পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী পব্বে কথিত হইয়াছে যে, আত্মজ্ঞানীদিগের কৰ্ম্ম নাই। এক্ষণে কথিত হইতেছে যে, কলাম না থাকিলেও তাঁহাদের কলম করা কত্তব্য। কেন না, তাঁহারা। কৰ্ম্মম না করিলে সাধারণ বিরত হইবে। কম হইতে বিরত হইলে সব সব ধৰ্ম্মম হইতে বিচুত হইবে। অতএব সকলেরই কম করা কত্তব্য। ভারতবষের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা জ্ঞানমাগাবলম্বী ছিলেন। জ্ঞানমাগাবলম্বীর কৰ্ম্মম নাই, ইহা স্থির করিয়া তাঁহারা কম্পেমা বীতশ্রদ্ধ ছিলেন। এবং সেই দম্পটান্তের অন্যবিত্তী হইয়া সমস্ত ভারতবৰ্ষই কম্মেম অন্যরাগশন্য, সতরাং অকম্পমা লোকের দ্বারা পরিপািণ হইয়া এই অধঃপতন দশা প্রাপ্ত হইয়াছে। ভগবান উপরি লিখিত যে মহাবাক্যের দ্বারা কম্পম্যবাদ ও জ্ঞানবাদের সামঞ্জস্য বা একীকরণ করিলেন, ভারতবষীয়েরা তাহা সমরণ রাখিলে, তদনবিত্তী হইয়া কৰ্ম্ম করিলে, জ্ঞান ও কলম উভয়ই তাঁহাদের তুল্যরাপে উদ্দেশ্য হইলে, তাঁহারা কখনই আজিকার দিনের সভ্যতার জাতি হইতে নিকৃষ্টদশাগ্রস্ত হইতেন না-পরাধীন, পরম খাপেক্ষী, পরজাতিদত্তশিক্ষাবিপদগ্ৰস্ত হইতেন না। শ্ৰীকৃষ্ণ বে। কেবল এই গীতাতেই কম্পেমর মহিমা কীত্তিত করিয়াছেন, এমত নহে; মহাভারতে উদ্যোগপৰোব সঞ্জয়যানপৰবাধ্যায়েও তিনি ঐরাপ করিয়াছেন। তাহা গ্রন্থান্তরে উদ্ধত পরিষাছি, এখানেও উদ্ধত করিলাম :- “শচি ও কুটবপরিপালক হইয়া বেদাধ্যয়ন করতঃ জীবন যাপন করিবে, এইরপে শাস্ত্ৰনিদিলেট বিধি বিদ্যমান থাকিলেও ব্রাহ্মণগণের নানাপ্রকার বদ্ধি জন্মিয়া থাকে। কেহ কম্পমােবশতঃ, কেহ বা কৰ্ম্মম পরিত্যাগ করিয়া একমাত্র বেদজ্ঞান দ্বারা মোক্ষলাভ হয়, এইরপ স্বীকার করিয়া থাকেন। কিন্তু যেমন ভোজন না করিলে তৃপ্তি লাভ হয় না, তদুপ কৰ্ম্মানন্ঠান না করিলে কেবল বেদজ্ঞ হইলে ব্ৰাহ্মণগণের কদাচ মোক্ষ লাভ হয় না। যে সমস্ত বিদ্যা দ্বারা কৰ্ম্মম সংসাধন হইয়া থাকে, তাহাই ফলবতী; যাহাতে কোনও কম্পমানন্ঠানের বিধি নাই, সে বিদ্যা নিতান্ত নিৰ্ম্মফল। অতএব যেমন পিপাসাত্ত ব্যক্তির জল পান করিবা মাত্র পিপাসা শান্তি হয়, তদুপ। ইহকালে যে সকল কম্পেমর ফল প্রত্যক্ষ হইয়া থাকে, তাহারই অনন্ঠান করা কত্তব্য। হে সঞ্জয়! কামবশতঃই এইরুপ বিধি বিহিত হইয়াছে, সতরাং কৰ্ম্মই সৰবপ্রধান। যে ব্যক্তি কৰ্ম্ম অপেক্ষা অন্য কোনও বিষয়কে উৎকৃষ্ঠািট বিবেচনা করিয়া থাকে, তাহার সমস্ত কম্পমাই নিস্ফল হয় । “দেখ, দেবগণ কলম বলে প্রভাবসম্পন্ন হইয়াছেন। সমীরণ কম বলে সতত সঞ্চারণ করিতেছেন; দিবাকর কৰ্ম্মম বলে আলস্যশান্য হইয়া অহোরাত্র পরিভ্রমণ করিতেছেন ; চন্দ্রমা কৰ্ম্মম বলে নক্ষত্রমন্ডলীপরিবত হইয়া মাসাদ্ধ উদিত হইতেছেন ; হতাশন কৰ্ম্ম বলে প্ৰজাগণের কৰ্ম্মম সংসাধন করিয়া নিরবচ্ছিন্ন উত্তাপ প্ৰদান করিতেছেন ; পথিবী কম বলে নিতান্ত দােভর ভার অনায়াসেই বহন করিতেছেন; স্রোতস্বতী সকল কৰ্ম্মম বলে প্রাণিগণের তৃপ্তি সাধন করিয়া সলিলরাশি ধারণা করিতেছে। অমিতবলশালী দেবরাজ ইন্দ্র দেবগণের মধ্যে প্রাধান্য লাভ করিবার নিমিত্ত ব্ৰহ্মচয্যের অনষ্ঠান করিয়াছিলেন। তিনি সেই কৰ্ম্মবলে দশ দিক ও নভোমণডাল হইতে বারি বষণা করিয়া থাকেন এবং অপ্ৰমত্তচিত্তে ভোগাভিলাষ বিসঙ্গজনি ও প্রিয় বস্তুসমন্দিয় পরিত্যাগ করিয়া শ্রেষ্ঠত্ব লাভ এবং দম, ক্ষমা, সমতা, সত্য ও ধৰ্ম্মম প্রতিপালনপািৰবাক দেবরাজ্য অধিকার করিয়াছেন। ভগবান বহিস্পতি সমাহিত হইয়া ইন্দ্ৰিয় নিরোধনপৰ্ব্বক ব্ৰহ্মচয্যের অনষ্ঠান করিয়াছিলেন, এই নিমিত্ত তিনি দেবগণের আচাৰ্যাপদ প্রাপ্ত হইয়াছেন। রদ্র, আদিত্য, যম, কুবের, গন্ধান্ব, যক্ষ, অপসার, বিশ্বাবস্য ও নক্ষত্ৰগণ কৰ্ম্ম প্রভাবে বিরাজিত হেয়ছেন মহর্ষিগণ ব্রহ্মবিদ্যা, ব্ৰহ্মচৰ্য্য ও অনানা ক্রিয়াকলাপের অনুষ্ঠান করিয়া শ্রেষ্ঠত্ব লাভ আত্মজ্ঞানী ব্যক্তিদিগেরও কৰ্ম্ম করা কত্তব্য, ইহা বলিয়া ভগবান কৰ্ম্মপরায়ণতার মাহাত্মা আরও পরিসফট করিবার জন্য নিজের কথা বলিতেছেন :- ন মে পার্থস্তি কৰ্ত্তব্যং ত্ৰিষ লোকেষ কিঞ্চন। নানবাপ্তিমবাপ্তব্যং বৰ্ত্ত এবা চ কম্পমণি ৷৷ ২২৷৷ যদি হ্যহং ন বৰ্ত্তেয়ং জাতু কমাণ্যতন্দ্রুিতঃ। মম বৰ্ম্মানবেত্তন্তে মনীষাঃ পাৰ্থ সব্বশীঃ ৷৷ ২৩ ৷৷ A Gyo