বঙ্কিম রচনাবলী । অশ্বারোহণ যেমন শারীরিক ধৰ্ম্ম শিক্ষা, পদব্ৰজে দরোগমন এবং সন্তরণও তােদশ। যোন্ধার পক্ষে ইহা নাহিলেই নয়, কিন্তু কেবল যোদ্ধার পক্ষে ইহা প্রয়োজনীয়, এমন বিবেচনা করিও না। যে সাঁতার না জানে, সে জল হইতে আপনার রক্ষায় ও পরের রক্ষায় অপটি। যন্ধে কেবল জল হইতে আত্মরক্ষা ও পরের রক্ষার জন্য ইহা প্রয়োজনীয় এমন নহে, আক্রমণ, নিম্পত্রিমণ, ও পলায়ন জন্য অনেক সময়ে ইহার প্রয়োজন হয। পদব্ৰজে দরগমন আরও প্রয়োজনীয়, ইহা বলা বাহল্য। মনষ্যে মাত্রের পক্ষেই ইহা নিতান্ত প্রয়োজনীয়। শিষ্য। অতএব যে রক বাত্তির অনশীলন করিবে, কেবল তাহার শরীর পল্ট ও বলশালী হইলেই হইবে না। সে ব্যায়ামে সপট গর। এই ব্যায়াম মধ্যে মল্লযাদ্ধটা ধরিযা লইবে। ইহা বিশেষ বলকারক। আত্মরক্ষার ও পরোপকারের বিশেষ অনাকাল।।* শিষ্য। অতএব, চাই শরীরপন্টি, ব্যায়াম, মল্লযাদ্ধ, অস্ত্রশিক্ষা, অশ্বারোহণ, সন্তরণ, পদব্রজে দরগমন-- গর। আরও চাই সহিষ্ণতা। শীত, গ্রীষ্মম, ক্ষধা, তৃষ্ণা, শ্রান্তি, সকলই সহ্য করিতে পারা চাই। ইহা ভিন্ন যাদ্ধার্থীর আরও চাই। প্রয়োজন হইলে মাটি কাটিতে পরিবে-ঘর বধিতে পরিবে—মোট বহিতে পরিবে। অনেক সময়ে যাদ্ধার্থীকে দশ বার দিনের খাদ্য আপনার পিঠে বহিয়া লইযা যাইতে হইয়াছে। স্থল কথা, যে কম্পমকারক আপনার কৰ্ম্ম জানে, সে যেমন অস্ত্ৰখানি তীক্ষধার ও শাণিত করিয়া, সকল দ্রব্য ছেদনের উপযোগী করে, দেহকে সেইরােপ একখানি শাণিত অস্ত্র করিতে হইবে-যেন তন্দ্বারা সৰ্ব্বকৰ্ম্ম সিদ্ধ হয। শিষ্য। কি উপাযে ইহা হইতে পারে ? অনশীলন ইহার উপায় (১) ব্যায়াম, (২) শিক্ষা, (৩) আহার, (৪) ইন্দ্রিযসংযম। চারিটিই 하 শিষ্য। ইহার মধ্যে ব্যায়াম ও শিক্ষা সম্পবন্ধে যাহা বলিষাছেন শনিযাছি। কিন্তু আহার সম্পবন্ধে কিছ জিজ্ঞাস্য আছে। বাচস্পতি মহাশযের সেই কাঁচকলা ভাতে ভাতের কথাটা স্মরণ করন। ততটকু মাত্র আহার করাই কি ধৰ্ম্মমােন মত ? তাহার বেশী আহার কি অধৰ্ম্মম ? আপনি ত এইরপ কথা বলিয়াছিলেন। গর। আমি বলিয়াছি শরীর রক্ষা ও পন্টির জন্য যদি তাঁহাই যথেস্ট হষ, তবে তাহার অধিক কামনা করা অধৰ্ম্ম। শরীর রক্ষা ও পন্টির জন্য কিরােপ আহার প্রয়োজনীয়, তাহা বিজ্ঞানবিং পন্ডিতেরা বলিবেন, ধৰ্ম্মেমপিদেস্টার সে কাজ নহে। বোধ করি তাঁহারা বলবেন যে, কাঁচকলা ভাতে ভাত শরীর রক্ষা ও পন্টির জন্য যথেস্ট নহে। কেহ বা বলিতে পারেন, বাচস্পতির ন্যায়, যে ব্যক্তি কেবল বসিযা বসিয়া দিন কাটায, তাহার পক্ষে ইহাই যথেস্ট। সে তকে আমাদের প্রয়োজন নাই-বৈজ্ঞানিকের কক্ষম বৈজ্ঞানিক করােক। আহাব সম্পবন্ধে যাহা প্রকৃত ধন্মোপদেশ-যাহা স্বয়ং শ্ৰীকৃষ্ণের মখনিগত-গীতা হইতে তাহাই তোমাকে শনাইয়া আমি নিরস্ত হইব। আযঃসত্ত্ববলারোেগ্যাসখপ্ৰীতিবিবদ্ধ নাঃ। রস্যাঃ স্নিগ্ধঃ স্থিরা হৃদ্যা আহারাঃ সাত্ত্বিকপ্রিয়াঃ ॥ ৮ ॥১৭ ষে আহার আযবদ্ধিকারক, উৎসাহবদ্ধিকারক, বলবদ্ধিকারক, স্বাস্থ্যবদ্ধিকারক, সখি বা চিত্তপ্ৰসাদ বদ্ধিকারক, এবং রচিবদ্ধিকারক, যাহা রসায্যক্ত, স্নিগ্ধ, যাহার সারাংশ দেহে থাকিয়া যায় (অৰ্থাৎ Nutritious) এবং যাহা দেখিলে খাইতে ইচ্ছা করে, তাহাই সাত্ত্বিকের প্রিয়। শিষ্য। ইহাতে মদ্য, মাংস, মৎস্য বিহিত, না নিষিদ্ধ হইল ? গর। তাহা বৈজ্ঞানিকের বিচাৰ্য্য। শরীরতত্ত্ববিদ বা চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করিও যে, ইহা আয় সত্ত্ব বলা রোগ্য সখীপ্ৰীতিবদ্ধন ইত্যাদি গণেষক্ত কি না। শিষ্য। হিন্দীশাস্ত্রকারেরা ত এ সকল নিষিদ্ধ কবিয়াছেন। গর। আমার বিবেচনায় বৈজ্ঞানিকের বা চিকিৎসকের আসনে অবতরণ করা
- লেখক-প্রণীত ‘দেবী চৌধরাণী’ নামক গ্রন্থে প্রফােল্লকুমারীকে অনশীলনের উদাহরুশ-কেক্ষপ প্রতিকৃত করা হইয়াছে। এজন্য সে স্ত্রীলোক হইলেও মল্লষদ্ধ শিক্ষা করান হইয়াছে। *
SO
