পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बस्किम ब्रध्नावणी ইহাই আমাদের বিবেচনায় বাঙ্গালা রচনার উৎকৃষ্ট রীতি। নব্য ও প্রাচীন উভয় সম্প্রদায়ের শবৈদগ্ধৰ্য্যে পাল্টা এবং সাহিত্যালঙ্কারে বিভূষিতা হইবে। মনষ্যেত্ব কি ?* মনকেষ্যজন্ম গ্রহণ করিয়া কি করিতে হইবে, আজিও মনষ্যে তাহা বঝিতে পারে নাই। অনেক লোক আছেন, তাঁহারা জগতে ধৰ্ম্মমাত্মা রলিয়া আত্মপরিচয় দেন; তাঁহারা মাখে বলিয়া থাকেন যে, পরকালের জন্য পণ্যসঞ্চয়ই ইহজন্মে মনষ্যের উদ্দেশ্য। কিন্তু অধিকাংশ লোকই, বাক্যে না হউক, কায্যে এ কথা মানে না; অনেক লোক পরকালের অস্তিত্বই সর্বীকার করে না। সব্বজনস্বীকৃত হইলেও, পণ্য কি, সে বিষয়ে বিশেষ মতভেদ। এই বঙ্গদেশেই এক সম্প্রদায়ের পরকাল সব্ববাদিসক্ষমত, এবং পরকালের জন্য পণ্যসঞ্চয় ইহলোকের একমাত্র উদ্দেশ্য বলিয়া মত-মদ্যপান পরীকালের ঘোর বিপদের কারণ ; আর এক সম্প্রদায়ের মত-মদ্যপান পয়কালের জন্য পরম কাৰ্য্য। অথচ উভয় সম্প্রদায়ই বাঙ্গালী এবং উভয় সম্প্রদােয়ই হিন্দ। যদি সত্য সত্যই পরকালের জন্য পণ্যসঞ্চয় মনষ্যেজন্মের প্রধান কাৰ্য্য হয়, তবে সে পণ্যই বা কি, কি প্রকারে তাহা অজিত হইতে পারে, তাহার স্থিরতা কিছই এ পয্যন্ত হয় নাই। মনে কর, তাহা স্থির হইয়াছে; মনে কর, ব্ৰাহ্মণে ভক্তি, গঙ্গান্নান, তুলসীর মালা ধারণ, এবং হরিনামসঙ্কীত্তন ইত্যাদি পণ্যকৰ্ম্ম । ইহাই মনষ্যজীবনের উদ্দেশ্য। অথবা মনে কর, রবিবারে। কাৰ্য্যত্যাগ, গির জায় বসিয়া নয়ন নিমীলন, এবং খীস্টধৰ্ম্ম ভিন্ন ধৰ্ম্মান্তরে বিদ্বেষ, ইহাই পণ্যকৰ্ম্ম । যাহা হউক, একটা কিছ, আর কিছ হউক না হউক, দান। দয়া সত্যনিষ্ঠা প্রভৃতি পণ্যকৰ্ম্ম বলিয়া সব্বজনস্বীকৃত। কিন্তু তাই বলিয়া, ইহা দেখা যায় না যে, দান। দয়া সত্যনিৰ্ম্মঠা প্রভৃতিকে অধিক লোক জীবনের উদ্দেশ্য বলিয়া অভ্যস্ত এবং সাধিত করে। অতএব প্রশ্ন দিনের উদ্দেশ্য, তাহা সৰ্ব্ববাদস্বীকৃত নহে; যেখানে স্বীকৃত, সেখানে সে বিশ্বাস a বাস্তবিক জীবনের উদ্দেশ্য কি, এ তত্ত্বের প্রকৃত মীমাংসা লইয়া মনষ্যলোকে আজিও বড় গোল আছে। লক্ষ লক্ষ বৎসর পকেব, অনন্ত সমদ্রের অতলঙ্গপাশ জলমধ্যে যে আণবিীক্ষণিক জীব বাস করিত, তাহার দেহতত্ত্ব লইয়া মনষ্য বিশেষ ব্যস্ত-আপনি এ সংসারে আসিয়া কি করবে, তাহা সম্যক প্রকারে স্থিরীকরণে তােদশ চেণ্টিত নহে। যে প্রকার হউক, আপনার উদরপত্তি, এবং অপরাপর বাহেন্দ্ৰিয়সকল চরিতাৰ্থ করিয়া, আত্মীয় সর্বজনেরও উদরপত্তি সংসাধিত করিতে পারিলেই অনেকে মনষ্যজন্ম সফল বলিয়া বোধ করেন। তাহার উপর কোন প্রকারে অন্যের উপর প্রাধান্যলাভ উদ্দেশ্য। উদরপত্তির পর, ধনে হউক বা অন্য প্রকারে হউক, লোকমধ্যে যথাসাধ্য প্রাধান্য লাভ করাকে মনষ্যগণ আপনাদিগের জীবনের উদ্দেশ্য বিবেচনা করিয়া কাৰ্য্য করে। এই প্রাধান্যলাভের উপায়, লোকের বিবেচনায় প্রধানতঃ ধন, তৎপরে রাজপদ ও যশঃ । অতএব ধন, পদ ও যশঃ মনষ্যেজীবনের উদ্দেশ্য বলিয়া মাখে স্বীকৃত হউক বা না হউক, কাৰ্য্যতঃ মনািষ্যলোকে সব্ববাদিসক্ষমত। এই তিনটির সমবায়, সমাজে সম্পদ বলিয়া পরিচিত। তিনটির একত্রীকরণ দলভ, অতএব দই একটি, বিশেষতঃ ধন থাকিলেই সম্পদ বিত্তমান বলিয়া স্বীকৃত হইয়া থাকে। এই সম্পদাকাঙক্ষাই সমাজমধ্যে wে-সম-শ্ৰত্নের উদ্দেশ্যস্বরপ অগ্রবত্তী, এবং ইহাই সমাজের ঘোরতর অনিন্টের কারণ। সমাজের উন্নতির গতি যে এত মন্দ, তাহার প্রধান কারণই এই যে, বাহ্য সম্পদ মনষ্যের জীবনের উদ্দেশ্যপেথরািপ হইয়া দাঁড়াইয়াছে। কেবল সাধারণ মনষ্যদিগের কাছে নহে, ইউরোপীয় প্রধান পণ্ডিত এবং রাজপরিবগণের কাছেও বটে। কদাচিৎ কখনও এমন কেহ জন্মগ্রহণ করেন যে, তিনি সম্পদকে মনয্যেজীবনের উদ্দেশ্য

  • বঙ্গদর্শন, ১২৮৪), আশ্বিন।

স্বীকার করি, কিয়ৎপরিমাণে ধনাকাঙ্ক্ষা সমাজেয় মঙ্গলকর। ধনের আকাঙ্ক্ষা মাত্র অমঙ্গলজনক, এ কথা বলি না, ধন মনীষাজীবনের উদ্দেশ্য হওয়াই অমঙ্গলকর। 9A.8