পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बाँऽका ब्रा5न्ावव्जी অভিরাম স্বামী পতি ফেসিয়া উঠিয়া রাজপত্রকে গাঢ় আলিঙ্গন করিলেন, পতির উপর যে পা দিয়া দাঁড়াইয়াছেন, তাহা জ্ঞান নাই। যখন রাজপত্র স্বামীর নিকট আইসেন, তখন ভােব বঝিয়া বিমলা আর আশমানি শনৈঃ শনৈঃ রাজপত্রের পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিয়াছিলেন ; বাহিরে থাকিয়া সকল শনিয়াছিলেন। রাজপত্র বাহিরে আসিয়া দেখেন যে, বিমলার অকস্মাৎ পািব্বভাবপ্রাপিত; অনবরত হাসিতেছেন, আর আশামানির চুল ছিড়িতেছেন ও কিল মারিতেছেন; আশামানি মারপিট তৃণজ্ঞান করিয়া বিমলার নিকট ন্যুত্যের পরীক্ষা দিতেছে। রাজকুমার এক পাশ দিয়া সরিয়া গেলেন। দাবাবিংশতিতম পরিচ্ছেদ ঃ সমাপিত ফল ফটিল। অভিরাম স্বামী গড় মান্দারণে গমন করিয়া মহাসমারোহের সহিত দৌহিত্রীকে জগৎ সিংহের পাণিগহনীত্ৰী করিলেন। উৎসবাদির জন্য জগৎ সিংহ নিজ সহচরবগকে জাহানাবাদ হইতে নিমন্ত্ৰণ করিয়া আনাইয়াছিলেন। তিলোত্তমার পিতৃবন্ধও অনেকে আহবানপ্রাপতি হইয়া আনন্দকায্যে আসিয়া আমোদ আহাদ করিলেন। আয়েষার প্রাথনামতে জগৎ সিংহ তাঁহাকেও সংবাদ করিয়াছিলেন। আয়েষা নিজ কিশোর বয়স্ক সহোদরকে সঙ্গে লইয়া এবং আর আর পৌরবগে বেশুিটিত হইয়া আসিয়াছিলেন। আয়েষ্যা, যবনী হইয়াও তিলোত্তম। আর জগৎ সিংহের অধিক স্নেহবশতঃ সহচরীবাগের সহিত দােগান্তঃপরিবাসিনী হইলেন। পাঠক মনে করিতে পারেন যে, আয়েষা তাপিত হৃদয়ে বিবাহের উৎসবে উৎসব করিতে পারেন নাই। বস্তুতঃ তাহা নহে। আয়েষা নিজ সহষ চিত্তের প্রফতুল্লতায় সকলকেই প্ৰফল্লা করিতে লাগিলেন; প্রসফট শারদ সরসীরাহের মন্দান্দোলন সবরপে সেই মদ-মধর হাসিতে সব্বত্ৰ শ্ৰীসম্পাদনা করিতে লাগিলেন। বিবাহ কায্য নিশীথে সমাপত হইল। আয়েষ্যা তখন সহচরীগণ সহিত প্রত্যাবৰ্ত্তনের উদ্যোগ করিলেন ; হাসিয়া বিমলার নিকট বিদায় লইলেন। বিমলা কিছই জানেন না, হাসিয়া কহিলেন, “নবাবজাদী ! আবার আপনার শািভকায্যে আমরা নিমন্ত্রিত হইব ।” বিমলার নিকট হইতে আসিয়া আয়েষা তিলোত্তমাকে ডাকিয়া এক নিভৃত কক্ষে আনিলেন। তিলোত্তমার কর ধারণ করিয়া কহিলেন, “ভীগিনি ! আমি চলিলাম। কায়মনোবাক্যে আশীৰ্ব্ববাদ করিয়া যাইতেছি, তুমি অক্ষয় সখে কালব্যাপন কর।” তিলোত্তম কহিলেন, “আবার কত দিনে আপনার সাক্ষাৎ পাইব ?” আয়েষা কহিলেন, “সাক্ষাতের ভরসা কিরাপে করিবে ?” তিলোত্তমা বিষন্ন হইলেন। উভয়ে নীরব হইয়া রহিলেন। প্রকার পরে আয়েয়া কহিলেন, "সাক্ষাৎ হউক বা না হউক, তুমি আয়েযাকে তুলিয়া क्रा ?' তিলোত্তমা হাসিয়া কহিলেন, “আয়েষাকে ভুলিলে যদুবরাজ আমার মািখ দেখিবেন না।” আয়েষ্যা গাম্ভীৰ্য্যসহকারে কহিলেন, “এ কথায় আমি সন্তুষ্ট হইলাম না। তুমি আমার কথা কখন যবেরাজের নিকট তুলিও না। এ কথা অঙ্গীকার কর।” আয়েষা বঝিয়াছিলেন যে, জগৎসিংহের জন্য আয়েষা যে এ জন্মের সখে জলাঞ্জলি দিয়াছেন, এ কথা জগৎ সিংহের হৃদয়ে শেলস্বরপ বিদ্ধ রহিয়াছে। আয়েষার প্রসঙ্গমাত্রও তাঁহার অন্যতাপকের হইতে পারে। তিলোত্তম অঙ্গীকার করিলেন। আয়েষা কহিলেন, “অথচ বিসমােতও হইও না, সমরণার্থ যে চিহ্ন দিই, তাহা ত্যাগ করিও না।” এই বলিয়া আয়েষ্যা দাসীকে ডাকিয়া আজ্ঞা দিলেন। আজ্ঞামত দাসী গজদন্তনিশ্চিমত পাত্ৰমধ্যস্থ রত্নালঙ্কার আনিয়া দিল । আয়েষ্যা দাসীকে বিদায় দিয়া সেই সকল অলঙকার সর্বহস্তে তিলোত্তমার অঙ্গে পরাইতে লাগিলেন। তিলোত্তম ধনাঢ্য ভূস্বামীকন্যা, তথাপি সে অলঙ্কাররাশির অদভুত শিলপ-রচনা এবং তন্মধ্যবত্তী বহমাল্য হীরকাদি রত্নরাজির অসাধারণ তীব্র দীপিত দেখিয়া চমৎকৃত হইলেন। S 98