পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৩

बर्ताऽका ब्राफ़नाबब्ौं জলবেগে নৌকা রসালপরের নদীর মধ্যে লইয়া যাইতেছে, প্রত্যাগমন করিতে বিস্তর ক্লেশ৷ হইবে, এই জন্য নাবিকেরা প্ৰাণপণে তাহার বাহিরে আসিতে চেস্টা করিতে লাগিল। এমন কি, সেই মাঘ মাসে তাহাদিগের ললাটে স্বেদস্ৰতি হইতে লাগিল। এইরপ পরিশ্রম দবারা রসালপার নদীর ভিতর হইতে বাহিরে আসিতে লাগিল বটে, কিন্তু নৌকা যেমন বাহিরে আসিল, অমনি তথাকার প্রবলতর স্রোতে উত্তরমখী হইয়া তীরবৎ বেগে চলিল, নাবিকেরা তাহার তিলাদধি মাত্র সংযম করিতে পারিল না। নৌকা আর ফিরিল না। যখন জলবেগ এমত মন্দীভূত হইয়া আসিল যে, নৌকার গতি সংযম করা যাইতে পারে, তখন যাত্রীরা রসালপরের মোহানা অতিক্ৰম করিয়া অনেক দীর আসিয়াছিলেন। এখন নবকুমারের জন্য প্রত্যাবৰ্ত্তন করা যাইবে কি না, এ বিষয়ের মীমাংসা আবশ্যক হইল। এই সন্থানে বলা আবশ্যক যে, নবকুমারের সহযাত্রীরা তাঁহার প্রতিবেশী মাত্র, কেহই আত্মবন্ধ নহে! তাঁহারা বিবেচনা করিয়া দেখিলেন যে, তথা হইতে প্রত্যাবৰ্ত্তন করা আর এক ভাঁটার কম। পরে রাত্ৰি আগত হইবে, আর রাত্রে নৌকা চালনা হইতে পারিবে না, অতএব পরদিনের জোয়ারের প্রতীক্ষা করিতে হইবে। এ কাল পৰ্যন্ত সকলকে অনাহারে থাকিতে হইবে। দই দিন নিরাহারে সকলের প্রাণ ওঠাগত হইবেক । বিশেষ নাবিকেরা প্ৰতিগমন করিতে অসমত ; তাহারা কথার বাধ্য নহে। তাহারা বলিতেছে যে, নবকুমারকে ব্যান্ত্রে হত্যা করিয়াছে। তাহাই সম্পভব। তবে এত ক্লেশ-স্বীকার কি জন্য ? এরপ বিবেচনা করিয়া যাত্রীরা নবকুমার ব্যতীত সবদেশে গমনই উচিত বিবেচনা করিলেন। নবকুমার সেই ভীষণ সমদ্রতীরে বনবাসে বিসজিত হইলেন। ইহা শনিয়া যদি কেহ প্ৰতিজ্ঞা করেন, কখনও পরের উপবাস নিবারণার্থ কাঠাহরণে যাইবেন না, তবে তিনি উপহাসাসপদ।। আত্মোপকারীকে বনবাসে বিসজজন করা যাহাদিগের প্রকৃতি, তাহারা চিরকাল আত্মোপকারীকে বনবাস দিবে—কিন্তু যত বার বনবাসিত করােক না। কেন, পরের কাঠাহরণ করা যাহার সর্বভাব, সে পনেকবার পরের কাঠাহরণে যাইবে । তুমি অধম— তাই বলিয়া আমি উত্তম না হইব কেন ? তৃতীয় পরিচ্ছেদ ঃ বিজনে '-Like a veil, Which if withdrawn, would but disclose the frown Of One who hates us, so the night was shown And grimly, darkled o'er their faces pale And hopeless eyes.” Don Juan যে সস্থানে নবকুমারকে ত্যাগ করিয়া যাত্রীরা চলিয়া যান, তাহার অনতিদারে দৌলতপার ও দরিয়াপাের নামে দাই ক্ষদ্র গ্রাম এক্ষণে দন্ডট হয়। পরন্তু যে সময়ের বর্ণনায় আমরা প্রবত্ত হইয়াছি, সে সময়ে তথায় মনষ্যেবসতির কোন চিহ্ন ছিল না; অরণ্যময় মাত্র। কিন্তু বাওগালাদেশের অন্যত্র ভূমি যেরহপ সচরাচর আনন্দঘাতিনী, এ প্রদেশে সেরাপ নহে। রসােল পরের মািখ হইতে সবৰ্ণরেখা পৰ্যন্ত অবাধে কয়েক যোজন পথ ব্যাপিত করিয়া এক বালিকাসতপশ্রেণী বিরাজিত আছে। আর কিছ: উচ্চ হইলে বালকোসতপশ্রেণীকে বালিকাময় ক্ষ-দ্র পক্বতশ্রেণী বলা যাইতে পারিত। এক্ষণে লোকে উহাকে বালিয়াড়ি বলে। ঐ সকল বালিয়াড়ির ধবল। শিখরমালা মধ্যাহ্নসােয্যকিরণে দরি হইতে অপব্ব প্রভাবিশিস্ট দেখায়। উহার উপর উচ্চ বক্ষ জন্মে না। সতপিতলে সামান্য ক্ষদ্র বন জন্মিয়া থাকে, কিন্তু মধ্যদেশে বা শিরোভাগে প্রায়ই ছায়াশন্যে ধবলশোভা বিরাজ করিতে থাকে। অধোভাগমন্ডনকারী বাক্ষাদির মধ্যে, ঝাটী, বনঝাউ এবং বনপক্ষেপই অধিক। এইরােপ অপ্রফতুল্লকর স্থানে নবকুমার সক্তিগগণকর্তৃক পরিত্যক্ত হইয়াছিলেন। তিনি প্রথমে কাঠভার লইয়া নদীতীরে আসিয়া নৌকা দেখিলেন না ; তখন তাঁহার অকস্মাৎ অত্যন্ত ভয়সঞ্চার SBO