পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্য সামগ্রী আবশ্যক বোধ হয়। আকাঙ্ক্ষায় চেস্টা, চেন্টায় সফলতা জন্মে। সতরাং সািখ এবং মঙ্গল বদ্ধি হইতে থাকে। অতএব সখি স্বচ্ছন্দতার আকাঙ্ক্ষার বদ্ধি সভ্যতাবদ্ধির পক্ষে নিতান্ত প্রয়োজনীয়। বাহ্য সখের আকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্ত হইয়া আসিলে জ্ঞানের আকাঙক্ষা, সৌন্দয্যের আকাঙ্ক্ষা, তৎসঙ্গে কাব্যসাহিত্যাদির প্রিয়তা এবং নানাবিধ বিদ্যার উৎপত্তি হয়। যখন লোকের সংখলালসার অভাব থাকে, তখন পরিশ্রমের প্রবত্তি দৰবলা হয়। উৎকৰ্ষলাভের ইচ্ছাও থাকে না, তৎপ্রতি যত্নও হয় না। তন্নিবন্ধন যে দেশে খাদ্য সালভ, সে দেশের প্রজাবদ্ধির নিবারণকারিণী প্রবত্তি সকলের অভাব হয়। অতএব যে “সন্তোষ” কবিদিগের অশেষ প্রশংসার স্থান, তাহা সমাজোন্নতির নিতান্ত আনিলন্টকারক; কবিগীতা এই প্রবত্তি সামাজিক জীবনের श्रुळाश्व् । লোকের অনিন্টপণে সন্তুষ্টভােব, ভারতবর্ষে প্রাকৃতিক নিয়মগণে সহজেই ঘটিল। এ দেশে, তাপের কারণ অধিক কাল ধরিয়া এককালীন পরিশ্রম অসহ্য। তৎকারণে পরিশ্রমে অনিচ্ছা! অভ্যাসগত হয়। সেই অভ্যাসের আরও কারণ আছে। উষ্ণদেশে শরীরমধ্যে অধিক তাপের সমস্তাবের আবশ্যক হয় না বলিয়া তথাকার লোকে যে মািগয়াদিতে তােদশ রত হয় না, ইহা পব্বে কথিত হইয়াছে। বন্য পশ্য হনন করিয়া খাইতে হইলে পরিশ্রম, সাহস, বল এবং কাৰ্য্যতৎপরতা অভ্যন্ত হয়। ইউরোপীয় সভ্যতার একটি মল, পািব্বকালীন তাদক অভ্যাস। অতএব একে শ্রমের অনাবশ্যকতা, তাহাতে শ্রমে অনিচ্ছ, ইহার পরিণাম আলস্য এবং অনৎসাহ । অভ্যাসগত আলস্য এবং অনৎসাহেরই নামান্তর সন্তোষ। অতএব ভারতীয় প্রজার একবার দদশা হইলে, সেই দশাতেই তাহারা সন্তুষ্ট রহিল। উদ্যমাভাবে আর উন্নতি হইল না। সপ্ত সিংহের মখে আহায্য পশি স্বতঃপ্রবেশ করে না। ভারতবর্ষের পরাবত্তালোচনায় সন্তোষ সম্পবন্ধে অনেকগালিন বিচিত্র তত্ত্ব পাওয়া যায়। ঐহিক সখে নিসপািহতা, হিন্দধাম এবং বৌদ্ধধৰ্ম্মে উভয় কত্ত্বক অনভিজ্ঞাত। কি ব্ৰাহ্মণ, কি বৌদ্ধ, কি সমাত্তি, কি দার্শনিক, সকলেই প্ৰাণপণে ভারতবাসী দিগকে শিখাইয়াছেন যে, ঐহিক সখি অনাদরণীয়। ইউরোপেও