পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীমন্তব্গবদ্গীতা তিন বণের পরিচয্যাই শদ্রের ধৰ্ম্মম। এখনকার দিনে দেখিতে প্রধানতঃ শদ্রেরই గొల్దాక్షి জ্ঞানধৰ্ম্মী, যাদ্ধধর্মী বাণিজ্যধৰ্ম্মী বা কৃষিধৰ্ম্মমীর কম্মের এত বাহাল্য হয় যে তদ্ধশ্চিম গণ আপনাদিগের দৈহিকাদি প্রয়োজনীয় সকল কৰ্ম্ম সম্পন্ন করিয়া উঠিতে পারে না, তখন কতকগলি লোক তাহাদিগের পরিচর্য্যায় নিযক্ত হয়। অতএব (১) জ্ঞানাজািন বা লোকশিক্ষা, (২) যাদ্ধ বা সমাজরক্ষা, (৩) শিল্প বা বাণিজ্য, (৪) উৎপাদন বা কৃষি, (৫) পরিচর্য্যা এই পণগুবিধা কম । ইহার অন্যরােপ পাঁচটি জাতি, রিপান্তরে, সকল সমাজেই আছে। তবে অন্য সমাজের সঙ্গে ভারতবর্ষের প্রভেদ এই যে, এখানে ধৰ্ম্মম পরিষপরম্পরাগত। কেবল হিন্দসমাজেই যে এরপ, তাহা নহে, হিন্দসমাজসংলগ্ন মসলমানদিগের মধ্যেও এরাপ ঘটিয়াছে। দরজিরা পরষানক্রমে সিলাই করে। জেলারা পরষানক্রমে বস্ত্র বনে, কলরা পরষানক্রমে তৈল বিক্রয় করে। ব্যবসা এইরুপ পরিষপরম্পরানিবদ্ধ হইলে একটা দোষ ঘটে এই যে, যখন কোন জাতির সংখ্যা বদ্ধি হইল, তখন নিন্দিািট ব্যবসায়ে কুলান হয় না, কম্পমান্তর অবলম্পােবন না করিলে জীবিকানিৰ্ব্ববাহ হয় না। প্রাচীন কালের অপেক্ষা এ কালে শদ্রেজাতির সংখ্যা বিশেষ প্রকারে বদ্ধি পাইয়াছে, তাহার ঐতিহাসিক প্রমাণ দেওয়া যাইতে পারে।+ এজন্য শািন্দ্র এখন কেবল পরিচর্য্যা ছাড়িয়া কৃষিধৰ্ম্মী। পক্ষান্তরে পািব্বকালে আৰ্যসমাজস্থ অধিকাংশ লোক এইরােপ সামাক্তিক কারণে শিলপ, বাণিজ্য বা কৃষিধমীর্ণ ছিল। এবং তাহাদিগেরই নাম বৈশ্য। সে যাই হউক, মনষ্যে মাত্রে, জ্ঞান বা কম্পমানসারে, ব্ৰাহ্মণ, ক্ষত্ৰিয়, বণিক, শিলপী, কৃষক, বা পরিচারকধৰ্ম্মমী। সামাজিক অবস্থার গতি দেখিয়া যদি বল যে, মনষ্যে মাত্রে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্ৰিয়, বৈশ্য বা শািন্দ্র, তাহাতেও কোন আপত্তি হইতে পাবে না। স্থল কথা এই যে, এই ষড়বিধ বা পাঁচবিধ বা চতুৰিবধি কম ভিন্ন মনষ্যের কম্পমান্তর নাই। যদি থাকে, তাহা কুকৰ্ম্ম । এই ষড়বিধ কন্মের মধ্যে যিনি যাহা গ্রহণ করেন উপজীবিকার জন্যই হউক, আর যে কারণেই হউক, যাহার ভার আপনার উপর গ্রহণ করেন, তাহাই তাঁহার অনন্ঠেয কৰ্ম্ম তাঁহার Duty. তাহাই তাঁহার স্বধৰ্ম্ম । ইহাই আমার বদ্ধিতে গীতোক্ত সবধৰ্ম্মের উদার ব্যাখ্যা। যাঁহারা ইহার কেবল প্রাচীন হিন্দসমাজের উপযোগী অর্থ নিন্দেশ করেন, তাঁহারা ভগবদ্যক্তিতে অতি সঙ্কীণার্থক বিবেচনা করেন। ভগবান কখনই সঙ্কীণীবদ্ধি নহেন। যাহা ভগবদ্যুক্তি,--গীতাই হউক, Bible ই হউক, সবষং অবতীর্ণ ভগবানের সম্প্ৰথমখনিৰ্গতিই হউক বা তাঁহার অন্যগহীত মানষের মাখনিগতিই হউক, যখন উহা প্রচারিত হয়, উহা তখনকার ভাষায় ব্যক্ত হইয়া থাকে এবং তখনকার সমাজের এবং লোকে বা শিক্ষা ও সংস্কারের অবস্থার অনমিত ষে অর্থ, তাহাই তৎকালে গহীত হয়। কিন্তু সমাজের অবস্থা এবং লোকে বা শিক্ষা ও সংস্কারসকল কালক্রমে পরিবত্তিত হয়। তখন ভগবদ্যক্তির ব্যাখ্যারও সম্প্রসারণ আবশ্যক হয়। কেন না, ধৰ্ম্মম নিত্য; এবং সমাজের সঙ্গে তাহার সম্পবিন্ধও নিত্য। ঈশ্বরোক্ত ধৰ্ম্মম যে কেবল একটি বিশেষ সমাজ বা বিশেষ সামাজিক অবস্থার পক্ষেই ধৰ্ম্ম, সমাজের অবস্থান্তরে তাহা আর খাটিবে না, এজন্য সমাজকে পািব্বাবস্থাতে রাখিতে হইবে, ইহা কখন ঈশ্বরাভিপ্রায়সঙ্গত হইতে পারে না। কালক্রমে সামাজিক পরিবত্ত নানসারে ঈশ্বরোক্তির সামাজিক জ্ঞানোপযোগিনী ব্যাখ্যা প্রয়োজনীয়। কৃষ্ণোক্ত সম্বাবধন্মের অর্থের ভিতর বণাশ্ৰমধৰ্ম্মম ও আছে; আমি যাহা বাঝাইলাম, তাহাও আছে; কেন না, উহা বৰ্ণাশ্রমধৰ্ম্মের সম্প্রসারণ মাত্র। তবে প্রাচীন কালে বৰ্ণাশ্রম বঝিলেই ঈশ্বরোক্তির কালোচিত ব্যাখ্যা করা হয়; আমি যেরােপ বন্ধাইলাম। এখন সেইরােপ বঝিলেই কালোচিত ব্যাখ্যা করা হয।

  • কেবল কালসহকারে প্রজাবদ্ধির কথা বলিতেছি না। “বাঙ্গালিব উৎপত্তি” বিষসে বঙ্গদর্শনে যে কয়টি প্রবন্ধ প্রকাশ কবিয়ছিলাম, তাহাতে প্রমাণ করিবার চেষ্টা পাইয়াছি যে, অনাৰ্য জাতিবিশেষসকল হিন্দধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিয়া হিন্দ শব্দ্রজাতিবিশেষে পরিণত হইয়াছে। যথা পড়ে নামক প্রাচীন অনাৰ্য্য জাতিবিশেষ এখন কোন স্থানে পডা কোন স্থানে পোদে পরিণত হইয়াছে। এইবাপে কালক্রমে শব্দের সংখ্যা বাড়িয়াছে। বৰ্ণসঙ্কবি শািন্দ্রবদ্ধির অন্যতম কারণ।

যথা চৌষ্যাদি। Cð6