পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণচরিত্র নহে, কাজেই ইহা আদিম বা বৈশম্পায়নের মহাভারতের অংশ নহে। অনগ্রুমণিকাধ্যায়েই আছে যে কেহ কেহ প্রথমাবধি, কেহ বা আস্তীকপকবাবধি, কেহ বা উপরিচর রাজার উপাখ্যানাবধি মহাভারতের আরম্ভ বিবেচনা করেন। সতরাং যখন এই মহাভারত উগ্ৰশ্ৰবাঃ ঋষিদিগকে শনাইতেছিলেন, তখনই পকাব্যসংগ্ৰহাধ্যায় দরে থােক, প্ৰথম ৬২ অধ্যায়, সমস্তক্ষ প্রক্ষিপ্ত বলিয়া প্রবাদ ছিল। এই পৰ্ব্ব সংগ্রহ ধ্যায় পাঠ করিলেই বিবেচনা করা যায় যে, প্রক্ষিপ্তাংশ ক্রমশঃ বন্ধি পাওয়াতে ভবিষ্যতে তাহার নিবারণের জন্য এই পৰ্ব্বব্যসংগ্ৰহাধ্যায় সঙ্কলনপন্সবক অনাক্রমণিকাধ্যায়ের পর কেহ সংস্থাপিত করিয়াছিলেন। অতএব এই পকাব্যসংগ্ৰহাধ্যায় সঙ্কলিত হইবার পকেবও যে অনেক অংশ প্রক্ষিপ্ত হইয়াছিল, তাহাই অন্যমেয়। ৫ম-ঐ অনগ্রুমণিকাধ্যায়ে আছে যে, মহাভারত প্রথমতঃ উপাখ্যান ত্যাগ করিয়া চতুৰিবংশতি সহস্ৰ শ্লোকে বিরচিত হয় এবং বেদব্যাস তাহাই প্রথমে সম্ববীয় পত্র শকদেবকে অধ্যয়ন द5ट । চতুব্বিংশতিসাহস্ৰীং চক্ৰে ভারতসংহিতাম। উপাখ্যানৈঝিবনা তাবস্তারতং প্রোচ্যতে বাধৈঃ ॥ ততোহ২ধ্যাদ্ধশতং ভুয়ঃ সংক্ষেপং কৃতবানিষি। অনানুক্ৰমণিকাধ্যায়ং বত্তোন্তানাং সপব্বণাম৷ ইদং দ্বৈপায়নঃ পািব্বং পত্রিমধ্যাপয়ং শ্যকম। ততোহানোভ্যোহনিরপেভ্যঃ শিষ্যেভ্যঃ প্রদাদেী বিভূঃ ॥-আদিপৰব, ১০১-১০৩ ৷৷ শকদেবের নিকট বৈশম্পায়ন মহাভারতশিক্ষা করিয়াছিলেন। অতএব এই চতুবিংশতিসহস্রশ্লোকাস্ত্ৰক মহাভারতই জনমেজয়ের নিকট পিঠিত হইয়াছিল। এবং আদিম মহাভারতে চতুবিংশতি সহস্ৰ মাত্র শ্লোক ছিল। পরে ক্রমে নানা ব্যক্তির রচনা উহাতে প্রক্ষিপ্ত হইয়া মহাভারতের আকার চারিগণ বাড়িয়াছে। সত্য বটে, ঐ অনানুক্ৰমণিকাতেই লিখিত আছে যে, তাহার পর বেদব্যাস। ষান্টিলক্ষশ্লোকাত্মক মহাভারত রচনা করিয়াছিলেন, এবং তাহার কিয়দংশ দেবলোকে, কিয়দংশ পিতৃলোকে, কিয়দংশ গন্ধৰ্ব্ববলোকে ও এক লক্ষ মাত্র মনষ্যিলোকে পঠিত হইয়া থাকে। এই অনৈসগিক ব্যাপারঘটিত কথাটা যে আদিম অনফ্রেমণিকাধ্যায়ের মধ্যে প্রক্ষিপ্ত হইয়াছে, তদ্বিষয়ে কোনও সংশয় থাকিতে পারে না। দেবলোকে বা পিতৃলোকে বা গন্ধান্বলোকে মহাভারতাপাঠ, অথবা বেদব্যাসই হউন, বা যেই হউন, ব্যক্তিবিশেষের ষষ্টি লক্ষ শ্লোক রচনা করা আমরা সহজেই অবিশ্বাস করিতে পারি। আমি পকেবই দেখাইয়াছি যে, ২৭২ শ্লোকাত্মক উপক্ৰমণিকার মধ্যে ১২২ শ্লোক প্রক্ষিপত। এই যান্টি লক্ষ শ্লোক এবং লক্ষ শ্লোকের কথা প্রক্ষিপ্তের অন্তগত, তাহাতে কোন সংশয় নাই। দশম পরিচ্ছেদ-প্রক্ষিপ্ত নিৰবাচনপ্রণালী আমাদিগের বিচাৰ্য্য বিষয় যে, মহাভারতের কোন কোন অংশ প্রক্ষিপ্ত। ইহা পািব্ব পরিচ্ছেদে স্থির হইয়াছে। এক্ষণে দেখিতে হইবে যে, এই বিচার সম্পন্ন করিবার কোন উপায় আছে কি না। অর্থাৎ কোন অংশ প্রক্ষিপ্ত এবং কোন অংশ প্রক্ষিপ্ত নহে, তাহা স্থির করিবার কোন লক্ষণ পাওয়া যায় কি না ? মনষ্যজীবনে যে সকল কাৰ্য্য সম্পন্ন হয়, সকলই প্রমাণের উপর নিভাির করিয়া নিৰ্ব্ববাহ করা যায়। তবে বিষয়ভেদে প্রমাণের অলপ বা অধিক বলবত্তা প্রয়োজনীয় হয়। যে প্রমাণের প্রমাণ ব্যতীত আদালতে একটা মোকদ্দমা নিম্পন্ন হয় না, এবং আদালতে যোেরােপ প্রমাণের উপর নিভাির করিয়া বিচারক একটা নিম্পত্তিতে উপস্থিত হইতে পারেন, তাহার অপেক্ষা বলবান প্রমাণ ব্যতীত বৈজ্ঞানিক, বিজ্ঞানসম্মবন্ধীয় কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে পারেন না। এই জন্য বিষয়ভেদে ভিন্ন ভিন্ন প্ৰমাণশাস্ত্র সম্পষ্ট হইয়াছে। যথা,-আদালতের জন্য প্রমাণসম্প্ৰবন্ধীয় আইন (Law of Evidence), feelGig R. Wortlaws (Logic at Inductive Philosophy)

  • অবশ্য অনগ্রুমণিকাধ্যায়ের ১৫o শ্লোক ভিন্ন।

8 FRA