পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बर्ता७का ब्रा5नावव्ली কপালকুন্ডলা পথিককে সমভিব্যাহারে লইয়া, নিভৃত কাননাভ্যন্তরে উপনীত হইলেন। তখন রাত্ৰি দিবতীয় প্রহর। সম্মখে অন্ধকারে বনমধ্যে এক অত্যুচ্চ দেবালয়াচড়া লক্ষিত হইল ; তন্নিকটে ইস্টকনিমিত প্রাচীরবেপ্টিত একটি গহও দেখা গেল। কপালকুন্ডলা প্রাচীরদবারেব নিকটস্থ হইয়া তাহাতে করাঘাত করিতে লাগিলেন; পনেঃ পত্নঃ করাঘাত করাতে ভিতর হইতে এক ব্যক্তি কহিল, “কে ও, কপালকুণডলা বঝি ?” কপালকুন্ডলা কহিলেন, “দবার খোল।” উত্তরকারী আসিয়া দবার খালিয়া দিল। যে ব্যক্তি দাবার খালিয়া দিল, সে ঐ দেবালয়াধিস্ঠাত্রী দেবতার সেবক বা অধিকারী ; বয়সে পঞ্চাশাৎ বৎসর অতিক্ৰম করিয়াছিল। কপালকুন্ডলা তাঁহার বিরলকেশ মস্তক করা দবারা আকষিত করিয়া আপন অধরের নিকট তাঁহার শ্রবণেন্দ্ৰিয় আনিলেন। এবং দই চারি কথায় নিজ সঙ্গীর অবস্থা বঝাইয়া দিলেন। অধিকারী বহনক্ষণ পৰ্য্যন্ত করতলালগনশীষ হইয়া চিন্তা করিতে লাগিলেন। পরিশেষে কহিলেন, “এ বড় বিষম ব্যাপার। মহাপরিষ মনে করিলে সকল করিতে পারেন। যাহা হউক, মায়ের প্রসাদে তোমার অমঙ্গল ঘটিবে না। সে ব্যক্তি কোথায় ?” কপালকুণডালা, ”আইস” বলিয়া নবকুমারকে আহবান করিলেন। নবকুমার অন্তরালে দাঁড়াইয়াছিলেন, আহত হইয়া গহমধ্যে প্রবেশ করিলেন। অধিকারী তাঁহাকে কহিলেন, “আজি এইখানে ল্যুকাইয়া থাক, কালি প্রত্যুষে তোমাকে মেদিনীপরের পথে রাখিয়া আসিব ।” ক্ৰমে কথায় কথায় অধিকারী জানিতে পারিলেন যে, এ পর্য্যন্ত নবকুমারের আহারাদি হয়। নাই। ত অধিকারী তাঁহার আহারের আয়োজন করিতে প্রবত্ত হইল, নবকুমার আহারে নিতান্ত অস্বীকৃত হইয়া কেবলমাত্র বিশ্রামস্থানের প্রার্থনা জানাইলেন। অধিকারী নিজ রন্ধনশালায় নবকুমারের শয্যা প্রস্তুত করিয়া দিলেন। নবকুমার শয়ন করিলে, কপালকুণডালা সমদ্রতীরে প্রত্যাগমন করিবার উদ্যোগ করলেন। অধিকারী তাঁহার প্রতি সস্নেহ নয়নে দক্ষিটপাত করিয়া কহিলেন, “যাইও না। ক্ষণেক দাঁড়াও, এক ভিক্ষা আছে।” কপালকুণন্ডলা। কি ? অধিকারী। তোমাকে দেখিয়া পয্যন্ত মা বলিয়া থাকি, দেবীর পাদস পাশ করিয়া। শপথ করিতে পারি যে, মাতার অধিক তোমাকে স্নেহ করি। আমার ভিক্ষা অবহেলা করিবে না ? কপা। করিব না। অধি। আমার এই ভিক্ষা, তুমি আর সেখানে ফিরিয়া যাইও না। কপি । কেন ? অধি। গেলে তোমার রক্ষা নাই। दक°ा । उ5ा उ5 ७ क्रिा । অধি। তবে আর জিজ্ঞাসা কর কেন ? কপা । না গিয়া কোথায় যাইব ? অধি। এই পথিকের সঙ্গে দেশান্তরে যাও । কপালকুন্ডলা নীরব হইয়া রহিলেন। অধিকারী কহিলেন, “মা, কি ভাবিতেছ?” কপা। যখন তোমার শিষ্য আসিয়াছিল, তখন তুমি কহিয়াছিলে যে, যাবতীর এরপ য,বাপরিষের সহিত যাওয়া অনচিত; এখন যাইতে বল কেন ? অধি। তখন তোমার জীবনের আশঙ্কা করি নাই, বিশেষ যে সদ্যপায়ের সম্ভাবনা ছিল না, এখন সে সদ্যপায় হইতে পরিবে। আইস, মায়ের অন্যািমতি লইয়া আসি। এই বলিয়া অধিকারী দীপহস্তে দেবালয়ের দাবারে গিয়া দবারোদঘাটন করিলেন। কপালকুন্ডলাও তাঁহার সঙ্গে সঙ্গে গেলেন। মন্দিরমধ্যে মানবাকার পরিমিতা করােল কালীমত্তি সংস্থাপিত ছিল। উভয়ে ভক্তিভাবে প্ৰণাম করিলেন। অধিকারী আচমন করিয়া পক্ষপপাত্র হইতে একটি অচ্ছিন্ন বিলাবপত্র লইয়া মন্ত্রপাত করিলেন, এবং তােহা প্রতিমার পাদোপরি সংস্থাপিত করিয়া তৎপ্রতি চাহিয়া রহিলেন। ক্ষণেক পরে অধিকারী কপালকুন্ডলাকে কহিলেন, “মা, দেখ, দেবী অঘ্য গ্রহণ করিয়াছেন; বিলাবপত্র পড়ে নাই, যে মানস করিয়া অঘ্য দিয়াছিলাম, তাহাতে অবশ্য মঙ্গল। তুমি এই পথিকের সঙ্গে স্বচ্ছন্দে গমন কর। কিন্তু আমি বিষয়ী লোকের রীতি চরিত্র জানি। তুমি যদি গলগ্ৰহ হইয়া ইহার সঙ্গে যাও, তবে এ ব্যক্তি অপরিচিত যাবতী সঙ্গে লইয়া লোকালয়ে লঙ্কজা পাইবে । তোমাকেও লোকে ঘণা করিবে । S8