পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় খণড মথরো-দ্বারকম যস্তনোতি সন্তাং সেতুমতেনামতযোনিনা। ধৰ্ম্মমােৰ্থব্যবহােরাঙ্গৈহস্তস্মৈ সত্যাত্মনে নমঃ ॥ শান্তিপৰ্ব্ববাণ, ৪৭ অধ্যায়ঃ প্রথম পরিচ্ছেদ-কংসবধ এদিকে কংসের নিকট সংবাদ পাহছিল যে, বান্দাবনে কৃষ্ণ বলরাম অতিশয় বলশালী হইয়াছেন। পতনা হইতে অরিন্ট পয্যন্ত কংসানািচর সকলকে নিহত করিয়াছেন। দেবর্ষি নারদ গিয়া কংসকে বলিলেন, কৃষ্ণ-রাম বসদেবের পত্র। দেবকীর অস্টমগভজা বলিয়া যে কন্যাকে কংস নিহত করিয়াছিলেন, সে নন্দ-যশোদার কন্যা। বসদেব সন্তান পরিবত্তিত করিয়া কৃষ্ণকে নন্দালয়ে গোপনে রাখিয়াছেন। ইহা শনিয়া কংস ভীত ও কুদ্ধ হইয়া বসদেবকে তিরস্কৃত করিলেন, এবং তাঁহার বধে উদ্যত হইলেন; এবং রাম-কৃষ্ণকে আনিবার জন্য অকুরনামা এক জন যাদবপ্রধানকে বান্দাবনে প্রেরণ করিলেন। এ দিকে কংস আপনার বিখ্যাত বলবান, মল্লাদিগের দ্বারা রাম-কৃষ্ণের বন্ধসাধনের অভিপ্ৰায়ে ধনমািখ নামে যজ্ঞের আনন্ঠান করিলেন। রাম-কৃষ্ণ অফুর কর্তৃক তথায় আনীত হইয়া* রঙ্গভূমিতে প্রবেশপথবাক কংসের শিক্ষিত হস্তী য়াপীড়কে ও লব্ধপ্রতিস্ঠ মল্ল চাণকর ও মস্টিককে নিহত করিলেন। ইহা দেখিয়া কংস নন্দকে লৌহময় নিগড়ে অবরুদ্ধ করিবার এবং বসদেবকে বিনাশ করিবার জন্য আদেশ করিয়া কৃষ্ণ-বলরামকে তাড়াইয়া দিবার আজ্ঞা করিলেন। তখন যে মঞ্চে মল্লযদ্ধ দেখিবার জন্য অন্যান্য যাদবের সহিত কংস উপবিল্ট ছিলেন, কৃষ্ণ লম্ফপ্রদান-পর্বক তদপেরি আরোহণ করিয়া কংসকে ধরিলেন এবং তাঁহাকে কেশের দ্বারা আকৰ্ষণ করিয়া রঙ্গভূমে নিপাতিত ও তাঁহাকে নিহত করিলেন। পরে বসদেব দেবকী প্রভৃতি গারজনকে যথাবিহিত বন্দনা করিয়া কংসের পিতা উগ্রসেনকে রাজ্যে অভিষেক করিলেন। নিজে রাজা হইলেন না। হরিবংশ ও পরাণ সকলে এইরুপ কংসবত্তান্ত কথিত হইয়াছে। কংসবধ ঐতিহাসিক ঘটনা বটে, কিন্তু তদ্বিষয়ক এই বিবরণ ঐতিহাসিকতাশন্যে। ইহাতে বিশ্বাস করিতে গেলে, অতিপ্রকৃত ব্যাপারে বিশ্বাস করিতে হয়। প্রথমতঃ দেবর্ষি নারদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করিতে হয়। তার পর সেই দৈববাণীতে বিশ্বাস করিতে হয়, কেন না, কংসের ভয় সেই দৈববাণীসমতি হইতে উৎপন্ন। তাহা ছাড়া, দাইটি গোপবালক আসিয়া বিনা যন্ধে সভামধ্যে মথরাধিপতিকে বিনস্ট করিবে, ইহা ত সহজে বিশ্বাস করা যায় না। অতএব দেখা যাউক যে, সবাবপ্রাচীন গ্ৰন্থ মহাভারতে এই বিষয় কি আছে। মহাভারতের সভাপবো জরাসন্ধবধ-পািকবাধ্যায়ে কৃষ্ণ নিজে নিজের পকেবািবত্তান্ত যাধিস্ঠিরের নিকট বলিতেছেনঃ

  • পথিমধ্যে কুবুজা-ঘটিত ব্যাপারটা আছে। বিষ্ণপেরাণে নিন্দনীয় কথা কিছ নাই । কুব্জা

আপনাকে সন্দরী হইতে দেখিয়া কৃষ্ণকে নিজ মন্দিরে যাইতে অনরোধ করিলেন, কৃষ্ণ হাসিয়াই অস্থির। বিষ্ণপরিাণে এই পৰ্যন্ত। কৃফের এ ব্যবহার মানবোচিত ও সািজনেচিত। কিন্তু ভাগবতকার ও ব্ৰহ্মবৈবর্মকার তাহাতে সক্ষুণ্ঠ নহেন, কুজ্জার হঠাৎ ভক্তির হঠাৎ পারুকার দিয়াছেন, শেষ যাত্রার কুজ্জা আমরা এইখান হইতে ভাগবতের নিকট বিদায় গ্রহণ করিলাম। তাহার কারণ, ভাগবতে ঐতিহাসিক কথা কিছই পাওয়া যায় না; যাহা পাওয়া যায়, তাহ বিকাপরাণেও আছে। তদন্তিরিক্ত যাহা পাওয়া যায়, তাহা অতিপ্রকৃত উপন্যাস মাত্র। তবে ভাগবতকথিত বাল্যলীলা অতি প্ৰসিদ্ধ বলিয়া, আমরা ভাগবতের সে অংশের পরিচয় দিতে বাধ্য হইয়াছি। এক্ষণে ভাগবতের নিকট বিদায় গ্রহণ করিতে পারি। 84独