পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बभ्कत्र ब्रष्नाबव्ी প্রক্ষিপ্ত রচনা শীঘ্ন ধরা পড়ে। কেন না, প্রাচীন একখানা কপির দ্বারা অন্য কপির শব্দ্ধাশদ্ধি নিশ্চিত করা যায়। প্রাচীন ভারতবর্ষে গ্রন্থ সকল প্রণীত হইয়া মাখে মাখে প্রচারিত হইত, লিপিবিদ্যা প্রচলিত হইলে পরেও গ্রন্থ সকল পৰ্ব্বপ্রথানসারে গার-শিষ্য-পরম্পরা মাখে মখেই প্রচারিত হইত। তাহতে প্রক্ষিপ্ত রচনা প্রবেশ করিবার বিশেষ সংবিধা ঘটিয়াছিল। দ্বিতীয় কারণ এই যে, রোম, গ্রীস বা অন্য কোন দেশে কোন ইতিহাসগ্রন্থ মহাভারতের ন্যায় জনসমাজে আব্দর বা গৌরব প্রাপ্ত হয় নাই। সতরাং ভারতবষীয় লেখকদিগের পক্ষে মুহুঙ্কু শ্ৰীয় রচনা প্রক্ষিপ্ত করিবার যে লােভ ছিল, অন্য কােন দেশীয় লেখকদিগের সেরূপ তৃতীয় কারণ এই যে, অন্য দেশের লেখকেরা আপনার যশ বা তাদশ অন্য কোন কামনার বশীভুত হইয়া গ্রন্থ প্রণয়ন করিতেন। কাজেই আপনার নামে আপনার রচনা প্রচার করাই তাঁহাদিগের উদ্দেশ্য ছিল, পরের রচনার মধ্যে আপনার রচনা ডুবাইয়া দিয়া আপনার নাম লোপ করিবার অভিপ্রায় তাঁহাদের কখনও ঘটিত না। কিন্তু ভারতবর্ষের ব্রাহ্মণেরা নিঃসবার্থ ও নিন্দকাম হইয়া রচনা করিতেন। লোকহিত ভিন্ন আপনাদিগের যশ তাঁহাদিগের অভিপ্রেত ছিল না। অনেক গ্রন্থে তৎপ্রণেতার নামমাত্র নাই। অনেক শ্রেষ্পাঠ গ্রন্থ এমন আছে যে, কে তাহার প্রণেতা, তাহা আজি পৰ্যন্ত কেহ জানে না। ঈদশ নিম্পাকাম লেখক, যাহাতে মহাভারতের ন্যায় লোকায়ত গ্রন্থের সাহায্যে তাঁহার রচনা লোকমধ্যে বিশেষ প্রকারে প্রচারিত হইয়া লোকহিত সাধন করে, সেই চেন্টায় আপনার রচনা সকল তাদর্শ গ্রন্থে প্রক্ষিপ্ত করিতেন। এই সকল কারণে মহাভারতে কালপনিক বাত্তান্তের বিশেষ বাহাল্য ঘটিয়াছে। কালপনিক বাত্তান্তের বাহাল্য আছে বলিয়া এই প্রসিদ্ধ ইতিহাসগ্রন্থে যে কিছই ঐতিহাসিক কথা নাই, ইহা বলা নিতান্ত অসঙ্গত। চতুথ পরিচ্ছেদ-মহাভারতের ঐতিহাসিকতা ইউরোপীয়দিগের মত অসঙ্গতই হউক আর সঙ্গতই হউক, মহাভারতের ঐতিহাসিকতা অস্বীকার করেন, এমন অনেক আছেন। বলা বাহাল্য যে, ইহারা ইউরোপীয় পন্ডিত, অথবা তাঁহাদিগের শিষ্য। তাঁহাদিগের মতের সংক্ষেপতঃ উল্লেখ করব। বিলাতী বিদ্যার একটা লক্ষণ এই যে, তাঁহারা সবদেশে যাহা দেখেন, মনে করেন বিদেশে ঠিক তাই আছে। তাঁহারা Moor ভিন্ন অগৌরবণ কোন জাতি জানিতেন না, এজন্য এদেশে আসিয়া হিন্দাদিগকে ‘Moor’ বলিতে লাগিলেন। সেইরাপ সবদেশে Epic কাব্য ভিন্ন পদ্যে রচিত আখ্যানগ্রন্থ দেখেন নাই, সতরাং ইউরোপীয় পন্ডিতেরা মহাভারত ও রামায়ণের সন্ধান পাইয়াই ঐ দই গ্রন্থ Epic কাব্য বলিয়া সিদ্ধান্ত করিলেন। যদি কাব্য, তবে আর উহার ঐতিহাসিকতা কিছ রহিল না, সব এক কথায় ভাসিয়া গেল। ইউসুীয় পণ্ডিতেরা এ বােল কিয়ং পরিমাণে ছাডিয়াছেন, কিন্তু তাঁহাদের দেশী শিষ্যেরা छ्I"छ्न् কেন, মহাভারতকে সাহেবরা কাব্যগ্রন্থ বলেন, তাহা তাঁহারা ঠিক বঝান নাই। উহা পদ্যে রচিত বলিয়া এরপ বলা হয়, এমত হইতে পারে না, কেন না, সব্বপ্রকার সংস্কৃত গ্ৰন্থই পদ্যে রচিত :-বিজ্ঞান, দশন, অভিধান, জ্যোতিষ, চিকিৎসা শাস্ত্র, সকলই পদ্যে প্রণীত হইয়াছে। তবে এমন হইতে পারে, মহাভারতে কাব্যাংশ বড় সন্দের-ইউরোপীয়েরা যে প্রকার সৌন্দৰ্য্য Fopic কাব্যের লক্ষণ বলিয়া নিৰ্দেশ করেন, সেই জাতীয় সৌন্দৰ্য উহাতে বহল পরিমাণে আছে বলিয়া, ইহাকে Epic বলেন। কিন্তু বিবেচনা করিয়া দেখিলে ঐ জাতীয় সৌন্দৰ্য্য অনেক ইউরোপীয় মৌলিক ইতিহাসেও আছে। ইংরেজের মধ্যে মেকলে, কালাইল ও ফ্রদের গ্রন্থে, ফর মধ্যে লামান্তীন ও মিশালার গ্রন্থে, গ্রীকদিগের মধ্যে থাকিদিদিসের গ্রন্থে, এবং অন্যান্য ইতিহাসগ্রন্থে আছে। মানব-চরিত্রেই কাব্যের শ্রেষ্ঠ উপাদান; ইতিহাসবেত্তাও মনকেষ্যচরিত্রের বণনা করেন; ভাল করিয়া তিনি যদি আপনার কাৰ্য্য সাধন করিতে পারেন, তবে ܓܠ8