পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণচরিত্র তপস্যা, ব্রত, যজ্ঞ, বিবিধ নিয়ম, ধ্যানমােগা ও যোগমািগ আশ্রয় না করেন, তাঁহারই এককালে কামনারে পরাজয় করিতে সমর্থ হন। কামনিগ্রহই যথার্থ ধৰ্ম্মম ও মোক্ষের বীজস্বরপ, সন্দেহ माथे। ঃপর পারাবিং পন্ডিতগণ যে কামগীতা কীত্তন করিয়া থাকেন, আমি এক্ষণে তোমার নিকট তাহা কহিতেছি, শ্রবণ করা। কামনা সদ্বয়ং কহিয়াছে যে, নিশ্চমমতা ও যোগাভ্যাস ভিক্ষ কেহই আমারে পরাজয় করিতে সমর্থ হয় না। যে ব্যক্তি জাপাদি কায্য দ্বারা আমায়ে জয় করিতে চেস্টা করে, আমি তাহার মনে অভিমানরপে আবিভূতি হইয়া তাহার কায্য বিফল করিয়া থাকি। যে ব্যক্তি বিবিধ যজ্ঞানপীঠান দ্বারা আমারে পরাজিত করিতে চেষ্টা করে, আমি তাহার মনে জঙ্গমমধ্যগত জীবাত্মার ন্যায় ব্যক্তিরাপে উদিত হই। যে ব্যক্তি বেদান্ত সমালোচনা দ্বারা আমারে শাসন করিতে যত্নবান হয়, আমি তাহার মনে স্থাবরান্তগত জীবাত্মার নাম অব্যক্তরাপে অবস্থান করি। যে ব্যক্তি ধৈৰ্য্য দ্বারা আমারে জয় করিতে চেষ্টা করে, আমি কখনই তাহার মন হইতে আপনীত হই না। যে ব্যক্তি তপস্যা দ্বারা আমারে পরাজয় করিতে ষত্ব করে, আমি তাহার তপস্যাতেই প্রাদভূত হই এবং যে ব্যক্তি মোক্ষাথী হইয়া আমারে জয় করিতে বাসনা করে, আমি তাহারে লক্ষ্য করিয়া নিত্য ও উপহাস করিয়া থাকি। পণ্ডিতেরা আমারে সব্বভূতের অবধ্য, ও সনাতন বলিয়া নিন্দেশ করিয়া থাকেন। হে ধৰ্ম্মরাজ ! এই আমি আপনার কামগীতা সবিস্তারে কীত্তন করিলাম। অতএব কামনারে পরাজয় করা নিতান্ত দঃসাধ্য। আপনি বিধিপৰিবাক অশ্বমেধ ও অন্যান্য সসমদ্ধ যজ্ঞের অনঙ্ঠান করিয়া কামনারে ধৰ্ম্মম বিষয়ে নীত করন। বারংবার বন্ধবিয়োগে অভিভূত হওয়া আপনার নিতান্ত অনচিত। আপনি অন্যতাপ দ্বারা কখনই তাঁহাদিগকে পািনদর্শন লাভে সমর্থ হইবেন না। অতএব এক্ষণে মহাসমারোহে সসমদ্ধ যজ্ঞ সমদায়ের অনন্ঠান করান, তাহা হইলেই ইহলোকে অতুল কীত্তি ও পরলোকে উৎকৃষ্ট গতি লাভ করিতে সমর্থ হইবেন।” দ্বাদশ পরিচ্ছেদ-কৃষ্ণপ্রয়াণ ধৰ্ম্মম রাজ্য সংস্থাপিত হইল ; ধৰ্ম্মম প্রচারিত হইয়াছে। পান্ডবদিগের সঙ্গে কৃষ্ণের জন্য এ গ্রন্থের সম্প্ৰবন্ধ; মহাভারতে যে জন্য কৃষ্ণের দেখা পাই, তাহা সব ফরাইল। এইখানে কৃষ্ণের মহাভারত হইতে অন্তহিত হওয়া উচিত। কিন্তু রচনাকশন্ডতিপীড়িতেরা তত সহজে কৃষ্ণকে ছাড়িবার পাত্র নহেন। ইহার পরে অজ্ঞজনের মখে তাঁহারা একটা অপ্রাসঙ্গিক, অদ্ভুত কথা তুলিলেন। তিনি বলিলেন, তুমি যাদ্ধকালে আমাকে যে ধৰ্ম্মোপদেশ দিয়াছিলে, সব ভুলিয়া গিয়াছি। আবার বল। কৃষ্ণ বলিলেন, কথা বড় মন্দ। আমার আর সে সব কথা মনে হইবে না। আমি তখন যোগমসক্ত হইয়াই সে সব উপদেশ দিয়াছিলাম। আর তুমিও বড় নিবোধ ও শ্রদ্ধাশন্য; তোমায় আর কিছ বলিতে চাহি না। তথাপি এক পরাতন ইতিহাস শনাইতেছি। কৃষ্ণ ঐ ইতিহাসোত্ত ব্যক্তিকে অবলম্পবন করিয়া, অজািনকে আবার কিছ তত্ত্বজ্ঞান শনাইলেন। পর্বে যাহা শনাইয়াছিলেন, তাহা গীতা বলিয়া প্ৰসিদ্ধ। এখন যাহা শনাইলেন, গ্রন্থকার তাহার নাম রাখিয়াছেন, “অনগীতা”। ইহার এক ভাগের নাম “ব্রাহ্মণগীতা”। Vt. তা, প্ৰজাগর, সনৎস জাতীয়, মাকন্ডেয়সমস্যা, এই অনাগীতা প্রভৃতি অনেকগলি ধৰ্ম্মম সম্প্রবন্ধীয় গ্রন্থ মহাভারতের মধ্যে সন্নিবিভ্ৰাট হইয়া, এক্ষণে মহাভারতের অংশ বলিয়া প্রচলিত। এই সকল গ্রন্থের মধ্যে সব্বশ্রেষ্ঠ গীতা, কিন্তু অন্যগলিতেও অনেক সারগভর্ণ কথা পাওয়া যায়। অন্যগীতাও উত্তম গ্রন্থ। “ভট্ট মোক্ষমলার,” ইহাকে তাঁহার ‘Sacred Books of the East” নামক গ্রন্থাবলীমধ্যে স্থান দিয়াছেন। শ্ৰীযক্ত কাশীনাথ ব্ল্যািবক তেলাঙ , এক্ষণে যিনি বোম্বাই হাইকোটের জজ, তিনি ইহা ইংরাজিতে অনাবাদিত করিয়াছেন। কিন্তু গ্ৰন্থ যেমনই হউক, ইহাতে আমাদের কোন প্রয়োজন নাই। গ্ৰন্থ যেমনই হউক, ইহা কৃষ্ণোক্তি নহে। গ্রন্থকার বা অপর কেহ, যেরপে অবতারণা করিয়া, ইহাকে কৃষ্ণের মখে উক্ত করিয়াছেন, তাহাতে বাবা যায় যে, ইহা কৃষ্ণোক্ত নহে; জোড়া দাগ বড় সম্পন্ট, কন্টেও জোড় লাগে নাই। গীতোক্ত ধমের সঙ্গে অনংগীতোক্ত ধৰ্ম্মে এরােপ কোন সাব্দশ্য নাই যে, ইহাকে গীতাবেত্তার 卒 ミー○a dit q