পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী বাঝান হইয়াছে, তাহাঁই বাবাইতেছি। পাঠকের সমরণ থাকিতে পারে যে, তৃতীয় অধ্যায়ের ৪২ শ্লোকের টীকায় আমরা গীতার সপ্তম অধ্যায় হইতে এই শ্লোকটি উদ্ধত করিয়াছিলাম,- ভূমিরাপোহনলো বায়ঃ খং মনো বদ্ধিরেব চ। অহঙ্কার ইতীয়ং মে ভিন্ন প্রকৃতিরস্টধা ৷৷ ৪ ৷৷ ভূমি, জল, অগ্নি, বায়, আকাশ, মন, বদ্ধি, অহঙ্কার, আমার ভিন্ন ভিন্ন অল্ট প্রকার প্রকৃতি ।। ৪। ইহা বলিয়াই বলিতেছেন অপরোয়মিতসত্বন্যাং প্রকৃতিং বিদ্ধি মে। পরাং। জীর্বভূতাং মহাবাহো যয়েদং ধাৰ্য্যতে জগৎ ৷৷ ৫ ৷৷ ইহা আমার অপরা বা নিকৃতটা প্রকৃতি ; আমার পরা বা উৎকৃষ্ট প্রকৃতিও জােন। ইনি জীবভূতা, এবং ইনি জগৎ ধারণা করিয়া আছেন। ৫ । তবে ঈশ্বরের যে শক্তি জীবস্বরপা, এবং যাহা জগৎকে ধারণা করিয়া আছে, তাহাই তাঁহার পরা প্রকৃতি বা মায়া। আপনার জীবসম্বরপা এই শক্তিতে ভগবান জীবসন্টি করিয়াছেন, সেই শক্তিকে বশীভূত করিয়া আপনার সর্বত্বকে জীবরাপী করিতে পাবেন। ঈশ্বর শরীর ধারণপাকবািক অবতীর্ণ হইতে পারেন না, ইহার বিচার নিম্প্রয়োজন , কেন না, তিনি ইচ্ছাময় ও সব্বশক্তিমান-পারেন না, এমন কথা বলিলে তাঁহার শক্তির সীমা নিৰ্দেশ করা হয়। ঈশ্বর শরীরী হইয়া অবতীর্ণ হওয়া সম্ভব কি না, সে সর্বতন্ত্ৰ কথা। তাহার বিচ'র আমি গ্রন্থান্তরে যথাসাধ্য করিয়াছি—পােনরীক্তির প্রযোজন নাই। আর শরীর ধারণপাকবািক ঈশ্বর অবতীণ হওয়ার কোন প্রয়োজন আছে কি না, ভগবান নিজেই পরশ্লোকদ্বযে তাহা বলিতেছেন। যদা যদা হি ধৰ্ম্মমস্য গ্রানিভবতি ভারত। অভু্যত্থানমধৰ্ম্মস্য তদাত্মানং সােজাম্যহম ৷৷ ৭ ৷৷ পরিত্রাণায় সাধনাম বিনাশায় চ দণ্ডকৃতাম । ধৰ্ম্মসংস্থাপনাথায় সম্ভব।ামি যাগে যাগে ৷৷ ৮ ৷৷ যে যে সময়ে ধৰ্ম্মেমরি ক্ষীণতা এবং অধমের অভু্যত্থান হয়, আমি সেই সেই সমযে আপনাকে সজন করি ৷ ৭ ৷৷ সাধাগণের পরিত্রাণহেতু, দাম্প্রকৃতকারীদিগের বিনাশাথ এবং ধৰ্ম্মম সংস্থাপনাথ আমি যাগে যাগে জন্মগ্রহণ করি ৷ ৮ ৷৷ জন্ম কৰ্ম্মম চ মে দিব্যমেবং যো বেত্তি তত্ত্বতঃ। ত্যক্তৰা দেহং পানজন্ম নৈতি মামেতি সোহজন৷ ৯ ৷৷ হে অজ্ঞজন!! আমার জন্ম কৰ্ম্ম দিব্য। ইহা যে তত্ত্বতঃ জ্ঞাত হয়, সে পািনজজন্ম প্রাপ্ত হয় না-আমাকে প্রাপ্ত হয় ৷ ১ ৷৷ দিব্য অর্থে “অপ্ৰাকৃত”, “ঐশ্বর" বা “অলৌকিক”। ভগবানের মানবিক জন্ম কৰ্ম্মম তত্ত্বতঃ জানিলে মোক্ষলাভ হইবে কেন ? আমি কৃষ্ণচরিত্রবিষয়ক গ্রন্থে এইরূপ বঝাইয়াছি যে, মনষ্যিত্বের আদশ প্রকাশের জন্য ভগবানের মানবদেহ ধারণ। অন্য উদ্দেশ্য সম্ভবে না। আদশ মনষ্যে, আদর্শ কর্মী। অতএব কৰ্ম্মযোগীর পক্ষে আদশ কম্পমীর কলম তত্ত্বতঃ বাবা আবশ্যক। তদ্ব্যতীত কলমযোগ অন্ধকারে লোম্পট্ৰক্ষেপ { যদি ইহা না। স্বীকার করা যায়, তবে কলমযোগ কথনকালে এই অবতারতত্ত্ব উত্থাপনের কোনও প্রয়োজন দেখা যায় না। যিনি ভগবানের আদর্শকলিমািত্ব বঝিতে চেন্টা করিবেন, তিনি কৃষ্ণচরিত্র গ্রন্থ বিস্তারশঃ পাঠ করিলে বঝিতে পরিবেন। আর একটা অৰ্থ না হয়, এমন নহে। যাহাকে দার্শনিকেরা জ্ঞানমাগ কহেন, তাহার অর্থ এইরূপ প্ৰসিদ্ধ, ব্ৰহ্মজ্ঞানই মাক্তির পথ। ব্ৰহ্মকে জানিতে হইবে, কিন্তু ব্ৰহ্ম কি ? ব্ৰহ্ম নিরাকার, নিরঞ্জন, অপরিচ্ছিন্ন নিত্য, শব্দ্ধমত্ত । সত্য, জ্ঞান ও আনন্দস্বরাপ। এই ব্ৰহ্মকে জানিলেই মাক্তিলাভ হয়। কিন্তু অবতীর্ণ এবং শরীরবিশিষ্ট যে ঈশ্বর, তাঁহাকে নিরাকার ইত্যাদি বলা যাইতে পারে না। তবে কি অবতীর্ণ

  • কৃষ্ণচরিত্র, প্রথম খগেন্ড। * এই সকলের কথাও আমি কৃষ্ণচরিত্রের প্রথম খন্ডে বিচার করিয়াছি। পািনরক্তি অনাবশ্যক।

Գ \g էք