পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাঠ্যপুস্তক সহজ রচনাশিক্ষা উপক্ৰমণিকা আমরা যাহা মনে করি, তাহা লোকের কাছে প্রকাশ করিতে হইলে, হয় মাখে মাখে বলি, নয় লিখিয়া প্রকাশ করি। মাখে মাখে বলিলে, লোকে তাহাকে কথোপকথন, বা অবস্থাবিশেষে বক্তৃতা বলে। লিখিয়া প্রকাশ করিতে হইলে, চিঠি, সংবাদপত্র, পস্তক ইত্যাদিতে প্রকাশ | 3 ।। কিন্তু মাখেই বলি, আর লিখিয়াই বলি, বলিবার সময়ে কথাগালি একটা সাজাইয়া লইতে হয়। সাজাইয়া না বলিলে, হয়ত তুমি যাহাকে বলিতেছ, সে তোমার সকল কথা বঝিতে পরিবে না, নয়ত সে কথাগালি গ্রাহ্য করিবে না। এই সাজানকে রচনা বলে। রচনা অতি সহজ। মাখে মাখে কহিবার সময়েও আমরা সাজাইয়া কথা কই, তাহা না। করিলে কেহ আমাদের কথা বঝিতে পারিত না। অতএব যে মাখে মাখে। কথোপকথন করিতে পারে, লিখিতে জানিলে সেও অবশ্য লিখিত রচনা করিতে পারে। তবে সকল কাজই অভ্যাসাধীন। মৌখিক রচনায সকলেরই অভ্যাস আছে। লিখিত রচনাব্য যাহাঁদের অভ্যাস নাই, তাহাদিগকে অভ্যাস করিতে হইবে। সেই অভ্যাস করাইবার জন্য এই পাস্তকের প্রথম অধ্যায় क्षिथढला । আর মৌখিক বাচনার সঙ্গে লিখিত রচনার একটি প্রভেদ এই আছে যে, লিখিত রচনার কতকগালি নিয়ম আছে; সে নিয়মগলি মৌখিক রচনায় বড় মানা যায় না-না মানিলেও বিশেষ ক্ষতি নাই, কিন্তু লিখিত রচনায় না। মানিলেই নয়। দ্বিতীয অধ্যায়ে সেই নিয়মগলি বঝাইব । তৃতীয় অধ্যায়ে পত্ররচনা শিখাইব। oroa Vo8STST ठूbन्म स0एछन् প্রথম পাঠ রাম খাইতেছে। পাখী উড়িতেছে। হরি পীড়িত হইয়াছে। মানষি মরিযা যায়। এইগালিকে এক একটি বাক্য, উক্তি, বা পদ বলা যায়। “রাম খাইতেছে।”-এই বাক্যে কাহার কথা বলা যাইতেছে ? রামের কথা। অতএব রােম এই বাক্যের “বিষয়”। “পাখী উড়িতেছে"-কাহার কথা বলিতেছি? পাখীর কথা। “হাঁর পীড়িত হইয়াছে’- কাহার কথা বলিতেছি? হারির কথা। "মানষি মরিয়া যায়"-কাহার কথা বলিতেছি? মানষের কথা। পাখী, হরি, মানষি, ইহারা ঐ ঐ বাক্যের বিষয়। “রাম খাইতেছে"-এখানে রামের কথা বলিতেছি বটে, কিন্তু রামের কি কথা বলিতেছি? সে “খাইতেছে।”-তাহার খাবার কথা বলিতেছি। “খাইতেছে।” হইল বক্তব্য। “পাখী উড়িতেছে।” “উড়িতেছে৷” বক্তব্য। “যদা পীড়িত হইয়াছে।” “পীড়া” এখানে বক্তব্য। “মানষি মরিয়া যায়।” “মরা” এখানে বক্তব্য। অতএব সকল বাক্যে, দাইটি বন্ধু থাকে; একটি “বিষয়” আর একটি “বক্তব্য”। ቅቅ፱