পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झटशभिर्नान्ननौं বস্তুতঃ আয়েষ্যা পিতৃদত্ত নিজ অঙ্গভূষণ রাশি নম্ৰাট করিয়া তীিকােলাত্তমার জন্য অন্যজনদলভ এই সকল রত্নভূষা প্ৰস্তুত করাইয়াছিলেন। তিলোত্তমা তত্তাবতের গৌরব করিতে লাগিলেন। আয়েষা কহিলেন, “ভীগিনি, এ সকলের প্রশংসা করিও না। তুমি আজ যে রত্ন হৃদয়ে ধারণ করিলে, এ সকল তাঁহার চরণরেণীর তুল্য নহে।” এই কথা বলিতে বলিতে আয়েষ্যা কত ক্লেশে যে চক্ষর জল সংবরণ করিলেন, তিলোত্তমা তাহা কিছই জানিতে পারিলেন না। অলঙ্কারসন্নিবেশ সমাধা হইলে, আয়েষা তিলোত্তমার দাইটি হস্ত ধরিয়া তাঁহার মািখপানে চাহিয়া রহিলেন। মনে মনে ভাবিতে লাগিলেন, “এ সরল প্রেমপ্রতিম মািখ দেখিয়া ত বোধ হয়, প্ৰাণেশবির কখন মনঃপীড়া পাইবেন না। যদি বিধাতার অন্যরােপ ইচ্ছা না হইল, তবে তাঁহার চরণে এই ভিক্ষা যে, যেন ইহার দবারা তাঁহার চিরসখা সম্পাদন করেন।” তিলোত্তমাকে কহিলেন, “তিলোত্তমা! আমি চলিলাম। তোমার স্বামী ব্যস্ত থাকিতে পারেন, তাঁহার নিকট বিদায় লইতে গিয়া কালাহরণ করিব না। জগদীশবার তোমাদিগকে দীঘােয়ঃ করিবেন। আমি যে রত্নগিলি দিলাম, অঙ্গে পরিও । আর আমার—তোমার সার রত্ন হৃদয়মধ্যে রাখিও।” “তোমার সার রত্ন” বলিতে আয়েষার কন্ঠরোধ হইয়া আসিল । তিলোত্তম দেখিলেন, তিলোত্তমা সমদঃখিনীর ন্যায় কহিলেন, “কাঁদিতেছ। কেন ?” অমনি আয়েষার নয়নবারিস্রোত দরদরিত হইয়া বাহিতে লাগিল । আয়েষা আর তিলাদ্ধ অপেক্ষা না করিয়া দ্রুতবেগে গািহত্যাগ করিয়া গিয়া দোলারোহণ করিলেন। আয়েষা যখন আপনি আবাসগহে আসিয়া উপনীত হইলেন, তখনও রাত্ৰি আছে। আয়েষা বেশ ত্যাগ করিয়া, শীতল-পবন-পথ কক্ষবাতায়নে দাঁড়াইলেন। নিজ পরিত্যন্ত বসনাধিক কোমল নীলবণ গগনমন্ডল মধ্যে লক্ষ লক্ষ তারা জীবলিতেছে; মন্দ-পবনহিল্লোলে। অন্ধকারস্থিত বক্ষ সকলের পত্র মােখরিত হইতেছে। দােগ শিরে পেচক মদগম্ভীর নিনাদ করিতেছে। সম্পম খে দগৰ্বপ্রাকার-মলে যেখানে আয়েষা দাঁড়াইয়া আছেন, তাহারই নীচে, জলপারিপািণ দািগ পরিখা নীরবে আকাশপটপ্রতিবিম্ব ধারণ করিয়া রহিয়াছে। আয়েষা বাতায়নে বসিয়া অনেকক্ষণ চিন্তা করিলেন। অঙ্গলি হইতে একটি অঙ্গরীয় উন্মোচন করিলেন। সে অঙ্গরীয় গরলাধার। একবার মনে করিতেছিলেন, “এই রস পান করিয়া এখনই সকল তৃষা নিবারণ করিতে পারি।” আবার ভাবিতেছিলেন, “এই কাজের জন্য কি বিধাতা আমাকে সংসারে পাঠাইয়াছিলেন ? যদি এ যন্ত্রণা সহিতে না পারিলাম, তবে নারীজন্ম গ্রহণ করিয়াছিলাম কেন ? জগৎ সিংহ শনিয়াই বা কি বলিবেন ?” আবার অঙ্গরীয় অঙগলিতে পরিলেন। আবার কি ভাবিয়া খালিয়া লইলেন। ভাবিলেন, “এ লোভ সংবরণ করা রমণীর অসাধ্য; প্রলোভনকে দরি করাই ভাল!” এই বলিয়া আয়েষ্যা গরিলাধার অঙ্গরীয় দাগ পরিখার জলে নিক্ষিপত করিলেন। N O(t