পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. . . " 勒 বঙ্কিম রচনাবলী সৌদামিনী জমীদারের স্ত্রী, কুমদিনী পাট কাটে। রামের মুস্তিকের অপেক্ষা যদর মস্তিত্বক দশ আউন্স। ওজনে ভারি, সতরাং যদি সংসারে মান্য, রাম ঘাণিত। * অতএব বৈষম্য সাংসারিক নিয়ম। জগতের সকল পদার্থেই বৈষম্য। মনষ্যে মনষ্যে প্রকৃত বৈষম্য আছে। যেমন প্রকৃত বৈষম্য আছে-প্রকৃত বৈষম্য অর্থাৎ যে বৈষম্য প্রাকৃতিক নিয়মানরাদ্ধ,-তেমনি অপ্রকৃত বৈষম্য আছে। ব্ৰাহ্মণ শব্দে অপ্রাকৃত বৈষম্য। ব্ৰাহ্মণবধে গর পাপ-শতদ্রবন্ধে লঘৰ পাপ; ইহা প্রাকৃতিক নিয়মানকৃত নহে। ব্ৰাহ্মণ অবধ্য-শতদ্র বধ্য কেন ? শব্দই দাতা, ব্রাহ্মণই কেবল গহীতা কেন ? তৎপরিবত্তে যাহার দিবার শক্তি আছে, সেই দাতা, যাহার প্রয়োজন, সেই গহীতা, এ বিধি হয় নাই কেন ? দেশী বিলাতীর মধ্যে সেইরােপ আর একটি অপ্রাকৃত বৈষম্য। কিন্তু সে কথার অধিক আন্দোলন করিতে পারি না। সব্বাপেক্ষা অর্থগত বৈষম্য গরতর। তাহার ফলে কোথাও কোথাও দাই একজন লোক টাকার খরচ খাজিয়া পায়েন না-কিন্তু লক্ষ লোক অন্নাভাবে উৎকট রোগগ্ৰস্ত হইতেছে! সমাজের উন্নতিরোধ বা অবনতির যে সকল কারণ আছে, অপ্রাকৃতিক বৈষম্যের আধিক্যই তাহার প্রধান। ভারতবর্ষের যে এতদিন হইতে এত দম্পদশা, সামাজিক বৈষম্যের আধিক্যই তাহার বিশিলট কারণ। ভারতবর্ষেই যে বৈষম্যের আধিক্য ঘটিয়াছে, এমত নহে। এই সংসার বৈষম্যময়, সকল দেশই বৈষম্যজালে। আচ্ছন্ন। উন্নতিশীল সমাজে, সামাজিকেরা পরস্পরে সংঘােট হইয়া সেই বৈষম্যকে অপনীত করিয়াছেন। সেই সকল রাজ্যের শ্ৰীবদ্ধি হইয়াছে। রোম ইহার প্রধান উদাহরণ। রোমরাজ্যের প্রথমকালিক বৈষম্য-পেত্রিষীয় ও প্লিবীয়দিগের সম্প্রদায় ভেদ--তাহা এক প্রকার সামাজিক সামঞ্জস্যে লয় প্রাপ্ত হইয়াছিল। তদ্রাজ্যের যে পশ্চাৎকালিক বৈষম্যনাগরিকত্ব এবং অনাগরিকত্ব; তাহাও শাসনকর্তৃপক্ষের অলৌকিক রাজনীতিদক্ষতার গণে অপনীত হইয়াছিল। সতরাং রোম পথিবীশ্বরী হইয়াছিল। অন্যত্র এরাপ ঘটে নাই। আমেরিকার চিরদাসত্বের উচ্ছেদ জন্য সেদিন ঘোরতর আভ্যন্তরিক সমর হইয়া গেল-অস্ত্রাঘাতে ক্ষতচিকিৎসার ন্যায় সামাজিক অনিমেটর দ্বারা সামাজিক ইন্টসাধন করিতে হইল। এই চিকিৎসার বড় ডাক্তার দাঁতো এবং রোবস্যপীর। বৈষম্যের পরিবত্তে সাম্য সংস্থাপনই প্রথম ও দ্বিতীয় ফরাসিস বিপ্লবের উদ্দেশ্য। কিন্তু সৰস্বত্র এই কঠোর চিকিৎসার প্রয়োজন হয় নাই। অধিকাংশ দেশেই উপদেশটার উপদেশেই সাম্য আদত এবং সংস্থাপিত হইয়াছে। অস্ত্ৰবল অপেক্ষা বাক্যবল গরতরসমর্যাপেক্ষা শিক্ষা অধিকতর ফলোপদায়িনী । খ্রীস্টধৰ্ম্মম এবং বৌদ্ধধম বাক্যে প্রচারিত হয়ইসলামের ধৰ্ম্মম: শস্ত্রসাহায্যে প্রচারিত হইয়াছে। কিন্তু পথিবীতে মসলমান অলপসংখ্যকবৌদ্ধ ও খ্রীস্টীয়ানই অধিক । পথিবীতে তিনবার আশ্চৰ্য্য ঘটনা ঘটিয়াছে। বহকালান্তর, তিন দেশে তিন জন মহাশদ্ধাত্মা জন্মগ্রহণ করিয়া ভূমন্ডলে মঙ্গলময় এক মহামন্ত্র প্রচার করিয়াছেন। সেই মহামন্ত্রের স্থলে মন্ম, “মনােষ্য সকলেই সমান”। এই সবগীয় মহাপবিত্র বাক্য ভূমন্ডলে প্রচার করিয়া, তাঁহারা জগতে সভ্যতা এবং উন্নতির বীজ বপন করিয়াছিলেন। যখনই মনষ্যেজাতি, দক্ষদর্শশাপন্ন, অবনতির পথার দৃঢ় হইয়াছে, তখনই এক মহাত্মা মহাশব্দে কহিয়াছেন, “তোমরা সকলেই সমান-পরস্পর সমান ব্যবহার করা”। তখনই দম্পদশা ঘৰচিয়া সাদশা হইয়াছে, অবনতি ঘৰচিয়া উন্নতি হইয়াছে। প্রথম, শাক্যসিংহ বদ্ধদেব । যখন বৈদিকধৰ্ম্ম সঞ্জাত বৈষম্যে ভারতবর্ষ পীড়িত, তখন ইনি জন্মগ্রহণ করিয়া ভারতবষের উদ্ধার করিয়াছিলেন। পথিবীতে যত প্রকার সামাজিক বৈষম্যের উৎপত্তি হইয়াছে, ভারতবর্ষের পকেবােকালিক বািণবৈষম্যের ন্যায়। গরতের বৈষম্য কখন কোন সমাজে প্রচলিত হয় নাই। অন্যাবশ্য অকস্থানসারে বধ্য-কিন্তু ব্ৰাহ্মণ শত অপরাধেও অবধ্য। ব্ৰাহ্মণে তোমার সর্বপ্রকার অনিন্ট কিরক। তুমি ব্ৰাহ্মণের কোন প্রকার অনিস্ট করিতে পরিবে না। তোমরা ব্ৰাহ্মণের চরণে লটাইয়া তাঁহার চরণরেণ শিরোদেশে গ্রহণ করা-কিন্তু শব্দ অপশ্য। শদ্রপলেট জল পৰ্যন্ত অব্যবহায্য। এ পথিবীর কোন সখে শািন্দ্র অধিকারী নহে, কেবল নীচবত্তি তাহার অবলম্বনীয়। জীবনের জীবন যে বিদ্য, তাহাতে তাহার অধিকার নাই। সে Obť: