পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७ष्कश ब्रष्नाबव्ी আমি তোমার সাক্ষাৎলাভ করিলে, যদি সে ক্লেশ পায়, এই জন্যই তোমার সহিত সাক্ষাৎ করি নাই। সাক্ষাৎ না হইলে তুমি যে ক্লেশ পাইবে, সে ভরসাও করি নাই। নিজের ক্লেশ—সে সকল সখি দঃখ জগদীশবরচরণে সমাপণ করিয়াছি। তোমাকে যদি সাক্ষাতে বিদায় দিতে হইত, তবে সে ক্লেশ। অনায়াসে সহ্য করিতাম। তোমার সহিত যে সাক্ষাৎ হইল না, এ ক্লেশও পাষাণীর ন্যায় সহ্য করিতেছি। তবে এ পত্র লিখি কেন ? এক ভিক্ষা আছে, সেই জন্যই এ পত্র লিখিলাম। যদি শনিয়া থাক যে, আমি তোমাকে সেনহা করি, তবে তাহা বিস্মত হও । এ দেহ বত্তমানে এ কথা প্রকাশ করিব না। সঙ্কলপ ছিল, বিধাতার ইচ্ছায় প্রকাশ হইয়াছে, এক্ষণে বিস্মত হও । আমি তোমার প্ৰেমাকাঙিক্ষণী নাহি । আমার যাহা দিবার তাহা দিয়াছি, তোমার নিকট প্রতিদান কিছর চাহি না। আমার স্নেহ এমন বদ্ধমলে যে, তুমি স্নেহ না করিলেও আমি সখী; কিন্তু সে কথায় আর কাজ কি ! তোমাকে অসখী দেখিয়াছিলাম। যদি কখন সখী হও, আয়েষাকে সমরণ করিয়া সংবাদ দিও। ইচ্ছা না হয়, সংবাদ দিও না। যদি কখন অন্তঃকরণে ক্লেশ পাও, তবে আয়েষাকে কি সমরণ করিবে ? আমি যে তোমাকে পত্র লিখিলাম, কি যদি ভবিষ্যতে লিখি, তাহাতে লোকে নিন্দা করিবে । আমি নিদোষী, সতরাং তাহাতে ক্ষতি বিবেচনা করিও না—যখন ইচ্ছা হইবে, পত্র লিখিও। তুমি চলিলে, আপাততঃ এ দেশ ত্যাগ করিয়া চলিলে। এই পাঠানেরা শান্ত নহে। সতরাং পােনকবার তোমার এ দেশে আসাই সম্পভব। কিন্তু আমার সহিত আর সন্দশন হইবে না। পািনঃ পানঃ হৃদয়মধ্যে চিন্তা করিয়া ইহা স্থির করিয়াছি। রমণীহৃদয় যেরপ দদািমনীয়, তাহাতে অধিক সাহস অনচিত। আর একবার মাত্র তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিব মানস আছে। যদি তুমি এ প্রদেশে বিবাহ কর, তবে আমায় সংবাদ দিও ; আমি তোমার বিবাহ কালে উপস্থিত থাকিয়া তোমার বিবাহ দিব। যিনি তোমার মহিষী হইবেন, তাঁহার জন্য কিছ: সামান্য অলঙ্কার সংগ্ৰহ করিয়া রাখিলাম, যদি সময় পাই, সবহস্তে পরাইয়া দিব। আর এক প্রার্থনা। যখন আয়েষার মাতৃত্যুসংবাদ তোমার নিকট যাইবে, তখন একবার এ দেশে আসিও, তোমার নিমিত্ত সিন্দ-কমধ্যে যাহা রহিল, তাহা আমার অননুরোধে গ্রহণ করিও । আর কি লিখিব ? অনেক কথা লিখিতে ইচ্ছা করে, কিন্তু নিম্প্রয়োজন। জগদীশবর তোমাকে সখী করিবেন, আয়েষার কথা মনে করিয়া কখনও দঃখিত হইও না।” জগৎ সিংহ পত্র পাঠ করিয়া বহনক্ষণ তাম্বমধ্যে পত্ৰহস্তে পদচারণ করিতে লাগিলেন। পরে অকস্মাৎ শীঘ্রহস্তে একখানা কাগজ লইয়া নিম্নলিখিত পত্র লিখিয়া দাঁতের হস্তে দিলেন। “আয়েষ্যা, তুমি রমণীরত্ন। জগতে মনঃপীড়াই বঝি বিধাতার ইচ্ছা! আমি তোমার কোন প্রত্যুত্তর লিখিতে পারিলাম না। তোমার পত্রে আমি অত্যন্ত কাতর হইয়াছি। এ পত্রের যে উত্তর, তাহা এক্ষণে দিতে পারিলাম না। আমাকে ভুলিও না। যদি বাঁচিয়া থাকি, তবে এক বৎসর পরে ইহার উত্তর দিব।” দত এই প্রত্যুত্তর লইয়া আয়েষার নিকট প্রতিগমন করিল। বিংশ পরিচ্ছেদ ঃ দীপ নিৰ্ব্ববাণোন্মািখ যে পর্যন্ত তিলোত্তমা। আশামানির সঙ্গে আয়েষার নিকট হইতে বিদায় লইয়া আসিয়াছিলেন, সেই পয্যন্ত আর কেহ তাঁহার কোন সংবাদ পায় নাই। তিলোত্তমা, বিমলা, আশামানি, অভিরাম স্বামী, কাহারও কোন উদ্দেশ পাওয়া যায় নাই। যখন মোগলপাঠানে সন্ধিসম্প্ৰবন্ধ হইল, তখন বীরেন্দ্ৰসিংহ আর তৎপরিজনের আশ্রতপািব্ব দর্ঘটনা সকল সমরণ করিয়া উভয় পক্ষই সম্পমত হইলেন যে, বীরোন্দ্রের সত্ৰী কন্যার অন্যসন্ধান করিয়া তাহাদিগকে গড় মান্দারণে পািনরবস্থাপিত করা যাইবে। সেই কারণেই ওসমান, খবাজা ইসা, মানসিংহ প্রভৃতি সকলেই তাহাদিগকে বিশেষ অন্যসন্ধান করিলেন; কিন্তু তিলোত্তমার আশামানির সঙ্গে আয়েষার নিকট হইতে আসা ব্যতীত 90 ܠ