পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कैञ्ज . काबुलीखेका যদি কোন উক্তিকে ঈশ্বরোক্তি বলিয়া আমরা স্বীকার করিতে পারি, তবে তাহাঁই প্রকৃত শান্দরােপ প্রমাণ। খাঁটিয়ানেরাও ইহাকে উৎকৃষ্ট প্রমাণ বলিয়া স্বীকার করেন—ইংরাজি নাম Revelation. বস্তুতঃ যদি কোন উক্তিকে ঈশ্বরোক্তি বলিয়া স্বীকার করা যায়। তবে তাহা প্রত্যক্ষ ও অনমানের অপেক্ষাও উৎকৃষ্ট প্রমাণ। কেন না, প্রত্যক্ষ ও অনমানও ভ্রান্ত হইতে পারে, ঈশ্বর কখনই ভ্ৰান্ত হইতে পারেন না। যদি এই গীতাকে কাহারও ঈশ্বরোক্তি বলিয়া বিশ্বাস হয়, তবে আত্মার অস্তিত্ব ও অবিনাশিত সম্পবন্ধে তাঁহার অন্য প্রমাণ খাঁজবার প্রয়োজন নাই; এই গীতাই অখন্ডনীয় প্রমাণ। তবে নিরীশ্বর বৈজ্ঞানিক, গীতাদিকে ঈশ্বরোক্তি বলিয়া স্বীকার করবেন না। আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাস করিতে তিনি কি বাধ্য নহেন ? তাঁহাদিগের জন্য জন্মাণ-দাশ নিকদিগের উত্তর আছে। কাণ্টের বিচিত্র দশনশাস্ত্র পাঠককে বাঝাইবার স্থান। এখানে নাই। কিন্তু কাণ্ট এবং তাঁহার পরবত্তীর্ণ কতকগলি লব্ধপ্রতিদ্ঠ দাশ নকদিগের মত এই যে, প্রত্যক্ষ এবং প্রত্যক্ষমতলক অনামান ভিন্ন জ্ঞানের অন্য কারণ আছে। তাঁহারা বলেন, কতকগলি তত্ত্ব মনষ্যচিত্তে সম্ভবতঃসিদ্ধ। তাঁহারা কেবল " বলেন” ইহাই নয়, কাণ্ট এই তত্ত্বের যে প্রকার প্রমাণ করিয়াছেন, তাহা মনষ্যে বদ্ধির আশচয্য পরিচয়স্থল। কাশট ইহাও বলেন যে, যাহাকে আমরা বদ্ধি বলি, অর্থাৎ যে শক্তির দ্বারা আমরা প্রত্যক্ষাদি হইতে প্রাপ্ত জ্ঞান লইয়া বিচার করি, তাহার অপেক্ষা উচ্চতর আমাদের আর এক শক্তি আছে। যাহা বিচারে অপ্রাপ্য, সেই শক্তির প্রভাবে আমরা তাহা জানিতে পারি। ঈশ্বর, আত্মা, এবং জগতেব একত্ব সম্প্ৰবন্ধীয় জ্ঞান আমরা সেই মহতী শক্তি হইতে পাই। এই ‘Transcendental Philosophy’, সকববাদিসক্ষমত নহে। অতএব এমন লোক অনেক আছেন যে, আত্মার অস্তিত্ব ও অবিনাশিতায় বিশ্বাস তাঁহাদের পক্ষে দলভ। তবে যাহা আমার জ্ঞান ও বিশ্বাসমতে সত্য, তাহা আমি এখানে বলিতে বাধ্য। আমার নিজের বিশ্বাস এই যে, চিত্তব্বত্তি সকল সমচিত মাতিজািত হইলে, আত্মসমন্বন্ধীয় এই জ্ঞান স্বতঃসিদ্ধ হয়।* ভক্তের এ সকল কচকচিতে কোন প্রয়োজন নাই। ঈশ্বরভক্তি কেবল ক্ষদ্র দর্শনশাস্ত্রের উপর নিভাির করিয়া, আত্মার সর্বাতন্ত্র্য বা অবিনাশিত সম্ববীকার করেন না। ভক্তের পক্ষে ইহাই যথেস্ট যে, ঈশ্বর আছেন, এবং তিনি স্বয়ং বলিয়াছেন যে, তিনিই পরমাত্মা এবং স্বয়ংই সব্বভুতে অবস্থান করিতেছেন। তবে যে এই দীঘ বিচারে প্রবত্ত হইলাম, তাহার কারণ এই যে, অনেকে অসম্পণে বিজ্ঞানের আশ্রয় গ্রহণ করিয়া আত্মতত্ত্বকে উপহাসিত করেন। তাঁহাদের জানা উচিত যে, আত্মতত্ত্ব পাশ্চাত্ত্য বিজ্ঞানের অতীত হউক, বিজ্ঞানবিরাদ্ধ নহে। দেহিনাহসিমন যথা দেহে কৌমারং যৌবনং জরা। তথা দেহান্তরপ্রাপ্তিধীরস্তাত্ৰ ন মহ্যাতি ৷৷ ১৩ ৷৷ দেহীর যেমন এই দেহে কৌমার ও যৌবন ও বাদ্ধক্য, তেমনি দেহান্তর-প্রাপ্তি। পন্ডিত তাহাতে মথন্ধ হন না। ১৩ । গীতোক্ত প্রথম প্রধান তত্ত্ব, আত্মার অবিনাশিত। এই শ্লোকে দ্বিতীয় প্রধান তত্ত্ব কথিত হইতেছে-জন্মান্তরবাদ। যেমন এই দেহেতেই আমাদিগকে ক্রমশঃ কৌমার, যৌবন, জরা ইত্যাদি অবস্থান্তর প্রাপ্ত হইতে হয়, তেমনি দেহান্তে দেহান্তরপ্রাপ্তি অবস্থান্তরপ্রাপ্তি মাত্র। অর্থাৎ মাতুত্যু কেবল অবস্থান্তর মাত্র, যেমন কৌমার গেলে যৌবন উপস্থিত হয়, যৌবন গেলে জরা উপস্থিত হয়, তেমনি এ দেহ যায়, আর এক দেহ আসে;-যেমন কৌমার গিয়া যৌবন আসিলে কেহ শোক করে না, যৌবন গিয়া জরা আসিলে কেহ শোক করে না, তেমনি এ দেহ গেলে দেহান্তরপ্রাপ্তির বেলাই বা কেন শোক করিব ? এই কথায় মানিয়া লওয়া হইল যে, মরিলেও আবার জন্ম আছে। আত্মার অবিনাশিত যেমন হিন্দধমের প্রথম তত্ত্ব, জন্মান্তরবাদ তেমনি দ্বিতীয় তত্ত্ব। কিন্তু আত্মার অবিনাশিতা যেমন খীন্টিয়াদি অন্যান্য প্রধান ধশ্চেম স্বীকৃত, জন্মান্তরবাদ সেরাপ নহে। পক্ষান্তরে জন্মান্তরবাদ যে কেবল হিন্দধম্মেমই আছে, এমনও নহে। বৌদ্ধধমেরও ইহা প্রধান তত্ত্ব, এবং

  • অনেকে বলবেন, তবে কি Huxley, Tyndal প্রভৃতির মত লোকের চিত্তব্বত্তি সকল সমচিত মাতিজাত হয় নাই? উত্তর-না, সকলগলি হয় নাই।

(AOS