পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭১৫

ধৰ্ম্মমতত্ত্ব (৩) রক্ষা। (১) যাহারা উৎপাদন করে, তাহারা কৃষিধৰ্ম্মমনী ; (২) যাহারা সংযোজন বা সংগ্ৰহ করে, তাহারা শিলপ বা বাণিজ্যধৰ্ম্মী; (৩) এবং যাহারা রক্ষা করে, তাহারা যাদ্ধধৰ্ম্মমী । ইহাদিগের নামান্তর ব্যংক্রমে ক্ষত্ৰিয়, বৈশ্য, শতদ্র, এ কথা পাঠক স্বীকার করিতে পারেন কি ? স্বীকার করিবার প্রতি একটা আপত্তি আছে। হিন্দীদিগের ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰানসারে এবং এই গীতার ব্যবস্থানসারে কৃষি শদ্রের ধৰ্ম্মম নহে; বাণিজ্য এবং কৃষি, উভয়েই বৈশের ধৰ্ম্ম। অন্য তিন বণের পরিচযাই শদ্রের ধৰ্ম্ম। এখনকার দিনে দেখিতে পাই, কৃষি প্রধানতঃ শদ্রেরই ধৰ্ম্মম। কিন্তু অন্য তিন বর্ণের পরিচর্য্যাও এখনকার দিনে প্রধানতঃ শদ্ৰেবই পৰ্ম্ম । যখন জ্ঞানধৰ্ম্মমালী যাদ্ধধৰ্ম্মমী, বাণিজ্যধৰ্ম্মী বা কৃষিধৰ্ম্মমীর কম্পেমর এত বাহাল্য হয় যে তদ্ধৰ্ম্মিমঙ্গণ আপনাদিগের দৈহিকাদি প্রয়োজনীয় সকল কৰ্ম্মম সম্পন্ন করিয়া উঠিতে পারে না তখন কতকগলি লোক তাহাদিগের পরিচয্যায় নিযক্ত হয়। অতএব (১) জ্ঞানাতজন বা লোকশিক্ষা, (২) যাদ্ধ বা সমাজরক্ষা, (৩) শিলপ বা বাণিজ্য, (৪) উৎপাদন বা কৃষি, (৫) পরিচযা, এই পণ8বধ কম ।” ভগবদগীতার টীকায় যাহা লিখিয়াছি, তাহা হইতে এই কয়টি কথা উদ্ধত করিলাম। এক্ষণে সমরণ রাখা কত্তব্য যে সব্বাবিধ কৰ্ম্মানন্ঠান জন্য অনশীলন প্রয়োজনীয়। তবে কথা এই যে, যাহার যে সবধৰ্ম্ম, অনশীলন তদনবিত্তীর্ণ না হইলে সে সবধৰ্ম্মের সােপালন হইবে না। অনশীলন সর্বধৰ্ম্মানবেত্তীর্ণ হওয়ার অর্থ এই যে, সাবধন্মের প্রয়োজন অনসারে বত্তিবিশেষের বিশেষ অনশীলন চাই। সামঞ্জস্য রক্ষা করিয়া ব্যক্তিবিশেষের বিশেষ অনশীলন কি প্রকারে হইতে পারে, তাহা শিক্ষাতত্ত্বের অন্তর্গত। সতরাং এ গ্রন্থে সে বিশেষ অনশীলনের কথা লেখা গেল না। আমি এই গ্রন্থে সাধারণ অনশীলনের কথাই বলিয়াছি; কেন না, তাহাই ধৰ্ম্মতত্ত্বের অন্তৰ্গত; বিশেষ অনশীলনের কথা বলি নাই; কেন না, তাহা শিক্ষাতত্ত্ব। উভয়ে কোন বিরোধ নাই ও হইতে পারে না, ইহাই আমার এখানে বলিবার প্রয়োজন। V» 4R ny