পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰচিকিম রচনাবলী অর্থাৎ কদাচিৎ ধর্মের সংস্কারক দেখা যায়, কোথাও ধন্মের স্রষ্টা দেখা যায় না। সন্ট ধৰ্ম্ম নাই; সকল ধৰ্ম্মমই পরম্পরাগত, কদাচিৎ বা সংস্কৃত। বৈজ্ঞানিকদিগের মধ্যে এমনই একটা প্রশন আছে-পথিবীতে জীব কোথা হইতে আসিল ? যদি বলা যায়, ঈশ্বরেচ্ছায় বা ঈশ্বরের সন্টিক্রমে পথিবীতলে জীবসঞ্চার হইয়াছে, তাহা হইলে বিজ্ঞান বিনন্ট হইল। কেন না, সকলই ঈশ্বরেচ্ছায় ঘাঁটিয়াছে; সকল বৈজ্ঞানিক প্রশেনর এই উত্তর দিয়া অনসন্ধান সমাপন করা যাইতে পারে। অতএব কি জীবোৎপত্তি কি ধক্ষেমাৎপত্তি সম্পবন্ধে te ऐछद्ध मिल bक्लब ना। কেন না, ধৰ্ম্মোৎপত্তিও বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব। ইহারও অন্যসন্ধান বৈজ্ঞানিক প্রথায় করিতে হইবে। বৈজ্ঞানিক প্রথা এই যে, বিশেষের লক্ষণ দেখিয়া সাধারণ লক্ষণ নির্দেশ করিতে হয়। ইউরোপীয় পন্ডিতেরা অনেকেই এই প্রণালী অনসারে ধমের উৎপত্তির অন্যসন্ধান করিয়াছেন। কিন্তু নানা মানির নানা মত। কাহারও মত এমন প্রশস্ত বলিয়া বোধ হয় না যে, পাঠককে তাহা গ্রহণ করিতে অনরোধ করিতে পারি। আমি নিজে যাহা কিছু বঝি পাঠকদিগকে অতি সংক্ষেপে তাহার মামােৰ্থ বৰঝাইতেছি। ধৰ্ম্মেমর উৎপত্তি বঝিতে গেলে সভ্য জাতির ধম্মের মধ্যে অন্যাসন্ধান করিলে কিছ পাইব না। কেন না, সভ্য জাতির ধৰ্ম্মম পরাতন হইয়াছে, সে সকলের প্রথম অবস্থা আর নাই, প্রথমাবস্থা নাহিলে আর কোথাও উৎপত্তি লক্ষণ দেখিতে পাওয়া যায় না। গাছ কোথা হইতে হইল, অঙ্কুর দেখিলে বঝা যায়; প্রকাশন্ড ব্যক্ষ দেখিয়া বঝা যায় না। অতএব অসভ্য জাতিদিগের ধর্মের সমালোচনা করিয়া ধৰ্ম্মেমরি উৎপত্তি বসবাই ভাল। এখন, মনয্যে যতই অসভ্য হৌক না কেন, একটা কথা তাহারা সহজে বঝিতে পারে। বঝিতে পারে যে, শরীর হইতে চৈতন্য একটা পথক সামগ্রী। এই একজন মানষে চলিতেছে, খাইতেছে, কথা কহিতেছে, কাজ করিতেছে। সে মরিয়া গেল, আর সে কিছই পাইল না। তাহার শরীর যেমন ছিল, তেমনই আছে, হস্তপদাদি কিছরই অভাব নাই, কিন্তু সে আর কিছই করিতে পারে না। একটা কিছ তার আর নাই, তাই আর পারে না। তাই অসভ্য মনষ্যে বঝিতে পারে যে, শরীর ছাড়া জীবে আর একটা কি আছে, সেইটার বলে জীবত্ব, শরীরের বলে জীবত্ব নহে। সভ্য হইলে মনষ্য ইহার নাম দেয়, “জীবন” বা “প্ৰাণ” বা আর কিছ। অসভ্য মনষ্যে নাম দিতে পারকে না পারক, জিনিষটা ববিদ্যা লয়। বঝিলে দেখিতে পাবে যে, এটা কেবল জীবেরই আছে, এমত নহে, গাছ পালারও তাছে। গাছ পালাতেও এমন একটা কি আছে যে, সেটা যত দিন থাকে, তত দিন গাছে ফল ধরে, পাতা গজায়, ফল ধরে, সেটার অভাব হইলেই আর ফল হয় না, পাতা হয় না, ফল হয় না, গাছ শিকাইয়া যায়, মরিয়া যায়। অতএব গাছ পালারও জীবন আছে। কিন্তু গাছ পালার সঙ্গে জীবের একটা প্রভেদ এই যে, গাছ পালা নড়িয়া বেড়ায় না, খায় না, গলায় শব্দ করে না, মারপিট লড়াই বা ইচ্ছাজনিত কোন ক্রিয়া করে না। অতএব অসভ্য মনষ্যে জ্ঞানের সোপানে আর এক পদ উঠিল। দেখিল, জীবন ছাড়া জীবে আর একটা কিছু আছে, যাহা গাছ পালায় নাই। সভ্য হইলে তাহার নাম দেয়, “চৈতন্য”। অসভ্য নাম দিতে পারকে না পারক, জিনিষটা বঝিয়া লয়। আদিম মনষ্যে দেখে যে, মানষি মরিলে, তাহার শরীর থাকে-অন্ততঃ কিয়ৎক্ষণ থাকে, কিন্তু চৈতন্য থাকে না। মানষে নিদ্রা যায়, তখন শরীর থাকে, কিন্তু চৈতন্য থাকে না। মচ্ছাদি রোগে শরীর থাকে, কিন্তু চৈতন্য থাকে না। তখন সে সিদ্ধান্ত করে যে, চৈতন্য শরীর ছাড়া একটা স্বতন্ত্র বস্তু। এখন অসভ্য হইলেও, মনয্যের মনে এমন কথাটা উদয় হওয়ার সম্ভাবনা যে, এই শরীর হইতে ড়ৈ","ঢ় থকা বস্তু হইল, তবে শরীর না থাকিলে এই চৈতন্য থাকিতে পারে কি না? थंद का का ? মনে করিতে পারে, মনে করে, থাকে বৈ কি ? সাবপ্নে দেখি ; সবপ্নে শরীর এক স্থানে রহিল, কিন্তু চৈতন্য গিয়া আর এক স্থানে দেখিতেছে, বেড়াইতেছে, সখে-দঃখ ভোগ করিতেছে, নানা কাজ করিতেছে। ভূত আছে, এ কথা স্বীকার করিবার আমাদের প্রয়োজন নাই, কিন্তু সভ্য কি অসভ্য মনীয্য কখন ভূত দেখিয়া থাকে, এ কথা স্বীকার করিবার বোধ হয় কাহারও আপত্তি ህዖOዩ)