পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बच्क्भि ब्राश्नावणौं নিন্মবাচন করাই নিম্প্রয়োজন। দেখা যাউক, এরপ নিয়মের স্বভাবসঙ্গত অন্য কোন মল আছে কি না। ইহা কথিত হইতে পারে যে, সত্ৰী সবামীর ধানে স্বামীর ন্যায়ই অধিকারিণী; এবং তিনি সর্বামিগাহে গহিণী, স্বামীর ধনৈশ্বয্যে কত্রেী, অতএব তাঁহার আর পৈতৃক ধনে অধিকারিণী হইবার প্রয়োজন নাই। যদি ইহাই এই ব্যবস্থানীতির মলস্বরূপ হয়, তাহা হইলে জিজ্ঞাস্য হইতে পারে যে, বিধবা কন্যা বিষয়াধিকারিণী হয় না কেন ? যে কন্যা দরিদ্রে সমাপিত হইয়াছে, সে উত্তরাধিকারিণী হয় না কেন ? কিন্তু আমরা এ সকল ক্ষদ্রতর আপত্তি উপস্থিত করিতে ইচ্ছক নাহি। সত্ৰীকে স্বামী বা পত্র বা এবিবিধ কোন পরিষের আশ্রিতা হইয়াই ধনভাগিনী হইতে হইবে, ইহাতেই আমাদের আপত্তি। অন্যের ধানে নাহিলে সত্ৰীজাতি ধনাধিকারিণী হইতে পরিবে না-পরের দাসী হইয়া ধনী হইবে-নচেৎ ধনী হইবে না, ইহাতেই আপত্তি। পতির পদসেবা কর, পতি দন্ট হউক, কুভাষী, কদাচারী হউক, সকল সহ্য করাঅবাধ্য, দমখে, কৃতঘর, পাপাত্মা পত্রের বাধ্য হইয়া থাক-নচেৎ ধনের সঙ্গে সত্ৰীজাতির কোন সম্পবিন্ধ নাই। পতি পত্র তাড়াইয়া দিল তা সব ঘচিল। সবাতন্ত্র্য অবলম্বন করিবার উপায় নাই —সহিষ্ণতা ভিন্ন অন্য গতিই নাই। এদিকে পরিষ, সব্বাধিকারী-স্ত্রীর ধনও তাঁর ধন। ইচ্ছা করিলেই স্ত্রীকে সব্বস্বচু্যত করিতে পারেন। তাঁহার সবাতন্ত্র্য অবলম্বনে কোন বাধা নাই। এ বৈষম্য গরতর, ন্যায়বিরাদ্ধ, এবং নীতিবিরুদ্ধে। অনেকে বলিবেন, এ অতি উত্তম ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থাপ্রভাবে সত্ৰী সবামীর বশবত্তিানী থাকে বটে, পরষাকৃত ব্যবস্থাবলির উদ্দেশ্যই তাই; যত প্রকার বন্ধন আছে, সকল প্রকার বন্ধনে সত্ৰীগণের হস্তপদ বাঁধিয়া পরিষপদমলে স্থাপিত করা-পরিষগণ স্বেচ্ছাক্রমে পদাঘাত করােক, অধম নারীগণ বাঙনিম্পত্তি করিতে না পারে। জিজ্ঞাসা করি, সত্ৰীগণ পরিষের বশবৰ্ত্তিনী হয়, ইহা বড় বাঞ্ছনীয়; পরষগণ সত্ৰীজাতির বশবত্তীর্ণ হয়, ইহা বাঞ্ছনীয় নহে কেন ? যত বন্ধন আছে, সকল বন্ধনে সত্ৰীগণকে বধিয়াছ, পরষজাতির জন্য একটি বন্ধনও নাই কেন ? সত্ৰীগণ কি পরিষাপেক্ষা অধিকতর সর্বভাবতঃ দশচরিত্র ? না রক্তজটি পরিষের হাতে বলিয়া, মুড়ি