পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰঙ্কিম রচনাবলী অবলম্বন করিলে, কখনই সর্বীয় অংশ লাভ করিতে পারিকেন না। অতএব বিক্রম প্রকাশ করিয়া শত্রগণকে বিনাশ করুন।” গীতাতেও অতজনকে কৃষ্ণ এইরূপ কথা বলিয়াছেন দেখা যায়। ইহা হইতে যে সিদ্ধান্তে উপস্থিত হওয়া যায়, তাহা পন্ধেব বাবান গিয়াছে। পানশাচ ভীমের কথার উত্তরে বলিতেছেন, “মনােষ্য পরষকার পরিত্যাগপৰ্ব্বক কেবল দৈব বা দৈব পরিত্যাগপৰোবক কেবল পর্যষকার অবলম্বন করিয়া জীবন ধারণ করিতে পারে না। যে ব্যক্তি এইরূপ কৃতনিশ্চয় হইয়া কমে প্রবত্ত হয়, সে কম্পম সিদ্ধ না হইলে ব্যথিত বা কম্পম সিদ্ধ হইলে সন্তুষ্ট হয় না। গীতাতেও এইরপ উক্তি আছে * অজ্ঞজনের কথার উত্তরে কৃষ্ণ বলিতেছেন, “উকবর ক্ষেত্রে যথানিয়মে হলচালন বীজ বপন্যাদি করিলেও বর্ষা ব্যতীত কখনই ফলোৎপত্তি হয় না। পরিষ যদি পােরষিকার সহকারে তাহাতে জল সেচন করে, তথাপি দৈবপ্রভাবে উহা শম্পক হইতে পারে। অতএব প্রাচীন মহাত্মাগণ দৈব ও পরষকার উভয় একত্র মিলিত না হইলে কাৰ্য্যসিদ্ধি হয় না বলিয়া স্থির করিয়াছেন। আমি যথাসাধ্য পরষকার প্রকাশ করিতে পারি; কিন্তু দৈব কম্পেমাির অনন্ঠানে আমার কিছমাত্র ক্ষমতা নাই।” এ কথার উল্লেখ আমরা পর্ক্সেব করিয়াছি। কৃষ্ণ এখানে দেবত্ব একেবারে অস্বীকার করিলেন। কেন না, তিনি মানষিী শক্তির দ্বারা কম্পমােসাধনে প্রবত্ত। ঐশী শক্তির দ্বারা কম সাধন ঈশ্বরের অভিপ্রেত হইলে, অবতারের কোন প্রয়োজন থাকে না। অন্যান্য বক্তার কথা সমাপ্ত হইলে, দ্ৰৌপদী কৃষ্ণকে কিছ বলিলেন। তাঁহার বক্তৃতায় এমন একটা কথা আছে যে, সত্ৰীলোকের মখে তাহা অতি বিস্ময়কর। তিনি বলিতেছেন “অবধ্য ব্যক্তিকে বধ করিলে যে পাপ হয়, বধ্য ব্যক্তিকে বধ না করিলেও সেই পাপ হইয়া 邬化卒皆” এই উক্তি সত্ৰীলোকের মখে বিস্ময়কর হইলেও স্বীকার করিতে হইবে যে, বহল বৎসর পন্ধেব বঙ্গদর্শনে আমি দ্ৰৌপদীচরিত্রের ঘেরােপ পরিচয় দিয়াছিলাম, তাহার সঙ্গে এই বাক্যের অত্যন্ত সংসঙ্গতি আছে। আর সন্ত্রীলোকের মাখে ভাল শনাক না শনাক, ইহা যে প্রকৃত ধৰ্ম্ম, এবং কৃষ্ণেরও যে এই মত, ইহাও আমি জরাসন্ধবধের সমালোচনাকালে ও অন্য সময়ে বাকাইয়াছি। দ্ৰৌপদীর এই বক্তৃতার উপসংহারকালে এক অপব্ব কবিত্ব-কৌশল আছে। তাহা উদ্ধত করা যাইতেছে। “অসিতাপাঙ্গী দ্রুপদনন্দিনী এই কথা শনিয়া কুটিলাগ্ৰ, পরম রমণীয়, সব্বগন্ধাধিবাসিত, সব্বলক্ষণসম্পন্ন, মহাভুজগসদশে কেশকলাপ ধারণ করিয়া আশ্রপশলোচনে দীননয়নে পনরায় কৃষ্ণকে কহিতে লাগিলেন, হে জনান্দন! দরোত্মা দঃশাসন আমার এই কেশ আকর্ষণ করিয়াছিল। শত্ৰগণ সন্ধিস্থাপনের মত প্রকাশ করিলে তুমি এই কেশীকলাপ স্মরণ করবে। ভীমাতজন দীনের ন্যায় সন্ধি স্থাপনে কৃতসংকলপ হইয়াছেন; তাহাতে আমার কিছমাত্র ক্ষতি নাই, আমার বদ্ধ পিতা মহারথ পত্ৰগণ সমভিব্যাহারে শত্ৰগণের সহিত সংগ্রাম করিবেন, আমার মহাবল পরাক্রান্ত পঞ্চ পত্র অভিমন্যুরে পরিস্কৃত করিয়া কৌরবগণকে সংহার করবে। দরাত্মা দঃশাসনের শ্যামল বাহ ছিন্ন, ধরাতলে নিপতিত ও পাংশলশিঠত না দেখিলে আমার শান্তিলাভের সম্ভাবনা কোথায় ? আমি হৃদয়ক্ষেত্রে প্রদীপ্ত পাবকের ন্যায় ক্ৰোধ স্থাপন পৰিবাক প্রয়োদশ বৎসর প্রতীক্ষা করিয়াছি। এক্ষণে সেই ত্রয়োদশ বৎসর অতিক্রান্ত হইয়াছে, তথাপি তাহা উপশমিত হইবার কিছমাত্র উপায় দেখিতেছি না ; আজি আবার ধৰ্ম্মপথাবলম্বী বাকোদরের বাক্যশল্যে আমার হৃদয় বিদীণ হইতেছে। “নিবিড়নিতস্বিনী আয়তলোচনা কৃষ্ণা এই কথা কহিয়া বাষ্পপগদগদ স্বরে কম্পিত্যকলেবরে ক্ৰন্দন করিতে লাগিলেন, দ্রবীভূত হতাশনের ন্যায় অত্যুষ্ণ নেত্রজলে তাঁহার স্তনযগল অভিষিক্ত হইতে লাগিল। তখন মহাবাহ বাসদেব তাঁহারে সান্ত্বনা করতঃ কহিতে লাগিলেন, হে কৃষ্ণে ! তুমি অতি অলপ দিন মধ্যেই কৌরব মহিলাগণকে রোদন করিতে দেখিবে। তুমি যেমন রোদন করিতেছি, তাহাদের জ্ঞাতি বান্ধবগণ নিহত হইলে এইরূপ ব্ৰোদন করবে। আমি যধিস্ঠিরের নিয়োগানসারে ভীমাজািন নকুল সহদেব সমভিব্যাহারে কোরকগণের বিধ

  • সিন্ধ্যািসন্ধ্যোঃ সমো , ভূত্বা সমত্বং যোগ উচ্যতে ৷ ২ ৷৷ ৪৮

○○も。