পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণচরিত্র সাধনে প্রবত্ত হইব। ধন্তরাষ্ট্রীতনয়গণ কালপ্রেরিতের ন্যায় আমার বাক্যে অনাদর প্রকাশ করিলে অচিরাং নিহত ও শর্তুগাল কুকরের ভক্ষ্য হইয়া ধুরাতলে শয়ন করবে। যদি হিমবান প্রচলিত, ಙ್ಞ್ಞಞ್ಞ! না। হে কৃষ্ণে ! বাপ সংবরণ করা, তোমারে যথাৰ্থ কহিতেছি, অচিরকাল 'ಬ್ಲ್ তুমি শোণিতপিপাসার হিংসাপ্রবত্তিজনিত বা ক্রুদ্ধের ক্রোধাভিব্যক্তি নহে। যিনি সব্বত্রগামী সব্বকালব্যাপী বদ্ধির প্রভাবে, ভবিষ্যতে যাহা হইবে, তাহা সম্পন্ট দেখিতেছিলেন, তাঁহার ভবিষ্যদ্যক্তি মাত্র। কৃষ্ণ বিলক্ষণ জানিতেন যে, দৰ্য্যোধন রােজ্যাংশ প্রতাপািণপৰিবাক সন্ধি স্থাপন করিতে কদাপি সম্মত হইবে না। ইহা জানিয়াও যে তিনি সন্ধিস্থাপনার্থ কৌরব-সভায় গমনের জন্য উদ্যোগী, তাহার কারণ এই যে, যাহা অনন্ঠেয়, তাহা সিদ্ধ হউক বা না হউক, করিতে হইবে। সিদ্ধি ও অসিদ্ধি তুল্য জ্ঞান করিতে হইবে। ইহাই তাঁহার মািখবিনিগত গীতোক্ত অমতময় ধৰ্ম্ম। তিনি নিজেই অজ্ঞজনকে শিখাইয়াছেন যে, সিদ্ধ্যসিদ্ধোঃ সমো ভূত্বা সমত্বং যোগ উচ্যতে। সেই নীতির বশবত্তী হইয়া, আদর্শযোগী, ভবিষ্যৎ জানিয়াও সন্ধিস্থাপনের চেষ্টায় কৌরব-সভায় চলিলেন। পণ্যম পরিচ্ছেদ-যাত্রা যাত্রাকালে শ্ৰীকৃষ্ণের সমস্ত ব্যবহারই মনষ্যোপযোগী এবং কালোচিত । তিনি “রেবতী নক্ষত্ৰষক্ত কাত্তিকমাসীয় দিনে মৈত্র মহত্তে কৌরব-সভায় গমন করিবার বাসনায় সবিশ্বন্ত ব্রাহ্মণগণের মাঙ্গল্য পণ্যনিঘোষ শ্রবণ ও প্রাতঃকৃত্য সমাপন পৰিবাক স্নান ও বসনভূষণ পরিধান করিয়া সােয্য ও বহ্নির উপাসনা করিলেন; এবং বর্ষলাঙ্গল দশন, ব্রাহ্মণগণকে অভিবাদন, অগ্নি প্ৰদক্ষিণ ও কল্যাণকর দ্রব্য সকল সন্দশ নপািব্বক” যাত্রা করিলেন। শ্ৰীকৃষ্ণ গীতায় যে ধৰ্ম্মম প্রচারিত করিয়াছেন, তাহাতে তৎকালে প্রবল কাম্যকমপরায়ণ যে বৈদিক ধৰ্ম্ম, তাহার নিন্দাবাদ আছে। কিন্তু তাই বলিয়া তিনি বেদপারায়ণ ব্রাহ্মণগণকে কখনও অবমাননা করিতেন না। তিনি আদর্শ মনষ্যে, এই জন্য তৎকালে ব্রাহ্মণদিগের প্রতি যে ব্যবহার উচিত ছিল, তিনি তাহাই করিতেন। তখনকার ব্রাহ্মণেরা বিদ্বান, জ্ঞানবান, ধৰ্ম্মমাত্মা, এবং অসাবাথপর হইয়া সমাজের মঙ্গলসাধনে নিরত ছিলেন, এজন্য অন্য বণের নিকট, পাজা তাঁহাদের ন্যায্য প্রাপ্য। কৃষ্ণও সেই জন্য তাঁহাদিগকে উপযক্তিরােপ পজা করিতেন। উদাহরণস্বরপ, পথিমধ্যে ঋষিগণের সমাগমের বর্ণনা উদ্ধত করিতেছি। “মহাবাহ কেশব এইরপে কিয়দর গমন করিয়া পথের উভয় পাশ্বে ব্ৰহ্মতেজে জাজবল্যমান কতিপয় মহাষিরে সন্দশন করিলেন। তিনি তাঁহাদিগকে দেখিবামাত্র অতিমাত্র ব্যগ্রতাসহকারে রথ হইতে অবতীর্ণ হইয়া অভিবাদনপৰিবাক জিজ্ঞাসা করিলেন, হে মহর্ষিগণ! সমদায় লোকের কুশল ? ধৰ্ম্ম উত্তমরূপে অন্যঠিত হইতেছে ? ক্ষত্রিয়াদি বর্ণক্রয় ব্রাহ্মণগণের শাসনে অবস্থান করিতেছে ? আপনারা কোথায় সিদ্ধ হইয়াছেন ? কোথায় যাইতে বাসনা করিতেছেন ? আপনাদের প্রয়োজন কি ? আমারে আপনাদের কোন কাৰ্য্য অনষ্ঠান করিতে হইবে ? এবং আপনারা কি নিমিত্ত ধরণীতলে অবতীণ হইয়াছেন ? “তখন মহাভাগ জামদগ্ন্যি কৃষ্ণকে আলিঙ্গন করিয়া কহিলেন, হে মধ্যসািন্দন! আমাদের মধ্যে কেহ কেহ দেবর্ষি, কেহ কেহ বহশ্রত ব্ৰাহ্মণ, কেহ কেহ রাজর্ষি এবং কেহ কেহ তপস্বী। আমরা অনেক বার দেবাসরের সমাগম দেখিয়াছি; এক্ষণে সমদায় ক্ষত্ৰিয়, সভাসদ ভূপতি ও আপনারে অবলোকন করিবার বাসনায় গমন করিতেছি। আমরা কৌরব সভামধ্যে আপনার মািখবিনিগত ধৰ্ম্মািথৰ্যক্ত বাক্য শ্রবণ করিতে অভিলাষী হইয়াছি। হে যাদবশ্রেষ্ঠ ! ভীষ্ম, দ্ৰোণ, বিদ্যর প্রভৃতি মহাত্মাগণ এবং আপনি যে সত্য ও হিতকর বাক্য কহিবেন, আমরা সেই সকল বাক্য শ্রবণে নিতান্ত কৌতহলাক্রোন্ত হইয়াছি। “এক্ষণে আপনি সত্বরে কুররাজ্যে গমন করন; আমরা তথায় আপনারে সভামন্ডপে দিব্য আসনে আসীন ও তেজঃপ্রদীপ্ত দেখিয়া পনরায় আপনার সহিত কথোপকথন করিব।” (ኔ8)«ላ