহি সি চাতুরঃ। নিষীদোঁতি তমচন্তে নিষাদস্তেন সোহভবৎ ৷” * * “তেন দ্বারেণ নিৰ্ম্মফ্ৰান্তং তং পাপং তস্য ভূপতেঃ। নিষাদান্তে তথা যাতা বেণকলমিষসম্ভবঃ ৷” “নিষাদ বংশকৰ্ত্তাসেী বিভুব বদতাং বরঃ। ধীবরানসজিচ্চাপি বেণকলমষসম্ভবান ৷” $, $ “নিষাদো মাগবং সতে দাসং নৌকম্পমজীবিনং। কৈবত্ত মিতি যং প্রাহারাষ্যাকত্তানবাসিনঃ। ॥” মনসিংহিতা, দশম অধ্যায়, ৩৪ শ্লোক। 966