পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—r r 臀 कुचीबद्ध সসৈন্য যন্ধে কেবল নিরপরাধীদিগের হত্যা, আর হয়ত অপরাধীরও নিম্পকৃতি; কেন না জরাসন্ধের সৈন্যবল বেশী, পাপডিবসৈন্য তাহার সমকক্ষ না হইতে পারে। কিন্তু তখনকার ক্ষত্রিয়গণের এই ধৰ্ম্ম ছিল যে, দ্বৈরথ্য যন্ধে আহত হইলে কেহই বিমখ হইতেন না।* অতএব কৃষ্ণের অভিসন্ধি এই যে, অনাথক লোকক্ষয় না করিয়া, তাঁহারা তিন জন মাত্র জরাসন্ধের সন্মখীন হইয়া তাহকে দ্বৈরথ্য যন্ধে আহত করবেন-তিন জনের মধ্যে এক জনের সঙ্গে যদুদ্ধে সে অবশ্য সর্বীকৃত হইবে। তখন যাহার শারীরিক বল, সাহস ও শিক্ষা বেশী, সেই জিতিবে। এ বিষয়ে চারি জনেই শ্রেণীঠ। কিন্তু যাদ্ধ সম্পবন্ধে এইরহপ সঙ্কলপ করিয়া তাঁহারা স্নাতক ব্ৰাহ্মণবেশে গমন করিলেন। এ ছদ্মবেশ কেন, তাহা বৰঝা যায় না। এমন নহে যে, গোপনে জরাসন্ধকে ধরিয়া বধ করিবার তাঁহাদের সঙ্কল্প ছিল। তাঁহারা শত্রভাবে, দ্বারস্থ ভেরী সকল ভগ্ন করিয়া, প্রাকার চৈত্য চণা করিয়া জরাসন্ধসভায় প্রবেশ করিয়াছিলেন। অতএব গোপন উদ্দেশ্য নহে। ছদ্মবেশ কৃষ্ণাঙ্গাজনের অযোগ্য। ইহার পর আরও একটি কান্ড, তাহাও শোচনীয় ও কৃষ্ণাঙ্গাজনের অযোগ্য বলিয়াই বোধ হয়। জরাসন্ধের সমীপবত্তীর্ণ হইলে ভীমাজন “নিয়মস্থ” হইলেন। নিয়মস্থ হইলে কথা কহিতে নাই। তাঁহারা কোন কথাই কহিলেন না। সতরাং জরাসন্ধের সঙ্গে কথা কহিবার ভার কৃষ্ণের উপর পড়িল। কৃষ্ণ বলিলেন, “ইহারা নিয়মস্থ, এক্ষণে কথা কহিবেন না; পৰবৰ্তরাত্র অতীত হইলে আপনার সহিত আলাপ করবেন।” জরাসন্ধ কৃষ্ণের বাক্য শ্রবণান্তর তাঁহাদিগকে যজ্ঞালয়ে রাখিয়া স্বীয় গহে গমন করিলেন, এবং অদ্ধারাত্র সময়ে পনরায় তাঁহাদের সমীপে সমপস্থিত হইলেন। ইহাও একটা কল কৌশল। কল কৌশলটা বড় বিশদ্ধ রকমের নয়-চাতুরী বটে। ধৰ্ম্মমাত্মার ইহা যোগ্য নহে। এ কলে কৌশল ফিকির ফলদীর উদ্দেশ্যটা কি ? যে কৃষ্ণাঙ্গাজনকে এত দিন আমরা ধন্মের আদশের মত দেখিয়া আসিতেছি, হঠাৎ তাঁহাদের এ অবনতি কেন ? এ চাতুরীর কোন যদি উদ্দেশ্য থাকে, তাহা হইলেও বঝিতে পারি যে, হাঁ অভীষ্মটসিদ্ধির জন্য, ইহারা এই খেলা খেলিতেছেন, কল কৌশল করিয়া শত্রনিপাত করবেন বলিয়াই এ উপায় অবলম্বন করিয়াছেন। কিন্তু তাহা হইলে ইহাও বলিতে বাধ্য হইব যে, ইহারা ধৰ্ম্মমাত্মা নহেন, এবং কৃষ্ণচরিত্র আমরা যেরূপ বিশদ্ধ মনে করিয়াছিলাম, সেরাপ নহে। যাঁহারা জরাসন্ধা-বধ-বত্তান্ত আদ্যোপােন্ত পাঠ করেন নাই, তাঁহারা মনে করিতে পারেন, কেন, এরপ চাতুরীর উদ্দেশ্য ত পড়িয়াই রহিয়াছে। নিশীথকালে, যখন জরাসন্ধকে নিঃসহায় অবস্থায় পাইবেন, তখন, তাহাকে হঠাৎ আক্রমণ করিয়া বধ করাই এ চাতুরীর উদ্দেশ্য। তাই ইহারা যাহাতে নিশীথকালে তাহার সাক্ষাৎ লাভ হয়, এমন একটা কৌশল করিলেন। বাস্তবিক, এরপে কোন উদ্দেশ্য তাঁহাদের ছিল না, এরপ কোন কাৰ্য্য তাঁহারা করেন নাই। নিশীথকালে তাঁহারা জরাসন্ধের সাক্ষাৎ লাভ করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু তখন জরাসন্ধকে আক্রমণ করেন নাই —আক্ৰমণ করিবার কোন চেন্টাও করেন নাই। নিশীথকালে যাদ্ধ করেন নাই-দিনমানে যাদ্ধ হইয়াছিল। গোপনে যাদ্ধ করেন নাই-প্রকাশ্যে সমস্ত পৌরবগ ও মগধবাসীদিগের সমক্ষে যাদ্ধ হইয়াছিল। এমন এক দিন যাদ্ধ হয় নাই, “চৌদ্দ দিন এমন যাদ্ধ হইয়াছিল। তিন জনে ষদ্ধ করেন নাই, এক জনে করিয়াছিলেন। হঠাৎ আক্রমণ করেন নাই--জরাসন্ধকে তলজেন্য প্রস্তুত হইতে বিশেষ অবকাশ দিয়াছিলেন-এমন কি, পাছে যন্ধে আমি মারা পড়ি, এই ভাবিয়া যন্ধের পক্ষোিব জরাসন্ধ আপনার পত্রিকে রাজ্যে অভিষেক করিলেন, তত দর। পৰ্যন্ত অবকাশ দিয়াছিলেন। নিরস্ত্র হইয়া জরাসন্ধের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়াছিলেন। লিকচুরি কিছই করেন। নাই, জরাসন্ধ জিজ্ঞাসা করিবামাত্র কৃষ্ণ আপনাদিগের যথাৰ্থ পরিচয় দিয়াছিলেন। যাদ্ধকালে জরাসন্ধের পরোহিত বদ্ধজাত অঙ্গের বেদনা উপশমের উপযোগী ঔষধ সকল লইয়া নিকটে কেন আপত্তি করেন নাই। বন্ধকালে জরাসন্ধ ভীমকৰ্ত্তক অতিশয় পীড্যমান হইলে, দয়াময় কৃষ্ণ ভীমকে তত পীড়ন করিতে নিষেধ করিয়াছিলেন। যাঁহাদের এইরূপে চরিত্র, এই কাব্যে তাঁহারা কোন চাতুরী করিলেন ? এ উদ্দেশ্যশান্য চাতুরী কি সম্ভব ? অতি নিকোবাঁধে, যে শঠতার কোন উদ্দেশ্য নাই, তাহা করিলে করিতে পারে; কিন্তু কৃষ্ণাঙ্গজন, আর যাহাঁই হউন, নিকেবােধ

  • কালযবন ক্ষত্ৰিয় ছিল না।

GS)