ধৰ্ম্মযাজকগণকত্ত্বক ঐহিক সমুখে অনাদরাতত্ত্ব প্রচারিত হইয়াছিল। ইউরোপে যে রোমীয় সভ্যতা লোপের পর সহস্ৰ বৎসর মনষ্যের ঐহিক অবস্থা অনান্নত ছিল, এইরপ শিক্ষাই তাহার কারণ। কিন্তু যখন ইতালিতে প্রাচীন গ্ৰীক সাহিত্য গ্রীক দর্শনের পােনর দায় হইল, তখন তৎপ্রদত্ত শিক্ষানিবন্ধন ঐহিকে বিরক্তি ইউরোপে ক্রমে মন্দীভূত হইল। সঙ্গে সঙ্গে সভ্যতারও বদ্ধি হইল। ইউরোপে এ প্রবত্তি বদ্ধমতল হইতে পারে নাই। ভারতবর্ষে ইহা মনষ্যের দ্বিতীয় সর্বভাব সবরপে পরিণত হইয়াছে। যে ভূমি যে বক্ষের উপযক্তি, সেইখানেই তাহা বদ্ধমল হয়। এ দেশের ধৰ্ম্মশাস্ত্র কর্তৃক যে নিবত্তিজনক শিক্ষা প্রচারিত হইল, দেশের অবস্থাই তাহার মােল; আবার সেই ধৰ্ম্মশাস্ত্রের প্রদত্ত শিক্ষায় প্রাকৃতিক অবস্থা জন্য নিবত্তি আরও দঢ়ীভূত হইল। এতনিবন্ধন ইউরোপে এবং ভারতবর্ষে ভিন্ন ভিন্ন ফল ফলিল। সঞ্জোখিত ইউরোপীয় প্ৰজাগণ, ঐহিক সখে রত হইয়া সামাজিক বৈষম্য দারীকরণে চেণ্টিত হইল। ইহার ফল সখি, সমদ্ধি, সভ্যতাবদ্ধি। ভারতবষীয় প্ৰজাগণ নিদ্রিত রহিল; সামাজিক বৈষম্য ধারাবাহিক হইয়া চলিল। ইহার ফলে অবনতি । ৩। শ্রমোপজীবীদিগের দরবস্থা যে চিরস্থায়ী হয়, কেবল তাহাঁই নহে। তন্নিবন্ধন সমাজের অন্য সম্প্রদায়ের লোকের গৌরবের ধবংস হয়। যেমন এক ভান্ড দন্ধে এক বিন্দ, অম্প্রল পড়িলে, সকল দগ্ধ দধি হয়, তেমনি সমাজের এক অধঃশ্রেণীর দন্দশায় সকল শ্রেণীরই দন্দশা জন্মে। (ক) উপজীবিকানসারে প্রাচীন আয্যেরা চারি শ্রেণীতে বিভক্ত হইয়াছিলেন। ব্ৰাহ্মণ, ক্ষত্ৰিয়, বৈশ্য, শািন্দ্র। বৈষম্যের উপর বৈষম্য। শািন্ধ অধস্তন শ্রেণী; তাহাদিগেরই দম্পদশার কথা এতক্ষণ বলতেছিলাম। বৈশ্য বাণিজ্যব্যবসায়ী। বাণিজ্য, শ্ৰমোপজীবীর শ্রমোৎপন্ন দ্রব্যের প্রাচুয্যের উপর নিভাির করে। যে দেশে দেশের আবশ্যকীয় সামগ্রীর অতিরিক্ত উৎপন্ন না হয়, সে দেশে বাণিজ্যের উন্নতি হয় না। বাণিজ্যের উন্নতি না হইলে, বাণিজ্যব্যবসায়ীদিগের সৌন্ঠবের হানি। লোকের অভাববদ্ধি, বাণিজ্যের মলে। যদি আমাদিগের অন্য দেশোৎপন্ন সামগ্ৰী গ্রহণেচ্ছা না থাকে, তবে কেহ অন্য দেশেৎপন্ন সামগ্ৰী আমাদের কাছে আনিয়া বিক্রয় Ôእናጳ