পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विष्कम्ब ब्रष्नावौ_ এখনও লাসেন সাহেবের মতের সমালোচনা বাকি আছে। তিনি বলেন, কুরপাশ্চালের যাদ্ধ ঐতিহাসিক ব্যাপার; মহাভারতের ততটকু ঐতিহাসিকতা আছে। কিন্তু তিনি পান্ডব প্রভৃতি নায়ক-নায়িকদিগের প্রতি অবিশ্বাসযক্তি। তিনি বলেন, অজানাদি সব রূপকমাত্র। যথা-অভজন শব্দের অর্থ শ্বেতকণা, এজন্য যাহা আলোকময়, তাহাই অজ্ঞজন। যিনি অন্ধকার, তিনি কৃষ্ণ। কৃষ্ণাও তদুপ। পান্ডবদিগের অবস্থানকালে যিনি রাজ্যধারণা করিয়াছিলেন, তিনি ধাতরাষ্ট্ৰ। পঞ্চ পাণ্ডব পাণ্ডালের পাঁচটি জাতি, এবং পাঞ্চালীর সহিত তাঁহাদিগের বিবাহ ঐ পণঃ জাতির একীকরণ-সচক মাত্র। যিনি ভদ্র অর্থাৎ মঙ্গল আনয়ন করেন, তিনি সভদ্রা। অজ্ঞজনের সঙ্গে যাদবদিগের সৌহান্দৰ্যই এই সভদ্রা, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি স্বীকার করি, হিন্দীদিগের শাস্ত্রগ্রন্থ সকলে-বেদে, ইতিহাসে, পরাণে, কাব্যেও রাপকের অতিশয় প্রাবল্য। অনেক রূপক আছে। এই গ্রন্থে আমাদিগকেও অনেকগলি রাপকের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করিতে হইবে। কিন্তু তাই বলিয়া এমন স্বীকার করিতে পারি না যে, হিন্দীশাস্ত্ৰে যাহা কিছ আছে, সবই রপেক-যে রূপক ছাড়া শাস্ত্রগ্রন্থে আর কিছই নাই। আমরা ইহাও জানি যে, সংস্কৃত সাহিত্যে বা শাস্ত্রে যাহা কিছ আছে, তাহা রূপক হউক বা না হউক, র্যাপক বলিয়া উড়াইয়া দিতে অনেকেই ভালবাসেন। রামের নামের ভিতর ‘রম’ ধাতু পাওয়া, এবং সীতার নামের ভিতর ‘সি’ ধাতু পাওয়া যায়, এই জন্য রামায়ণ কৃষিকায্যের রাপকে পরিণত হইয়াছে। জম্মমন, পন্ডিতেরা এমনই দই চারিটা ধাতু আশ্রয় করিয়া ঋগ্বেদের সকল সত্তাগলিকে সােয্য ও মেঘের রপেক করিয়া উড়াইয়া দিয়াছেন। চেন্টা করিলে, বোধ করি, পথিবীতে যাহা কিছ আছে, তাহা এইরূপে উড়াইয়া দেওয়া যায়। আমাদিগের মনে পড়ে, এক সময় রহস্যচ্ছলে আমরা বিখ্যাত নবদ্বীপাধিপতি কৃষ্ণচন্দ্রকে এইরাপ রূপক করিয়া উড়াইয়া দিয়াছিলাম। তোমরা বলিবে, তিনি সে দিনের মানষ-তাঁহার রাজধানী, রাজপরী, রাজবংশ, সকলই আজিও বিদ্যমান আছে, তিনিও ইতিহাসে কীৰ্ত্তিত হইয়াছেন। তাহার উত্তরে বলা যায় যে, কৃষ্ণ অর্থে অন্ধকার, তমোরাপী। কৃষ্ণনগরে অর্থাৎ অন্ধকারপণ স্থানে তাঁহার রাজধানী। তাঁহার ছয় পত্র, অর্থাৎ তমোগণ হইতে ছয় রিপর উৎপত্তি। একজন বালক পলাসির যাদ্ধ সম্পবন্ধে এইরুপ র্যাপক করিয়াছিল যে, পলমাত্র উদ্ভাসিত যে আসি, তাহা ক্লীবগণষক্ত কুৈব (Clive) কর্তৃক প্রযক্ত হওয়ায় সারাজা অর্থাৎ যিনি উত্তম রাজা ছিলেন, তিনি পরাভূত হইয়াছিলেন। অতএব রােপকের অভাব নাই। আর এই বালকরাচিত দিক স্থা কতকগলি জনপদের সহিত পান্ড্য দেশের নাম উল্লেখ করিয়াছেন এবং সমাদয়কে পিশাচ অর্থাৎ অসভ্য দেশবিশেষ বলিয়া কীত্তন করিয়া গিয়াছেন। “পা”ড্যকেকয়বাহীক *** এতে পৈশাচদেশাঃ সত্যু।” হরিবংশে দক্ষিণদিক স্থা চোল কেরল্যাদির সহিত পান্ড্য দেশের নাম উল্লিখিত আছে। (হরিবংশ, ৩২ অ, ১২৪ শ্লো।) অতএব উহা দক্ষিণাপথের অন্তৰ্গত পাগড়া দেশ। শ্ৰীমান উইলসন বিবেচনা করেন; ঐ জাতীয় লোক প্রথমে সোগাডিয়েনা দেশের অধিবাসী ছিল; তথা হইতে ক্রমশঃ ভারতবর্ষে আসিয়া বাস করে এবং উত্তরোত্তর ঐ সমস্ত ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অধিবাস করিয়া পশ্চাৎ হস্তিনাপাের-বাসী হয়, ও অবশেষে দক্ষিণাপথে গিয়া পান্ড্যরাজ্য Frigo FC i Asiatic Researches, Vol. XV., pp. 95 and 96. রাজতরঙ্গিনীর মতে, কাশমীর রাজ্যের প্রথম রাজারা কুরবংশীয়। অতএব তৎপ্রদেশ হইতে পান্ডবদের হস্তিনায় আসিয়া উপনিবেশ করা সম্ভব। তাঁহারা মধ্যদেশবাসী অথচ কিরাপে পান্ডব বলিয়া পরিচিত হইলেন, এই সমস্যা পরিণার্থেই কি পাগড়পত্র পান্ডব বলিয়া ক্রমশঃ একটি জনপ্রবাদ প্রচারিত হইল ? তাঁহাদের জন্মবত্তান্তঘটিত গোলযোগ প্ৰসিদ্ধই আছে। লোকেও তাঁহাতে সংশয় প্রকাশ করিয়াছিল, তাহারও নিদর্শন পাওয়া যায়। যদা চিরমতঃ পাশভু কথং তস্যোতি চাপারে। Veffairprwrif Ya Ya Yaq | অন্য অন্য লোকে বলিল, “বহাকাল অতীত হইল, পাগড় প্রাণত্যাগ করিয়াছেন; অতএব ইহারা কিরাপে তদীয় পত্র হইতে পারেন ?” ভারতবষীয় উপাসকসম্প্রদায়, অক্ষয়কুমার দত্ত-প্রণীত, দ্বিতীয় ভাগ, উপক্ৰমণিকা, ১০৫ পঃ। অক্ষয় বাব সচরাচর ইউরোপীয়দিগের মতের অবলম্বী। 8RO