পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-ৰাজালা ভাষা না। প্রাচীন ভারতেও সংস্কৃতে ও প্রাকৃতে, আদৌ বোধ হয়, এইরূপ প্রভেদ ছিল, এবং সেই প্রভেদ হইতে আধনিক ভারতবষীয় ভাষাসকলের উৎপত্তি। বাঙ্গালার লিখিত এবং কথিত ভাষায় যতটা প্রভেদ দেখা যায়, অন্যত্র তত নহে। বলিতে গেলে, কিছ, কাল পাবে দাইটি পুথিকৃৎ ভাষা বাঙ্গালায় প্রচলিত ছিল। একটির নাম সাধভাষা; অপরটির নাম অপর ভাষা। একটি লিখিবার ভাষা, দ্বিতীয়টি কহিবার ভাষা। পািন্তকে প্রথম ভাষাটি ভিন্ন, দ্বিতীয়টির কোন চিহ্ন পাওয়া যাইত না। সাধভাষায় অপ্রচলিত সংস্কৃত শব্দসকল বাঙ্গালা ক্রিয়াপদের আদিম রাপের সঙ্গে সংযক্ত হইত। যে শব্দ আভাঙ্গা সংস্কৃত নহে, সাধভাষায় প্রবেশ করিবার তাহার কোন অধিকার ছিল না। লোকে বঝাঁক বা না বঝাঁক, আভাঙ্গা সংস্কৃত চাহি। অপর ভাষা সে দিকে না গিয়া, যাহা সকলের বোধগম্য, তাহাই ব্যবহার করে । গদ্য* গ্রন্থাদিতে সাধভাষা ভিন্ন আর কিছ ব্যবহার হইত না। তখন পান্তকপ্রণয়ন সংস্কৃত ব্যবসায়ীদিগের হাতে ছিল। অন্যের বোধ ছিল যে, যে সংস্কৃত না জানে, বাঙ্গালা গ্রন্থ প্রণয়নে তাহার কোন অধিকার নাই, সে বাঙ্গালা লিখিতে পারেই না। যাঁহারা ইংরেজিতে পশ্চিডত, তাঁহারা বাঙ্গালা লিখিতে পড়িতে না জানা গৌরবের মধ্যে গণ্য করতেন। সতরাং বাঙ্গালায় রচনা ফোঁটা-কাটা অনস্বরবাদীদিগের একচেটিয়া মহল ছিল। সংস্কৃতেই তাঁহাদিগের গৌরব। তাঁহারা ভাবিতেন, সংস্কৃতেই তবে বঝি বাঙ্গালা ভাষার গৌরব; যেমন গ্ৰাম্য বাঙ্গালী সত্ৰীলোক মনে করে যে, শোভা বাড়কে না বাড়ক, ওজনে ভারি সোনা অঙ্গে পরিলেই অলঙ্কার পরার গৌরব হইল, এই গ্রন্থকত্তারা তেমনি জানিতেন, ভাষা সন্দির হউক বা না হউক, দৰে বাধ্য সংস্কৃতবাহল্য থাকিলেই রচনার গৌরব হইল। এইরহপ সংস্কৃতিপ্রিয়তা এবং সংস্কৃতানকারিতা হেতু বাঙ্গালা সাহিত্য অত্যন্ত নীরস, শ্ৰীহীন, দািব্বল, এবং বাঙ্গালা সমাজে অপরিচিত হইয়া রহিল। টেকচাঁদ ঠাকুর প্রথমে এই বিষবক্ষের মলে কুঠারাঘাত করিলেন। তিনি ইংরেজিতে সশিক্ষিত। ইংরেজিতে প্রচলিত ভাষার মহিমা দেখিয়াছিলেন এবং বঝিয়াছিলেন। তিনি ভাবিলেন, বাঙ্গালার প্রচলিত ভাষাতেই বা কেন গদ্যগ্রন্থ রচিত হইবে না ? যে ভাষায় সকলে কথোপকথন করে, তিনি সেই ভাষায় “আলালের ঘরের দলিল” প্রণয়ন করিলেন। সেই দিন হইতে বাঙ্গালা ভাষার শ্ৰীবদ্ধি। সেই দিন হইতে শািম্পক তরর মলে জীবনবারি নিষিক্ত হইল। " সেই দিন হইতে সাধভাষা, এবং অপর ভাষা, দই প্রকার ভাষাতেই বাঙ্গালা গ্রন্থ প্রণয়ন হইতে লাগিল, ইহা দেখিয়া সংস্কৃতব্যবসায়ীরা জবালাতন হইয়া উঠিলেন; অপর ভাষা, তাঁহাদিগের বড় ঘণ্য। মদ্য, মরগী, এবং টেকচাঁদী বাঙ্গালা এককালে প্রচলিত হইয়া ভট্টাচাৰ্য্যগোল্ঠীকে আকুল করিয়া তুলিল। এক্ষণে বাঙ্গালা ভাষার সমালোচকেরা দই সম্প্রদায়ে বিভক্ত হইয়াছেন। এক দল খাঁটি সংস্কৃতবাদী-যে গ্রন্থে সংস্কৃতমালক শব্দ ভিন্ন অন্য শব্দ ব্যবহার হয়, তাহা তাঁহাদের বিবেচনায় ঘণার যোগ্য। অপর সম্প্রদায় বলেন, তোমাদের ও কচকাঁচ বাঙ্গালা নহে। উহা আমরা কোন গ্রন্থে ব্যবহার করিতে দিব না। যে ভাষা বাঙ্গালা সমাজে তাহাই বাঙ্গালা ভাষা-তােহাঁই গ্রন্থাদির ব্যবহারের যোগ্য। অধিকাংশ সশিক্ষিত ব্যক্তি এক্ষণে এই সম্প্রদায়ভুক্ত। আমরা উভয় সম্প্রদায়ের এক এক মািখপাত্রের উক্তি এই প্রবন্ধে সমালোচিত করিয়া স্থলে বিষয়ের মীমাংসা করিতে চেন্টা করিব। সংস্কৃতবাদী সম্প্রদায়ের মািখপাত্ৰসবরােপ আমরা রামগতি ন্যায়রত্ন মহাশয়কে গ্রহণ করিতেছি ।

  • পদ্য সম্পবন্ধে ভিন্ন রীতি। আদৌ বাঙ্গালা কাব্যে কথিত ভাষাই অধিক পরিমাণে ব্যবহার হইত। —এখনও হইতেছে। বোধ হয়, আজি কালি সংস্কৃত শব্দ বাঙ্গালা পদ্যে পকেবাপেক্ষা অধিক পরিমাণে প্রবেশ করিতেছে ; চন্ডীদাসের গীত এবং ব্ৰজাঙ্গনা কাব্য, অথবা কৃত্তিবাসি রামায়ণ এবং বন্দ্রসংহার তুলনা করিয়া দেখিলেই বঝিতে পারা যাইবে। এ সম্বন্ধে যাহা লিখিত হইল, তাহা কেবল বাঙ্গালা গদ্য সম্পবন্ধেই বত্তে। যাঁহারা সাহিত্যের ফলাফল অন্যাসন্ধান করিয়াছেন, তাঁহারা জানেন যে, পদাপেক্ষা গদ্য শ্রেষ্ঠ, এবং সভ্যতার উন্নতি পক্ষে পদ্যাপেক্ষা গদ্যই কাৰ্য্যকারী। অতএব পদ্যের রীতি ভিজ্ঞৰ इझेनe, qरे धबद्दकन्द्र ८ळालन कर्णभण ना।
  • ミーミ8 KON