পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীমদ্ভগবদগীতা এই পৰ্য্যায়ের তাৎপৰ্য্য এই যে, প্রকৃতি হইতে মহৎ, মহৎ হইতে অহঙ্কার, অহঙ্কার হইতে পঞ্চ তন্মাত্র ও একাদশ ইন্দ্ৰিয়; পঞ্চ তন্মাত্র হইতে স্থলে ভূত। পরিষ পরমাত্মা। এই পৰ্য্যায়ানসারে স্থলে ভূত (ক্ষিত্যাদি, সতরাং পাণ্ডভৌতিক দেহাদি) হইতে ইন্দ্রিয় শ্ৰেহ্মঠ। এখানে মন ইন্দ্রিয় হইতে পথিক ; কিন্তু সাংখ্যমতানসারে মন ইন্দ্রিয় হইলে অন্যান্য ইন্দ্ৰিয় হইতে শ্রেষ্ঠ; কেন না, অন্যগলি বহিরিান্দ্ৰিয়; দ্বিতীয় গণ, অহঙ্কারকে বিজ্ঞানভিক্ষ সাংখ্যপ্রবচনভাষ্যে বদ্ধি বলিয়াছেন। অতএব বদ্ধি মন হইতে শ্রেষ্ঠ । কিন্তু এমন বলিতে পারা যায় না, এই সাংখ্যদর্শন গীতাপ্রণয়নকালে জন্মগ্রহণ করিয়াছিল। তবে গীতাপ্রণয়নকালে ইহা হইতে ভিন্ন প্রকার সাংখ্যমত প্রচলিত ছিল, তাহার প্রমাণ গীতাতেই আছে। তাহারই সম্প্রসারণে কপিল-প্রচারিত সাংখ্য। গীতার সপ্তমাধ্যায়ের চতুর্থ শ্লোকে এই রােপ গণ কথিত হইয়াছে— ভূমিরাপোহনলো বায়ঃ খং মনো বদ্ধিৱেব চ। অহঙ্কার ইতীয়ং মে ভিন্না প্রকৃতিরস্টধা ৷৷ ৪ ৷৷ আটটি মাত্র গণ কথিত হইল; পাঁচটি স্থল ভূত, মন, বদ্ধি এবং অহঙ্কার। শংকরাচার্য। বলেন, পঞ ভূতের গণনাতেই পঞ্চ তন্মাত্র এবং ইন্দ্ৰিম সকলের গণনা হইল বঝিতে হইবে।” আর পাঠক ইহাও দেখিবেন যে, ভগবান বলিতেছেন যে, এই আট প্রকার আমার প্রকৃতি । অতএব কাপিল সাংখ্যের সঙ্গে এ মতের প্রভেদও অতি গরতর। যাহা হউক, শ্লোকোক্ত পারস্পপৰ্য্য কতক বঝা গেল। কিন্তু বদ্ধির আর একটি অর্থ আছে। নিশ্চয়াত্মিকা অন্তঃকরণবাত্তিকে বদ্ধি বলা যায়। এই অৰ্থে বদ্ধি শব্দ যে গীতাতেই ব্যবহৃত হইয়াছে, তাহা দ্বিতীয় অধ্যায়ে দেখিয়াছি। শ্লোকের অবশিস্টাংশ বঝিবার জন্য এই তথ্য স্মরণ করিতে হইবে। ইন্দ্রিয়দমনের উপায়। কথিত হইতেছে। অন্য সমস্ত অন্তঃকরণপ্রবত্তি হইতে শ্রেষ্ঠ যে এই নিশ্চয়াত্মিক বত্তি, পরমাত্মা তাহা হইতে শ্রেষ্ঠ। এখন ৪৩ শ্লোক সহজে বঝিব। এই নিশ্চয়াত্মিকা বদ্ধির দ্বারা সেই পরমাত্মাকে বঝিয়া, আপনাকে নিশাচল করিয়া কামকে পরাজিত করিতে হইবে। ইহার অপেক্ষা ইন্দ্রিয়জয়ের উৎকৃষ্ণাট উপায় আর কোথাও কখন কথিত হইয়াছে, এমন জানি না | ইতি মহাভারতে শতসাহস্র্যাং সংহিতায়াং বৈয়াসিক্যাং ভীমপব্বণি শ্ৰীমদ্ভগবদগীতাসপনিষৎস ব্রহ্মবিদ্যায়াং যোগশাস্ত্রে কলমযোগো নাম তৃতীয়োহ ধ্যাযঃ ।

  • অপি চ ত্রয়োদশ অধ্যায়ে ৫ । ৬ শ্লোকে বলিতেছেন,

মহাভূতানাহঙ্কারো বদ্ধির ব্যক্তিমেব চ। ইন্দ্ৰিয়াণি দশৈকঞ পণ্ড চেন্দ্ৰিয়গোচরাঃ ৷ ৫ ৷৷ ইচ্ছা দ্বেষঃ সখং দঃখং সংঘাতশোচতনা ধতিঃ । এতৎ ক্ষেত্ৰং সমাসেন সবিকারমদাহৃতম ৷৷ ৬ ৷৷ ইহাতে কাপিল সাংখ্যোর ১৩টি গণ আছে, মন ও আত্মা, আরও সাতটি আছে। ইহা গণ বা পদার্থ বলিযা কথিত হইতেছে না; সমস্ত জগৎকে এই কয় শ্রেণীতে বিভক্ত করিবার উদ্দেশ্য নাই। অতএব কপিল সাংখ্য নহে; বরং কপিল সাংখ্যের মােল এইখানে আছে, এমন কথা বলা যাইতে পারে। বেদান্তসার-২৮ ৷ ” সভ্যসমাজে মনষ্যের একটি ইন্দ্ৰিয় এত প্রবল দেখা যায় যে, “ইন্দ্রিীয়দোষ” বলিলে সেই ইন্দ্ৰিয়ের দোেষই বকায়। ইহার প্রাবল্য নিবারণের উপায় অনেকে জিজ্ঞাসা করিয়া থাকেন, অনেকে জিজ্ঞাসা হইয়াও লতজার অন্যারোধে প্রশন করিতে পারেন না। অনেকে এমনও আছেন যে, ঈশ্বরে বিশ্বাসহীন বা তাঁহাকে নিশ্চয়াত্মিক বদ্ধির দ্বারা ধারণ করিতে অক্ষম। অতএব ইন্দ্রিয়দমনের ক্ষদ্রতর যে সকল উপায় আছে, उाशा निष्म व्थिऊ श्रुंव्न । (১) শারীরিক ব্যায়াম। ইহাতে শারীরিক ও মানসিক উভয়বিধ সহবাস্থ্য সাধিত হয়। শারীরিক ও মানসিক উভয়বিধ স্বাস্থ্য থাকিলে ইন্দ্ৰিয়ের দািষণীয় বেগ জন্মিতে পারে না। (২) আহারের নিয়ম। উত্তেজক পানাহার পরিত্যাগ করবে। মদ্যাদি বিশেষ নিষেধ। মৎস্য, মাংস একেবারে নিষেধ করা যায় না; বিশেষতঃ মংস্যের অনেক সদগণ আছে; কিন্তু মৎস্য ইন্দুিয়ের বিশেষ a VG