পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

न्यूट्शभिर्नाब्झनौं শিলপকায্যোৎপন্নদ্রব্যজাতবিক্রেতা, এই সকলে চতুন্দিক পরিপািণ। যথায় যাও, তথায় কেবল দীপমালা, গীতবাদ্য, গন্ধবারি, পান, পক্ষপ, বাজি, বেশ্যা। অন্তঃপারমধ্যেও কতক কতক ঐরােপ। নবাবের বিহারগােহ অপেক্ষাকৃত স্থিরতর, কিন্তু অপেক্ষাকৃত প্রমোদময়। কক্ষে কক্ষে রজতদীপ, সফটিকদীপ, গন্ধদীপ সিনগেধাত্তজবল আলোক বর্ষণ করিতেছে; সগন্ধি কুসমদাম পর্যাপাধারে, সতশ্চেভ, শয্যায়, আসনে, আর পরিবাসিনীদিগের অঙ্গে বিরাজ করিতেছে; বায়, আর গোলাবের গন্ধের ভার গ্রহণ করিতে পারে না; অগণিত দাসীবাগ কেহ বা হৈমিকায্যখচিত বসন, কেহ বা ইচ্ছামত নীল, লোহিত, শ্যামল, পাটলাদি বর্ণের চীনবাস পরিধান করিয়া অঙ্গের সবৰ্ণালঙ্কার প্রতি দীপের আলোকে উত্তজবল করিয়া ভ্ৰমণ করিতেছে। তাহারা যাঁহাদিগের দাসী, সে সন্দেরীরা কক্ষে কক্ষে বসিয়া মহাযত্নে বেশ বিন্যাস করিতেছিলেন। আজ নবাব প্রমোদমন্দিরে আসিয়া সকলকেই লইয়া প্রমোদ করিবেন; নিত্যগীত হইবে। যাহার যাহা অভীস্ট, সে তাহা সিদ্ধ করিয়া লাইবে। কেহ আজি ভ্রাতার চাকরি করিয়া দিবেন। আশায় মাথায় চিরণী জোরে দিতেছিলেন। অপরা, দাসীর সংখ্যা বদ্ধি করিয়া লইবেন ভাবিয়া অলকগচ্ছ ব্যক্ষ পয্যন্ত নামাইয়া দিলেন। কাহারও নবপ্রসন্ত পত্রের দানস্বরপ কিছর সম্পপত্তি হস্তগত করা অভিলাষ, এজন্য গন্ডে রক্তিমাবিকাশ করিবার অভিপ্ৰায়ে ঘাষণা করিতে করিতে রধির বাহির করিলেন, কেহ বা নবাবের কোন প্ৰেয়সী ললনার” নবপ্রাপতি রত্নালঙ্কারের অন্যরােপ অলঙ্কার কামনায় চক্ষর নীচে আকৰ্ণ কাজল লেপন করিলেন। কোন চন্ডীকে বসন পরাইতে দাসী পেশোয়াজ মাড়াইয়া ফেলিল; চন্ডী তাহার গালে একটা চাপড় মারিলেন। কোন প্ৰগলভার বয়োমাহান্ত্ৰ্যে কেশরাশির ভার ক্ৰমে শিথিলমল হইয়া আসিতেছিল, কেশবিন্যাসকালে দাসী চিরণী দিতে কতকটি চুল চিরণীর সঙ্গে উঠিয়া আসিল; দেখিয়া কেশাধিকারিণী দর বিগলিত চক্ষতে উচ্চারবে কাঁদিতে লাগিলেন। কুসমবনে সস্থলপদ্মবৎ, বিহঙগকুলে কলাপীবৎ এক সন্দরী বেশবিন্যাস সমাপন করিয়া, কক্ষে কক্ষে ভ্ৰমণ করিতেছিলেন । আদ্য কাহারও কোথাও যাইতে বাধা ছিল না। যেখানকার যে সৌন্দৰ্য্য, বিধাতা সে সন্দেরীকে তাহা দিয়াছেন; যে স্থানের যে অলঙ্কার, কতল খাঁ তাহা দিয়াছিল; তথাপি সে রমণীর মািখ-মধ্যে কিছমাত্র সৌন্দয্য-গৰ্ব্বব বা অলঙ্কার-গকবচিহ্ন ছিল না। আমোদ, হাসি, কিছই ছিল না। মািখকান্তি গম্ভীর, স্থির; চক্ষতে কঠোর জবালা। বিমলা এইরহপ পরীমধ্যে সস্থানে স্থানে ভ্ৰমণ করিয়া এক সংসজজীভূত গহে প্রবেশ করিলেন, প্রবেশােনন্তর দাবার অগািলবদ্ধ করিলেন। এ উৎসবের দিনেও সে কক্ষমধ্যে একটিমাত্র ক্ষীণালোক জীবলিতেছিল। কক্ষের এক প্রান্তভাগে একখানি পালঙক ছিল। সেই পালঙেক আপাতমস্তক শয্যোত্তরচ্ছদে আব্বত হইয়া কেহ শয়ন করিয়াছিল। বিমলা পালঙেকর পাশেব শয়ান ব্যক্তি চমকিতের ন্যায় মাখের আবরণ দীর করিল। বিমলাকে চিনিতে পারিয়া, শষ্যোত্তিরচ্ছদ ত্যাগ করিয়া, গাত্ৰোখান করিয়া বসিল, কোন উত্তর করিল না। বিমলা পনেরপি কহিলেন, “তিলোত্তমা! আমি আসিয়াছি।” তিলোত্তম তথাপি কোন উত্তর করিলেন না। স্থিরদন্টিতে বিমলার মািখ প্রতি চাহিয়া রহিলেন। তিলোত্তমা আর ব্ৰীড়াবিবাশা বালিকা নহে। তদন্ডে তাঁহাকে সেই ক্ষীণালোকে দেখিলে বোধ হইত যে, দশ বৎসর পরিমাণ বয়োবদ্ধি হইয়াছে। দেহ অত্যন্ত শীর্ণ ; মািখ মলিন। পরিধানে একখানি সঙকীর্ণায়তন বাস। অবিন্যস্ত কেশভারে ধালিরাশি জড়িত হইয়ম্ রহিয়াছে। অঙ্গে অলঙ্কারের লেশ নাই; কেবল পকেব। যে অলঙ্কার পরিধান করিতেন, তাহার চিহ্ন রহিয়াছে মাত্র। বিমলা পািনরপি কহিলেন, “আমি আসিব বলিয়াছিলাম-আসিয়াছি। কথা কহিতে্যুছ না কেন ?” তিলোত্তম কহিলেন, “যে কথা ছিল, তাহা সকল কহিয়াছি, আর কি কহিব ?” বিমলা তিলোত্তমার স্বরে বঝিতে পারিলেন যে, তিলোত্তমা রোদন করিতেছিলেন; মস্তকে হস্ত দিয়া তাঁহার মািখ তুলিয়া দেখিলেন, চক্ষর জলে মািখ পলাবিত রহিয়াছে; অঞ্চল সািপশ করিয়া দেখিলেন, অঞ্চল সম্পপণ্য আদ্র। যে উপাধানে মাথা রাখিয়া তিলোত্তম শয়ন করিয়াছিলেন, তাহাতে হাত দিয়া দেখিলেন, তাহাও পলাবিত। বিমলা কহিলেন, “এমন দিবানিশি Gk ܠ ܠ