এত দৃঢ় বন্ধন ? ইহা যদি অধৰ্ম্মম না হয়, তবে অধৰ্ম্ম কাহাকে বলে, বলিতে N হিন্দীশাস্ত্রানসারে কদাচিৎ সত্ৰী বিষয়াধিকারিণী হয়, যথা-পাতি আপত্রিক মরিলে। এইটকু হিন্দশাস্ত্রের গৌরব। এইরপ বিধি দই একটা থাকাতেই আমরা প্রাচীন আৰ্যব্যবস্থশাস্ত্রকে কোন কোন অংশে আধনিক সভ্য ইউরোপীয় ব্যবস্থশাস্ত্রপেক্ষাও উৎকৃষ্ট বলিয়া গৌরব করি। কিন্তু এটকু কেবল মন্দের ভাল মাত্র। সত্ৰী বিষয়াধিকারিণী বটে, কিন্তু দানবিক্রয়াদির অধিকারিণী নহে। এ অধিকার কতটকু? আপনার ভরণপোষণ মাত্ৰ পাইবেন, আর তাঁহার জীবনকালমধ্যে আর কাহাকেও কিছ দিবেন না, এই পৰ্য্যন্ত তাঁহার অধিকার। পাপাত্মা পত্র সব্বস্ব বিক্রয় করিয়া ইন্দ্ৰিয়সখি ভোগ করােক, তাহাতে শাস্ত্রের আপত্তি নাই, কিন্তু মহারাণী সবৰ্ণময়ীর ন্যায় ধৰ্ম্মমনিষ্ঠা সত্ৰী কাহারও প্রাণরক্ষার্থেও এক বিঘা হস্তান্তর করিতে সমর্থ নহেন। এ বৈষম্য কেন ? তাহার উত্তরেরও অভাব নাই-সত্ৰীগণ অলপবদ্ধ, অস্থিরমতি, বিষয়ারক্ষণে অশক্ত। হঠাৎ সব্বস্ব হস্তান্তর করিবে, উত্তরাধিকারীর ক্ষতি হইবে, এ জন্য তাহারা বিষয় হস্তান্তর করিতে অশক্ত হওয়াই উচিত। আমরা এ কথা স্বীকার করি না। সন্ত্রীগণ বদ্ধি, স্থৈৰ্য্য, চতুরতায় পরিষাপেক্ষা কোন অংশে নতুন নহে। বিষয়রক্ষার জন্য যে বৈষয়িক শিক্ষা, তাহাতে তাহারা নিকৃষ্ট বটে, কিন্তু সে পরিষেরই দোষ। তোমরা তাহাদিগকে পারমধ্যে আবদ্ধ রাখিয়া, বিষয়কক্ষম হইতে নিলিপ্ত রাখ, সতরাং তাহাদিগের বৈষয়িক শিক্ষা হয় না। আগে বৈষয়িক ব্যাপারে লিপ্ত হইতে দাও, পরে বৈষয়িক শিক্ষার প্রত্যাশা করিও। আগে মাড়ি রাখিয়া পরে পাঁটা কাটা যায় না। পরিষের অপরাধে সন্ত্রী অশিক্ষিতা-কিন্তু সেই অপরাধের দশড সত্ৰীগণের উপরেই বক্তাইতেছে। বিচার মন্দ নয়! সত্ৰীগণের বিষয়াধিকার সম্পবন্ধে একটি কৌতুকাবহ ব্যাপার মনে পড়িল। কয় বৎসর পকেব হাইকোটে একটি মোকদ্দমা হইয়া গিয়াছে। বিচাৰ্য্য বিষয় এই-অসতী সন্ত্রী, বিষয়াধিকারিণী হইতে পারে কি না। বিচারক অনািমতি করিলেন, পারে। শনিয়া দেশে হলস্থল পড়িয়া গেল। যা! এতকালে হিন্দসন্ত্রীর সতীত্বধৰ্ম্ম লগুপ্ত হইল! আর কেহ সতীত্বধৰ্ম্মম রক্ষা করিবে: না! বাঙ্গালি সমাজ পয়সা খরচ করিতে চাহে না-রাজাজ্ঞা নাহিলে চাঁদায় সহি করে না, কিন্তু 8O8