পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बष्किभ ब्रष्नावली তৎপ্রতি দণ্টিপাত হইল। বঝিতে পারিলেন যে, লোকগালি কোন আমোদে নিযক্ত আছে, মন দিয়া কিছ, শনিতেছে। মধ্যস্থ ব্যক্তি কে, বা বস্তুটি কি, তাহা কুমার দেখিতে পাইতেছিলেন না। কিছ কৌতহল জন্মিল। কিয়ৎক্ষণ পরে কয়েকজন শ্রোতা চলিয়া গেলে কুমারের কৌতহল নিবারণ হইল ; দেখিতে পাইলেন, মন্ডলীমধ্যে এক ব্যক্তি একখানা পতির ন্যায়। কয়েকখন্ড পত্ৰ কৌতুক জন্মিল। তাঁহাকে মনষ্যে বলিলেও বলা যায়, বজাঘাতে পথভ্রস্ট মধ্যমাকার তালগাছ বলিলেও বলা যায়। প্রায় সেইরােপ দীঘ, প্রস্থ্যেও তদ্রািপ; তবে তালগাছে কখন তােদশি গর নাসিকাভার ন্যস্ত হয় না। আকারেঙিগতে উভয়ই সমান; পতি পড়িতে পড়িতে পাঠক যে হাত নাড়া, মাথা নাড়া দিতেছিলেন, রাজকুমার তাহা অবাক হইয়া দেখিতে লাগিলেন। ইতিমধ্যে ওসমান গহমধ্যে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। পরস্পর অভিবাদনের পর ওসমান কহিলেন, “আপনি গবাক্ষে অন্যমনস্ক হইয়া কি দেখিতেছিলেন ?” জগৎ সিংহ কহিলেন, “সরল কাঠবিশেষ। দেখিলে দেখিতে পাইবেন।” ওসমান দেখিয়া কহিলেন, “রাজপত্র, উহাকে কখন দেখেন নাই ?” রাজপত্ৰ কহিলেন, “না।” ওসমান কহিলেন, “ও আপনাদিগের ব্রাহ্মণ। কথাবাত্তায় বড় সরস ; ও ব্যক্তিকে গড় মান্দারণে দেখিয়াছিলাম।” রাজকুমার অন্তঃকরণে চিন্তিত হইলেন। গড় মান্দারণে ছিল ? তবে এ ব্যক্তি কি তিলোত্তমার কোন সংবাদ বলিতে পরিবে না ? এই চিন্তায় ব্যাকুল হইয়া কহিলেন, “মহাশয়, উহার নাম কি ?” ওসমান চিন্তা করিয়া কহিলেন, “উহার নামটি কিছ কঠিন, সমরণ হয় না, গণপতি ? না;—গনপত—গজপত—না ; গজপত কি ?” “গজপত ? গজপত এদেশীয় নাম নহে, অথচ দেখিতেছি, ও ব্যক্তি বাঙগালী ?” “বাঙগালী বটে, ভট্টাচাৰ্য্য। উহার একটা উপাধি আছে, এলেম—এলেম কি ?” মহাশয়! বাঙগালীর উপাধিতে 'এলেম' শব্দ ব্যবহার হয় না। এলেমকে বাঙগালায় বিদ্যা কহে। বিদ্যাভূষণ বা বিদ্যাবাগীশ হইবে।” “হাঁ হাঁ বিদ্যা কি একটা,-রসন, বাঙগালায় হস্তীকে কি বলে বলন দেখি ?" “হাসতী।” আর ' “করী, দন্তী, বারণ, নাগ, গজ—” “হা হাঁ সমরণ হইয়াছে; উহার নাম ‘গজপতি বিদ্যাদিগগজ”।” “বিদ্যাদিগগজ ! চমৎকার উপাধি ! যেমন নাম, তেমনি উপাধি। উহার সহিত আলাপ করিতে বড় কৌতহল জন্মিতেছে।” ওসমান খাঁ একটা একটা গজপতির কথাবাৰ্ত্তা শনিয়াছিলেন। বিবেচনা করিলেন, ইহার সহিত কথোপকথনে ক্ষতি হইতে পারে না। কহিলেন, “ক্ষতি কি ?” উভয়ে নিকটস্থ বাহিরের ঘরে গিয়া ভৃত্যদ্বারা গজপতিকে আহবান করিয়া আনিলেন। নবম পরিচ্ছেদ ঃ দিগগজ সংবাদ ভৃত্যসঙ্গে গজপতি বিদ্যাদিগগজ কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিলে রাজকুমার জিজ্ঞাসিলেন, “আপনি दासe ?" y দিগগজ হস্তভঙ্গী সহিত কহিলেন, “যাবৎ মেরো স্থিতা দেবা। যাবদা, গঙ্গা মহীতলে, অসারে খল সংসারে সােরং শব্বশরমন্দিরং।" জগৎ সিংহ হাস্য সংবরণ করিয়া প্ৰণাম করিলেন। গজপতি আশীবাদ করিলেন, “খোদা খাঁ বাবাজীকে ভাল। রােখন।” \, NO \