পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नर्ुदशभिर्नान्झनौं কুণ্ডিতালিক-রাশি লিম্বিত করিয়া দিয়ােছ ? পদ্মবক্ষে কেমন করিয়া কালফণিনী। জড়ায়, তাহাই কি দেখাইতেছ ? আর, তুমি কে সন্দরী, যে কতল খাঁর পাশে বা বসিয়া হেমপাত্রে সারা ঢালিতেছ? কে তুমি, যে সকল রাখিয়া তোমার পণ লাবণ্য দেহপ্রতি কতল খাঁ ঘন ঘন সতৃষ্ণ দল্টিপাত করিতেছে ? কে তুমি অব্যৰ্থ কটাক্ষে কতল খাঁর হৃদয় ভেদ করিতেছ? ও মধ্যর কটাক্ষ চিনি ; তুমি বিমলা । অত সারা ঢালিতেছ। কেন ? ঢাল, ঢাল, আরও ঢাল, বসনমধ্যে ছরিকা আছে ত? আছে বই কি। তবে অত হাসিতেছ। কিরাপে ? কতল খাঁ তোমার মািখপানে চাহিতেছে। ও কি ? কটাক্ষ! ও কি, আবার কি ! ঐ দেখ, সরাসবাদপ্ৰমত্ত যবনকে ক্ষিপত করিলে। এই কৌশলেই বঝি সকলকে বজিত করিয়া কতল খাঁর প্ৰেয়সী হইয়া বসিয়ােছ ? না হবে কেন, যে হাসি, যে অঙ্গভঙ্গী, যে সরস কথারহস্য, যে কটাক্ষ! আবার আবার! কতল খাঁ, সাবধান! কতল খাঁ কি করিবে! - যে চাহনি চাহিয়া বিমলা হাতে সারাপাত্র দিতেছে! ও কি ধবনি ? এ কে গায় ? এ কি মানষের গান, না, সররমণী গায় ? বিমলা গায়িকদিগের সহিত গায়িতেছে। কি সর! কি ধবনি ! কি লয়! কতল খাঁ এ কি ? মন কোথায় তোমার ? কি দেখিতেছি ? সমে সমে হাসিয়া কটাক্ষা করিতেছে ; ছারির অধিক তোমার হৃদয়ে বসাইতেছে, তাহাই দেখিতেছি? আমনি কটাক্ষে প্রাণহরণ করে, আবার সঙ্গীতের সন্ধিসম্বন্ধ কটাক্ষ! আরও দেখিয়াছ কটাক্ষের সঙ্গে আবার অলপ মস্তক দোলন ? দেখিয়াছ, সঙ্গে সঙ্গে কেমন কণাভরণ দলিতেছে ? হাঁ। আবার সারা ঢাল, দে মদ দে, এ কি! বিমলা উঠিয়া নাচিতেছে। কি সন্দির! কিবা ভঙ্গী! দে মাদ ! কি অংগ! কি গঠন! কতল খাঁ! জাঁহাপনা ! স্থির হও! স্থির! উঃ । কতলির শরীরে অগিনি জীবলিতে লাগিল। পিয়ালা ! আহা! দে পিয়ালা ! আহা দে পিয়ালা। মেরি পিয়ারী ! আবার কি ? এর উপর হাসি, এর উপর কটাক্ষ ? সরাবা! দে সরাব ! কতল, খাঁ উন্মত্ত হইল। বিমলাকে ডাকিয়া কহিল, “তুমি কোথা, প্রিয়তমে!” বিমলা কতল খাঁর সঙ্কন্ধে এক বাহ দিয়া কহিলেন, “দাসী শ্ৰীচরণে।”—অপর করে ছরিকা— তৎক্ষণাৎ ভয়ঙ্কর চীৎকার ধবনি করিয়া বিমলাকে কতল খাঁ দরে নিক্ষেপ করিল; এবং যেই নিক্ষেপ করিল, অমনি আপনিও ধরাতলশায়ী হইল। বিমলা তাহার বক্ষস্থলে আমলে তীক্ষা ছরিকা বসাইয়া দিয়াছিলেন। “পিশাচী—সয়তানী" কতল খাঁ এই বলিয়া চীৎকার করিল। “পিশাচী নহি— সয়ন্তানী নাহি-বীরেন্দ্ৰসিংহের বিধবা সত্ৰী৷” এই বলিয়া বিমলা কক্ষ হইতে দ্রুতবেগে পলায়ন কতল, খাঁর বাঙানিস্পত্তি-ক্ষমতা ঝটিতি রহিত হইয়া আসিতে লাগিল। তথাপি সাধ্যমত চীৎকার করিতে লাগিল। বিবিরা যথাসাধ্য চীৎকার করিতে লাগিল। বিমলাও চীৎকার করিতে করিতে ছটিলেন ; কক্ষান্তরে গিয়া কথোপকথন শব্দ পাইলেন। বিমলা উদ্ধৰ্ব্বশবাসে ছটিলেন। এক কক্ষ পরে দেখেন, তথায় প্রহরী ও খোজাগণ রহিয়াছে। চীৎকার শনিয়া ও বিমলার ত্রস্ত ভাব দেখিয়া তাহারা জিজ্ঞাসা করিল, “কি হইয়াছে ?” প্রত্যুৎপন্নমতি বিমলা কহিলেন, “সৰ্ব্বনাশ হইয়াছে। শীঘ্ৰ যাও, কক্ষমধ্যে মোগল প্রবেশ করিয়াছে, বঝি নবাবকে খােন করিল।” প্রহরী ও খোজাগণ উদ্ধবশবাসে কক্ষাভিমখে ছটিল। বিমলাও উদ্ধাবশবাসে অন্তঃপারদ্বারাভিমখে পলায়ন করিলেন। দবারে প্রহরী প্রমোদীক্লান্ত হইয়া নিদ্রা যাইতেছিল, বিমলা বিনা বিঘে দবার অতিক্ৰম করিলেন। দেখিলেন, সৰ্ব্বত্রই প্রায় ঐরােপ, অবাধে দৌড়িতে লাগিলেন। বাহির ফটকে দেখিলেন, প্ৰহারিগণ জাগরিত । একজন বিমলাকে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কে ও, কোথা যাও ?” তখন অন্তঃপারমধ্যে মহা কোলাহল উঠিয়াছে, সকল লোক জাগিয়া সেই দিকে ছটিতেছিল, বিমলা কহিলেন, “বসিয়া কি করিতেছি, গোলযোগ শনিতেছ। না ?” প্রহরী জিজ্ঞাসা করিল, “কিসের গোলযোগ ?” বিমলা কহিলেন, “অন্তঃপারে সব্বনাশ হইতেছে, নবাবের প্রতি আক্ৰমণ হইয়াছে।” প্ৰহারিগণ ফটক ফেলিয়া দৌড়িল ; বিমলা নিবিবাঘের নিস্ক্রান্ত হইলেন। বিমলা ফটক হইতে কিয়দর গমন করিয়া দেখিলেন যে, একজন পরিষ এক বােক্ষতলে SSRC