পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৪২

বঙ্কিম স্না,শািৰল । তবে, এই কাব্যমধ্যে ঘটনাবৈচিত্র্য, সলিটবৈচিত্র্য, সঙ্ঘাটন করা কবির সাধ্য বটে। তৎসম্পবন্ধে নবীন বাবা তাদশ্যে শক্তিপ্রকাশ করেন না। বন্দ্রসংহারের একটি বিশেষ গণ এই যে, সেই একখানি কাব্যে উৎকৃষ্ট উপাখ্যান আছে, নাটক আছে, এবং গীতিকাব্য আছে। পলাশির যন্ধে উপাখ্যান এবং নাটকের ভাগ অতি অলপ-গীতি আতি প্রবল। নবীন বােব বর্ণনা এবং গীতিতে এক প্রকার মন্ত্রসিদ্ধ। সেই জন্য পলাশির যাদ্ধ এত মনোহর হইয়াছে। এই সকল বিষয়ে তাঁহার লিপি প্ৰণালীর সঙ্গে বাইরণের লিপি প্রণালীর বিশেষ সাব্দশ্য দেখা যায়। চরিত্রের আশ্লেষণে দাই জনের এক জনও শক্তি প্রকাশ করেন না।-বিশ্লেষণে দই জনেরই কিছ শক্তি আছে। নাটকের যাহা প্ৰাণ-হৃদয়ে হৃদয়ে “ঘাত প্ৰতিঘাত”-দাই জনের এক জনের কাব্যে তাহাব কিছমাত্র নাই। কিন্তু অনা দিকে দাই জনেই শক্তিশালী। ইংরেজিতে বাইরণের কবিতা তীরতেজস্বিনী, জলামযী অগ্নিতুল্য। নাঙ্গালাতেও নবীন বােবর কবিতা সেইরাপ তীৱতেজস্বিনী, জবালামযী, অগ্নিতুল্য। তাঁহাদিগের হৃদয়নিরদ্ধ ভাব সকল আগেয়গিরিনির্যাদ্ধ, অগ্নিশিখাবৎ-যখন ছাটে, তখন তাহার বেগ অসহ্য। বাইরণ সম্পয়িং এক স্থানে কোন নায়কেব প্রণয়বেগ বৰ্ণনাচ্ছিলে নায়ককে যাহা বলাইফাছেন, তাঁহার নিজের কবিতাব বেগ এবং নবীন বাবর কবিতার বেগ সম্বন্ধে তাহাই বলা যাইতে পারে। 13t mine was like the lava flood That boils in Etha's breast of slamo I cannot prate in puling strain Of ladye-love and beauty's chain: If changing cheek and scorching vein, Lips taught to writhe bilt not complain, If bursting heart, and madd'ning brain, And daring deed and vengeful steel And all that I have felt and feel, Hetoken love, that love was mine, And shown by many a bitter sign.* নবীন বাবারও যখন সত্বদেশবাৎসল্য স্রোতঃ উচ্ছলিত হয়, তখন তিনিও রাখিয়া ঢাকিয়া বলিতে জানেন না। সেও গৈরিক নিসবের ন্যায়। যদি উচ্চৈঃস্বরে রোদন, যদি আন্তরিক মন্মভেদী কাতরোক্তি, যদি ভয়শন্য তেজোময় সত্যপ্রিয়তা, যদি দৰাবাসাপ্রাথিত ক্ৰোধ, দেশব্যাংসল্যের লক্ষণ হয়-তবে সেই দেশবাৎসল্য নবীন বাবর, এবং তাহার অনেক লক্ষণ এই কাব্যমধ্যে বিকীৰণ হইয়াছে। বাইরণের ন্যায় নবীন বাবা বৰ্ণনায় অত্যন্ত ক্ষমতাশালী। বাইরণের ন্যায়, তাঁহারও শক্তি আছে যে, দই চারিটি কথায়, তিনি উংকৃত্সট বর্ণনার অবতারণা করিতে পারেন। ক্লাইবের নৌকারোহণ ইহার দলটান্তস্থল। কিন্তু অনেক সময়েই, নবীন বােব সে প্রথা পরিত্যাগ করিয়া, বৰ্ণনায় অনাথক কালাহরণ করেন। যাহাই হউক, কবিদিগের মধ্যে নবীন বাবকে আমরা অধিকতর উচ্চ আসন দিতে পারি না। পারি, তাঁহাকে বাঙ্গালার বাইরণ বলিয়া পরিচিত করিতে পারি। এ প্রশংসা বড় অলপ প্রশংসা নহে। পলাশির যাদ্ধ যে বাঙ্গালার সাহিত্যভান্ডারে একটি বহমাল্য রত্ন তদ্বিষয়ে সংশয় নাই। উপসংহারকালে, পাঠকদিগকে আমরা একটি কথা বলিব। পলাশির যন্ধের আমরা রাখিয়া ঢাকিয়া পরিচয় দিয়াছি। যদি তাঁহারা ইহার যথাৰ্থ পরিচয় লইতে ইচ্ছা করেন অ্যাদ্যোপােন্ত স্বয়ং পাঠ করিবেন। যে বাঙ্গালি হইয়া বাঙ্গালির আন্তরিক রোদন না পড়িল, তাহার বাঙ্গালি জন্ম ব্যথা৷-“বঙ্গদশনা, কাৰ্ত্তিক ১২৮২, প, ৩১৯-২৭ ৷৷ The Giaour O'.