পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बाश्कत्र ब्रष्नाबव्ी কালের তুলনায় কিছই নহে। অবিচার ও নির্শঠরতার লাঘব হইল, এমন হইতে পারে, অভাব হইল না। অতএব তুমি যদি সবগ নরক স্বীকার কর, তবে তোমাকে অবশ্য স্বীকার করিতে হইবে যে, অনন্ত কালের জন্য সবগ নরক ভোগ বিহিত হইতে পারে না। তুমি উদ্ধর্ব ইহাই বলিতে পার যে, পাপ পণ্যের পরিমাণানযায়ী পরিমিত কাল জীব সবগ বা নরক বা পৌবাপয্যের সহিত উভয় লোক ভোগ করবে। তাহা হইলে সেই সাবেক প্রশনটির উত্তর বাকি থাকে। সেই পরিমিত কালের অবসানে জীবাত্মা কোথায় যাইবে ? পরব্রহ্মে লীন হইতে পারে না; কেন না, জ্ঞান কম্পমাদিই যদি মাক্তির উপায়, তবে সবগ নরকে সে উপায়ের সাধনাভাবে মাক্তি অপ্রাপ্য। কেন না, সবগ নরক ভোগ মাত্র-কম্পমাক্ষেত্রে নহে, এবং দেহশান্য আত্মার জ্ঞানেন্দ্রিয় ও কম্মেমন্দ্ৰিয়ের অভাবে, সবগ নরকে জ্ঞান কম্পেমাির অভাব। অতএব এখনও জিজ্ঞাস্য, সেই পরিমিত কালের অবসানে জীবাত্মা কোথায় যায় ? হিন্দীশাস্ত্র এ প্রশেনর উত্তরে বলে,—জীবাত্মা তখন জীবলোকে প্রত্যাগমন করিয়া দেহান্তব ধারণ করে। হিন্দধমেমরি, বিশেষতঃ এই গীতোক্ত ধৰ্ম্মেমরি এই অভিপ্ৰায় যে, জীবাত্মা সচরাচর দেহধবংসের পর দেহান্তর প্রাপ্ত হইয়া পনেকবার জন্মগ্রহণ করে। সেই দেহান্তর-প্রাপ্তিতে কৰ্ম্মফলানসারে এবং পাপপণ্যের তারতম্যানসারে সদসং যোনি প্রাপ্ত হয়। সচরাচর কৰ্ম্মফল ভোগ জন্মান্তরেই হইয়া থাকে, কিন্তু কতকগলি কৰ্ম্ম এমন আছে যে, তাহার ফলে সবগপ্রাপ্তি হইতে পারে, আর কতকগলি কক্ষম এমন আছে যে, তাহার ফলে নরক ভোগ করিতে হয়। যে সেরাপ কৰ্ম্ম করিয়াছে, তাহাকে সবগে বা নরকে যাইতে হইবে। কম্পেমর ফলের পরিমাণানযায়ী কালই সবগ বা নরক ভোগ করিবে, তাহার পর আবার জীবলোকে আসিয়া জন্মগ্রহণ করিবে । কিন্তু যে ব্যক্তি জন্মান্তর মানে না, তাহার সকল আপত্তির এখনও নিরাস হয় নাই। সে বালিবে, “যাহা বলিলে, এটা সাফ আন্দাজি কথা। অনন্ত সবগ নরক ভোগ অসঙ্গত কথা স্বীকার করি। সবগ ও নরক। আমি আদৌ মানিতেছি না। কেন না, তাহার প্রমাণাভাব। কিন্তু সবগ নরক না মানিলেই জন্মান্তর মানিব কেন ? মানিলাম যে, আত্মা অবিনাশী। তুমি বলিতেছ যে, অবিনাশী আত্মা, যদি দেহান্তরে না যায়, তবে কোথায় যাইবে ? আমি উত্তরে বলিব, কোথায় যায়, তাহা জানি না। পরকালের কথা কিছই জানি না। যাহা জানি না, যাহার প্রমাণাভাব, তাহা মানিব না। জন্মান্তরের প্রমাণ দাও, তবে মানিব। গত্যন্তরের প্রমাণাভাব, জন্মান্তরের প্রমাণ নয়। তুমি যে রামও নও, শ্যামও নও, তাহতে প্রমাণ হইতেছে না যে, তুমি যাদব কি মাধব। জন্মান্তর যে হইয়া থাকে, তাহার প্রমাণ কি ?” কথা বড় শক্ত। জন্মান্তরবাদীরা এ বিষয়ে যে সকল প্রমাণ দিয়া থাকেন বা ইচ্ছা করিলে দিতে পারেন, তাহা আমি যথাসাধ্য নিম্পেন্ন সংগ্ৰহ করিলাম। ১ । এ দেশে সচরাচর লোকের অদম্পট-তারতম্য দেখাইয়া এই মত সমর্থন করা হয়। কেহ। বিনা দোষে দঃখী; কেহ সহস্ৰ দোষ করিয়াও সখী, এ দেশীয়গণ জন্মান্তরের সরকৃত দম্প্রকৃত ভিন্ন এরপ বৈষম্যের কিছ কারণ দেখেন না। লোকান্তরে অর্থাৎ সবগ নরকে সকৃতের পরিস্কার ও দস্কৃিতের দন্ড হইবে, এ কথা বলিলে ইহলোকের অদষ্ট-বৈষম্য সম্পপণ্য রাপে বিকা যায় না। কেহ আজন্ম দঃখী, অন্নহীনের ঘরে জন্মিয়াছে; কেহ আজন্ম সখী, রাজার একমাত্র পত্র-জন্মকালেই এ অদম্পট-তারতম্য কেন ? যদি ইহা জীবের কৰ্ম্মফল হয়, তবে ইহজন্মের কৰ্ম্মফল নহে; কেন না, সদ্যঃপ্ৰসত শিশর ত কিছই ইহজলমকৃত কৰ্ম্মম নাই। কাজেই তাঁহারা এখানে পৰিবািজলমকৃত কম্পমফিল বিবেচনা করিয়া থাকেন। আপত্তিকারক এ বিচারে সত্তুল্ট হইবেন না। মনে কর, তিনি বলিবেন, “সকলই কি কৰ্ম্মফল ? যদি তাই হয়, তবে মাতুকেও কৰ্ম্মফল বলিতে হইবে। কিন্তু কখনও কোন জীব মাতু্য হইতে নিম্প্রকৃতি পায় নাই। অতএব ইহাই সিদ্ধ যে, এমন কোন কৰ্ম্ম বা অকস্ম নাই, যন্দ্বারা মাতৃত্যু হইতে রক্ষা হইতে পারে। অতএব মহত্যু কৰ্ম্মফল হইতে পারে না। মতু্য যদি কৰ্ম্মফল না হইল, তবে জন্মই বা কৰ্ম্মফল বলিব কেন ? যাহা কৰ্ম্মফল, যাহা কন্মফল নহে, সকলই ঈশ্বরের নিয়মে ঘটে। ইহাও তাই। দম্পতি-সংসগে অবস্থাবিশেষে পত্র জন্মে; রাজার ঘরেও জন্মে, মটের ঘরেও জন্মে। ইহাও তাই ঘাঁটিয়াছে। এমন স্থলে জাত ব্যক্তির কৰ্ম্মফল খজিব কেন ?” sa. OS