পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झ८शभिर्नान्झनौं কোথায় শিবির ? কোথায় সেনা ?--শিবির ভঙ্গ করিয়া'\সেনা পাটনায় চলিয়া গিয়াছে! কোথায় অনচের সব ? দারকেশবর-তীরে প্রভু আগমন প্রতীক্ষা করিতেছে। কোথায় প্ৰভু ? প্রবলাতপবিশোষিত সকুমার কুসমি-কলিকায় নয়নবারি সেচনে পািনরৎফল্ল করিতেছেন। কুসমি-কলিকা ক্ৰমে পািনরৎফল্প হইতে লাগিল। এ সংসারের প্রধান ঐন্দ্রজালিক স্নেহ! ব্যাধি-প্ৰতিকারে প্রধান ঔষধ প্রণয়। নাহিলে হৃদয়-ব্যাধি কে উপশম করিতে পারে ? যেমন নিৰ্ম্মবাণোন্ম-খী দীপ বিন্দ বিন্দ তৈলসঞ্চারে ধীরে ধীরে আবার হাসিয়া উঠে, যেমন নিদাঘশক্ষক বল্লারী আষাঢ়ের নববারি সিংগুনে ধীরে ধীরে পনেকবার বিকশিত হয়; জগৎ সিংহকে পাইয়া তিলোত্তমা তদ্রপ দিনে দিনে পািনজজীবন পাইতে লাগিলেন। ক্ৰমে সবলা হইয়া পালঙ্কোপরি বসিতে পারিলেন। বিমলার অবত্তমানে দজনে কাছে কাছে বসিয়া অনেক দিনের মনের কথা সকল বলিতে পারিলেন। কত কথা বলিলেন, মানসকৃত কত অপরাধ স্বীকার করিলেন, কত অন্যায় ভরসা। মনোমধ্যে উদয় হইয়া মনোমধ্যেই নিবত্ত হইয়াছিল, তাহা বললেন ; জাগরণে কি নিদ্রায় কত মনোমোহন সস্বপন দেখিয়াছিলেন, তাহা বলিলেন। রােপনশয্যায় শয়নে অচেতনে যে এক স্বপন দেখিয়াছিলেন, একদিন তাহা বলিলেন— যেন নববসন্তের শোভাপরিপর্ণ এক ক্ষদ্ৰ পৰ্ব্বতোপরি তিনি জগৎসিংহের সহিত পশুপক্ৰীড়া করিতেছিলেন; স্তপে সত্যপে বসন্তকুসম চয়ন করিয়া মালা গাঁথিলেন, আপনি এক মালা কন্ঠে পরিলেন, আর এক মালা জগৎ সিংহের কন্ঠে দিলেন ; জগৎ সিংহের কােটস্থ অসিসপশে মালা ছিড়িয়া গেল। “আর তোমার কন্ঠে মালা দিব না, চরণে নিগড় দিয়া বাঁধিব” এই বলিয়া যেন কুসমের নিগড় রচনা করিলেন। নিগড় পরাইতে গেলেন, জগৎ সিংহ আমনই সরিয়া গেলেন। তিলোত্তম পশ্চাৎ পশ্চাৎ ধাবিত হইলেন ; জগৎ সিংহ বেগে পৰ্ব্ববত অবতরণ করিতে লাগিলেন; পথে এক ক্ষীণা নিঝরিণী ছিল, জগৎ সিংহ লম্পফ দিয়া পার হইলেন ; তিলোত্তম সত্ৰীলোক-লফে পার হইতে পারিলেন না, যেখানে নিঝরিণী সঙ্কীণা হইয়াছে, সেখানে পার হইবেন, এই আশায়, নিঝরিণীর ধারে ধারে ছটিয়া পৰ্ব্বত অবতরণ করিতে লাগিলেন। নিঝরিণী সঙ্কীর্ণ হওয়া দরে থাকুক, যত যান, তত আয়তনে বাড়ে ; নিঝরিণী ক্ৰমে ক্ষদ্র নদী হইল ; ক্ষদ্র নদী ক্ৰমে বড় নদী হইল ; আর জগৎ সিংহকে দেখা যায় না; তানীর অতি উচ্চ, অতি বন্ধাের, আর পদচালন হয় না; তাহাতে আবার তিলোত্তমার চরণ-তলস্থ উপকালের মাত্তিকা খন্ডে খন্ডে খসিয়া গম্ভীর নাদে জলে পড়িতে লাগিল, নীচে প্রচন্ড ঘণিত জলবিত্ত, দেখিতে সাহসী হয় না। তিলোত্তমা পৰ্ব্ববর্ততে পােনরারোহণ করিয়া নদীগ্রাস হইতে পলাইতে চেষটা করিতে লাগিলেন ; পথ বন্ধাের, চরণ চলে না; তিলোত্তমা। উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিতে লাগিলেন ; অকস্মাৎ কালমত্তি কতল খাঁ পনরক্তজীবিত হইয়া তাঁহার পথরোধ করিল; কন্ঠের পশুপমালা আমনই গােরভার লৌহ শঙ্খল হইল। কুসমনিগড় হস্তচু্যত হইয়া আত্মচরণে পড়িল ; সে নিগড় আমনি লৌহনিগড় হইয়া বেড়িল; অকস্মাৎ অঙ্গ স্তম্ভিত হইল ; তখন কতল খাঁ তাঁহার গলদেশ ধরিয়া ঘৰ্ণিত করিয়া নদী-তরঙ্গ-প্রবাহমধ্যে নিক্ষেপ করিল। সাবপেইেনর কথা সমাপন করিয়া তিলোত্তমা সজলচক্ষে কহিলেন, “যদুবরাজ, আমার এ শব্ধ। স্বপন নহে; তোমার জন্য যে কুসমনিগড় রচিয়াছিলাম, বঝি তাহা সত্যই আত্মচরণে লৌহনিগড় হইয়া ধরিয়াছে। যে কুসমমালা পরাইয়াছিলাম, তাহা আসির আঘাতে ছিাড়িয়াছে।” যদুবরাজ তখন হাস্য করিয়া কর্টিস্থিত আসি তিলোত্তমার পদতলে রাখিলেন; কহিলেন, “তিলোত্তমা, তোমার সম্পমখে এই অসিশান্য হইলাম, আবার মালা দিয়া দেখ, আসি তোমার সম্মখে দ্বিখন্ডিত করিয়া ভাঙিগতেছি।” তিলোত্তমা নিরািত্তর দেখিয়া, রাজকুমার কহিলেন, “তিলোত্তমা, আমি কেবল রহস্য दर्शद्ध6उछ ना ।” তিলোত্তমা লতাজায় অধোমখী হইয়া রহিলেন । সেই দিন প্রদোষকালে অভিরাম স্বামী কক্ষান্তরে প্রদীপের আলোকে বসিয়া পতি পড়িতেছিলেন ; রাজপত্রে তথায় গিয়া সবিনয়ে কহিলেন, “মহাশয়, আমার এক নিবেদন, তিলোত্তমা এক্ষণে স্থানান্তরে গমনের কন্ট সহ্য করিতে পারিবেন, অতএব আর এ ভগন গহে কম্পট পাইবার প্রয়োজন কি ? কাল যদি মন্দ দিন না হয়, তবে গড় মান্দারণে লইয়া চলন। আর যদি আপনার অনভিমত না হয়, তবে অম্বরের বংশে দৌহিত্রী সম্প্রদান করিয়া আমাকে কৃতাৰ্থ করবেন।” N (S) O